শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি: ঘুর্নিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুয়াকাটা সৈকত সুরক্ষা প্রকল্প। সৈকত সুরক্ষায় স্থাপন করা জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব ঢেউয়ের তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে বালু বেড়িয়ে যায়। এতে প্রাথমিক সৈকত সুরক্ষা প্রকল্পের ৭০ ভাগ ক্ষতি হয়। ফলে সৈকতের কোল ঘেষে অবস্থিত মসজিদ, মন্দির, মার্কেট, আবাসিক হোটেল সহ জেলা প্রশাসনের ট্যুরিজম পার্ক, ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স ও পৌরসভা কর্তৃক নির্মানাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়ক ঝুঁকির মধ্যে পরেছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার দুই দিকে প্রাথমিক ঝুঁকি বিবেচনায় জরুরী মেরামতের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সৈকতের ভূ-ভাগ ঘেঁষে ৩’শ ৬৫ মিটার এলাকায় জিও টিউব স্থাপনের কাজ শুরু করে। এর ব্যয় নির্ধারন করা হয় ৩০ লাখ টাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
ঘুর্ণিঝড় রেমালে সৈকত সুরক্ষা প্রকল্পের ক্ষতি বিবেচনায় এই জরুরী মেরামত প্রকল্পটি শুধুমাত্র জোড়াতালি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকল্পের পরিধি এবং প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাথমিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবী জানান ঝুঁকিতে থাকা ব্যবসায়ীরা।
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাগেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বালু ক্ষয় রোধে একাধিকবার প্রকল্প প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয় পাঠালেও নানা কারণে তা গৃহিত হয়নি। তাই পরিক্ষামুলক ভাবে তিন দফায় সৈকত রক্ষায় জিও টিউব ও জিও ব্যাগ স্থাপন করা হয়।
সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সৈকতের ভূ-ভাগ ঘেঁষে ১৫’শ মিটার সৈকত প্রাথমিক সুরক্ষায় জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব স্থাপন করে। এ কাজের শেষের দিকে এসে ঘুর্ণিঝড় রেমালে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সৈকতের ছাতা বেঞ্চ ব্যবসায়ী আল আমিন, রুবেল, ফিস ফ্রাই ব্যবসায়ী কাওসার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ গৃহীত প্রকল্পটি প্রাথমিক সৈকত সুরক্ষায় অনেক উপকার হয়েছে। অন্যথায় সৈকতের পাশে থাকা মসজিদ, মন্দির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে সমুদ্র গর্ভে বিলিন হয়ে যেত। আমরা সুন্দর ভাবে ব্যবসা করতে পারছি। তবে তারা অস্থায়ী প্রকল্পের পাশাপাশি কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানান।
কুয়াকাটা রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থ যাত্রী সেবাশ্রম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন জানান, মন্দিরের সামনে জিও টিউব ও জিও ব্যাগ স্থাপন করে বালুর রাস্তা তৈরির কারণে রেমালের তান্ডব থেকে মন্দির এলাকা রক্ষা পেয়েছে। তবে রেমালে অনেক ক্ষতি হয়েছে। চলমান বর্ষায় সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়েছে। এর পাশাপাশি ঝুঁকিও বেড়েছে।
ক্ষুদ্র জরুরি মেরামত প্রকল্পটির যে ব্যয় ধরা হয়েছে তা খুবই নগন্য বলে জানান রাধা কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থ যাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক। ভাঙ্গন রোধে অস্থায়ী প্রকল্পের পাশাপাশি তিনি স্থায়ী প্রকল্পের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব হোসেন ভোরের কাগজ কে জানান, ঘুর্ণিঝড় রেমালে যে সব স্থানে বেশী ক্ষতি হয়েছে সেসব জায়গায় জরুরি মোরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে গুরুত্ব বিবেচনায় পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, স্থায়ী প্রকল্প প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। অর্থের জোগান দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply