শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুরের সাতুরিয়া বোড অফিস সংলগ্ন খলিফা বাড়ি এলাকার আ’লীগ নেতা মেহেদি হাসান রনি ওরফে ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে আ’লীগের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তির জমি-বাড়ি দখল, মারধর ও চাদাবাজিসহ নানা অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় শনিবর ওই এলাকার মৃত ইসমাইল খানের ছেলে আনোয়ার খান সাংবাদিকদের কাছেসহ রাজাপুর থানায় এবং বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের মৃত রুহুল আমীন খানের ছেলে মেহেসি হাসান রনি ওরফে ফিরোজ খান আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেকে আ’লীগ নেতা দাবি করে প্রভাবখাটিয়ে নিজ এলাকায় বাহিনী গঠন করে জমি দখল, হামলা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি ও জমি জোর পূর্বক দখল করে ভিটা ছাড়া করেছে।
ফিরোজ খানের ছোট চাচা আবদুস সোবাহান খান দীর্ঘদিন সাতুরিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য ছিলেন এবং তার মেঝ ভাই আবদুল হালিম খান সাতুরিয়া ইউনিয়ন ২ এয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার কারনে তাদের প্রভাবখাটিয়ে এসব কর্মকান্ড করলেও সাধারণ ও নিরীহ মানুষ ভয়ে মুখ খোলেনি। ফিরোজ খান এসব কর্মকান্ডের মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছেন অনেক আগেই।
এলাকবাসীর অভিযোগ, ফিরোজ ও তার লোকজন মিলে ওই এলাকার বাদশা খলিফার ৪ কাঠা, নাসিরের ভবনসহ বাড়ি, আনোয়ার খন্দকারের আড়াই বিঘা জমি, মোজাম্মেল মাস্টারের ৩ বিঘা, সুলতানের ৯৯ শতাংশ জমি দখলে নেয়। এছাড়া মোজাম্মেল ডাক্তারের বাড়িতে ডাকাতি করে কুপিয়ে জখম করার পর তারা এলাকা ছেড়ে ভান্ডারিয়া চলে যায়।
একইভাবে পশ্চিম নৈকাঠি গ্রামের আশ্রাব আলী কাজির কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাদা নেয় এবং বেলায়েতের বসতঘরে আগুন দেয়। সাতুরিয়া এলাকার জালাল খলিফার ছেলে মান্নান খলিফা অভিযোগ করে জানান, তারবাড়ি ঘরে লুটপাট করে তাকে এলাকা ছাড়া করে তার নামে ২টি ডাকাতি, পা কাটা ও অস্ত্র আইনেসহ একাধিক মামলা দিয়ে নিস্ব করেছে। নিরুপায় হয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজারে সবজি বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালাচ্ছেন। বাদশা খলিফা জানান, তার ৪ কাঠা জমি দখলে নিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করেছে।
ওই এলাকার শাহিন খন্দকার অভিযোগ করে জানান, তাদের ৩ বিঘা জমি দখলে নিয়েছে এবং তারা পরিকল্পিতভাবে মারধর করে কাউখালি থানায় একটি মিথ্যা মামলায় ফাসিয়েছে। ওই এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, তার দেড় কুড়া জমি দখলে নিয়ে পুকুর কেটেছে। ফিরোজের ব্যক্তিগত কোন সম্পত্তি না থাকলেও অবৈধভাবে জোরপূবর্ক দখল করে কয়েকটি বাড়ি ও দোকানপাট করেছে। ওই এলাকার আফসের আলীর ছেলে তাজাম্মেল হক অভিযোগ করে জানান, ফিরোজসহ তার ভাইরা মিলে জমি দখলে নিয়েছে, তাদের নিয়ে কিছু বলতে গেলে দেশে থাকা যাবে না।
ওই এলাকার হানিফ খলিফার অভিযোগ, ১৫ শতাংশ জমি রেখে ঢাকা যাওয়ার পর জাফর খানসহ তাদের লোকজন দখলে নিয়ে কলাগাছ রোপন করে দখলে নিয়েছে। তাদের কিছু বলা তো দূরের কথা তাদের ভয়ে রাস্তায় হাটাই যেত না। ফিরোজ খানের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আ’লীগ নেতা মেহেদি হাসান রনি ওরফে ফিরোজ খান জানান, তার নানা হিংগুল উদ্দিন হাওলাদারের কাছ থেকে পাওয়া জমি নিয়ে প্রতিপক্ষ তোফাজ্জেল ও তাজাম্মেলের সাথে আদালতে মামলা চলমান এবং প্রতিপক্ষ শাহিন তার ভাইয়ের ছেলে জহিরুল ইসলাম হান্নানকে মারধর এ নিয়ে মামলা সংক্রান্ত বিরোধ।
এসব কারনে এবং বিগত দিনে চুরি ডাকাতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এলাকার প্রতিপক্ষরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে, তারা বিগত দিনে মামলা দিয়েও হয়রানি করেছে। বালু ও ড্রেজার আর কাঠের ব্যবসা করে জীবিন জীবিকা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। কারও জমি বা বাড়ি অবৈধভাবে দখল করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply