সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ পটুয়াখালীর বাউফলে সালিশ করতে যেয়ে নিজেই কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করায় সেই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কোনো ফৌজদারী অপরাধ করেছেন কীনা তা পিবিআইকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কীনা তা তদন্ত করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিয়ে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কীনা তা তদন্ত করতে জেলা নিবন্ধককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ওই কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে পটুয়াখালী এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন। পটুয়াখালীর ডিসি, জেলা নিবন্ধক ও পিবিআইকে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আলাদা তিনটি প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সালিশে কিশোরীকে বিয়ে করার ঘটনায় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। ৮ আগস্ট পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম ও ইকরামুল টুটুল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট খায়রুন্নেসা নাসিমা, সীমা জহুর ও কানিজ ফাতেমা।
আদালত বলেছেন, পত্রিকার প্রতিবেদন দেখে যা বুঝলাম, সালিশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষমতার অপ্যবহার করেছেন চেয়ারম্যান।
পটুয়াখালীর বাউফলে সালিশ করতে যেয়ে নিজেই কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করার ঘটনা নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে একই ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুজন পালিয়ে যায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান।
এরপরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শুক্রবার কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে যেতে বলেন। সেই অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। শুক্রবার দুপর ১টায় স্থানীয় কাজী মো. আবু সাদেককে বাড়িতে ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এদিকে এই বিয়ের পর তা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়।
শনিবার ওই একই কাজীর মাধ্যমেই তালাক সম্পন্ন হয়। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জানান, ওই মেয়ে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়েটিকে তার বাবার সঙ্গে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।’
Leave a Reply