মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি॥ ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে সবুজের হাট। বৃক্ষ রোপণের মৌসুমকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই হাট জমে। সোম ও বৃহস্পতিবার শহরের বাসন্ডা নদীর পাড়ে ব্রিজের নিচে দুটি হাটে সকাল থেকেই নার্সারি ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরতি হয়ে ওঠে। ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি জাতের শৌখিন গাছের চারা বিক্রি হয়।
এছাড়াও শহরের উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে সবজি চারার হাট, রাজাপুর উপজেলার বাঘড়ি, নলছিটির ষাটপাকিয়া ও কাঁঠালিয়ায় আমুয়া, বটতলা বাজার ও জমাদ্দার হাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চারা বেচা কেনা হয়।
এসব সবুজের হাট ঘুরে দেখা গেছে, মেহগনি ও অন্যান্য বনজ গাছের চারা ২০ টাকা ধরে বিক্রি হলেও ফলদ চারা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শৌখিন মানুষের জন্য বিদেশি জাতের মাঝারি ঝোপ গাছের চারাও পাওয়া যায় এসব হাটে। তবে সেগুলোর দাম আরো বেশি। আর এসব চারা উৎপাদন হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নার্সারিতে। পার্শ্ববর্তী বানারিপাড়া উপজেলায় অনেকগুলো নার্সারি রয়েছে। নার্সারি মালিকরা ট্রলার ও নৌকাযোগে হাটে এসব চারা নিয়ে আসেন। নিয়ে আসেন ফরিয়া বিক্রেতারাও।
জেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এ তিন মাস গাছের চারা বিক্রি ও রোপণের উপযুক্ত সময়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও সাধারণ মানুষ জেলার বিভিন্ন হাট থেকে হরেক প্রজাতির গাছের চারা ক্রয় করে রোপণ করছেন।
সাপ্তাহিক হাটগুলোতে এ বছর প্রায় দুই লাখ চারা বেচাকেনার লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বন বিভাগ এ বছর সদর উপজেলাসহ চারটি উপজেলায় ৮১ হাজার ৩০০ ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করবে।
জেলায় আরো ২০ হাজার গাছ বিতরণ করা হবে। বন বিভাগ এ বছর বিক্রির জন্য ১০ হাজার গাছের চারা উৎপাদন করেছে। এছাড়াও গত বছরের উৎপাদন করা আরো ২০ হাজার গাছের চারা বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।
কাঁঠালিয়া উপজেলার রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর চারা গাছ কিনে নিজেদের জমিতে লাগানো হয়। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি দোকানের আড্ডায় চা-নাস্তার টাকা বাঁচিয়ে একটু বেশি করে বনজ চারা কিনে জমিতে লাগানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
চারা গাছ ব্যবসায়ী ছগির হোসেন বলেন, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এ তিন মাস গাছের চারা বিক্রি হয়। তিন মাসে কমপক্ষে এক লাখ টাকার চারা বিক্রি করতে পারবো। পরিবহন খরচ, হাটের ইজারা, শ্রমের মূল্য বেশি হওয়ায় খরচ পোষাতে দাম গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু বেশি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, এ বছর ঝালকাঠির বিভিন্ন সাপ্তাহিক হাটে প্রায় দুই লাখ গাছের চারা বেচাকেনা হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মানুষের বৃক্ষ রোপণে আগ্রহের কমতি নেই।
Leave a Reply