রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন
আবু হানিফ, কুয়াকাটা প্রতিনিধি: পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। কুয়াকাটায় সাগরের কোল ঘেঁসে র্নিমিত হয়েছে সকল আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ট্যুরিজম পার্ক।যেখানে স্বস্তিদায়ক পরিবেশে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্যসহ সমুদ্রের নৈসর্গিক রূপ। খুব শীঘ্রই পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত হচ্ছে এ পার্কটি।
নির্মাণ তদারকি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বেড়িবাঁধের বাইরে সাগরের কোল ঘেঁষে ঐতিহ্যবাহী নারিকেল বাগানের মধ্যে খালি জায়গায় ১৬০ ফুট দীর্ঘ এবং ১২০ ফুট প্রস্থ এ পার্কটির নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অর্থায়নে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাগর পাড়ের মনোরম পরিবেশে হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই পার্কটি। বাউন্ডারি ঘেরা দৃষ্টিনন্দন এই পার্কটিতে থাকছে অন্তত দুই শ’ লকার। নামমাত্র সার্ভিস চার্জের বিনিময় এ লকার ব্যবহার করবেন পর্যটকরা।
সাগরে গোসল করতে নামার আগে পর্যটকরা এখানে জুতো, পরিচ্ছদ, মোবাইল ও টাকাসহ সবকিছু গচ্ছিত রাখতে পারবেন নিশ্চিন্তে। থাকছে আলাদা বিশ্রামাগার। সেখানে থাকবে সোফার ব্যবস্থা। সেখানে বসেই পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন সমুদ্র রূপ। সাগরের নোনা পানিতে সাতার শেষে হাত-পা ধোয়ার জন্য মিস্টি পানির সরবরাহ লাইনসহ থাকছে অসংখ্য ট্যাপ। পুরুষ ও মহিলাদের আলাদাভাবে পোশাক-পরিচ্ছদ পাল্টানোর প্রয়োজনীয় সংখ্যক কক্ষ রয়েছে।
অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত নারী-পুরুষদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক ওয়াশ রুম। ৫০ সিটের প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘের দুই সারির কফি হাউসসহ ক্যাফে কর্ণার। পর্যাপ্ত সংখ্যক চেয়ারসহ পার্কে থাকছে বিশাল আকৃতির স্থায়ী ছাতা। পার্কটি সবসময় রাখা হবে প্রশাসনিক নিরাপত্তার আওতায়। বিশেষ কারণে পার্কের অভ্যন্তরে পর্যটকদের জন্য রাত্রি বাসের সুবিধা। পার্ক সংলগ্ন সীবিচে বোল্ডার দিয়ে সাগরের ঢেউয়ে বেলাভূমি ক্ষয়রোধেও নেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে এখানে বিশেষ কনসার্টের ব্যবস্থা করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ট্যুরিজম বোর্ড এবং পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ কুয়াকাটার উন্নয়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এর ফলে পর্যটকের দীর্ঘদিনের একটি দাবী পুরন হলো। কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান বুলেট আকন বলেন, আড়াই একর জমি অধিগ্রহণের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটার উন্নয়নের গোড়াপত্তন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৯৮ সালের মে মাসে কুয়াকাটায় পর্যটন কর্পোরেশনের হলিডে হোমস উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এর উন্নয়ন শুরু করেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। পরিকল্পনার সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেন আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রে উন্নীত করণের। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে কুয়াকাটাকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রনয়ন করা হয় মাস্টার প্লান। যার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে এই ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তানভীর রহমান জানান, বর্তমানে এ পার্কটিকে ঘিরে কুয়াকাটায় আসা পর্যটক-দর্শনার্থীর বিনোদন কেন্দ্রীক একটি মাত্রা যোগ হচ্ছে। এছাড়া সাগরে গোসলের আগে কিংবা পরে যে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হতো পর্যটকে তা লাঘব হচ্ছে। স্বাচ্ছন্দে সাগর উপভোগের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মাহবুবুর রহমান এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়াকাটার পরিকল্পিত উন্নয়নে বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন। যা ১৯৯৮ সাল থেকে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি কুয়াকাটাকে পৌরসভায় উন্নীত করেছেন। তিন নদীতে তিনটি সেতু র্নিমাণ করেছেন। ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে পর্যটকের দীর্ঘ দিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হবে।
Leave a Reply