মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশালে একটি মানবপাচার মামলার রায়ে দুইজনকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন তিন আসামির উপস্থিতিতে এবং এক আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার কাজীরচর এলাকার আব্দুল জলিল সরদার এবং ঢাকার বনানীর মেসার্স সানলাইট এন্টারপ্রাইজ নামক ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মো. আনিছুর রহমান। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন দণ্ডপ্রাপ্ত জলিল সরদারের স্ত্রী রাশিদা এবং জেসমিন আক্তার।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে বরিশালের মুলাদীর কাজীরচর এলাকার আব্দুল জলিল পার্শ্ববর্তী খালাসীর চর এলাকার জনৈক আবুল কালাম ওরফে মিজানুর রহমানকে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তিতে লিবিয়া পাঠানোর কথা বলে সুদান পাঠিয়ে দেন। সেখানে পৌঁছে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৬৫ জনকে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় দেখতে পান আবুল কালাম। সেখান থেকে ট্রাকে করে সাতদিন ও সাত রাতে অবৈধভাবে তাকেসহ অন্যদের লিবিয়া পাঠানো হয়।
লিবিয়া পৌঁছার পর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয় আবুল কালামের পরিবারের কাছ থেকে। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হলে লিবিয়া পুলিশ আবুল কালামকে গ্রেফতার করে। এর একপর্যায়ে লিবিয়ায় কর্মরত বরিশালের মুলাদীর আব্দুল বারেক খান তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেন।
দেশে ফিরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর ৪ জনকে আসামি করে বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন আবুল কালাম। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য মুলাদী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মুলাদী থানার এসআই মো. ফারুক হোসেন খান চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল।
আদালতে বাদী পক্ষে এপিপি কাইয়ুম খান কায়সার এবং আসামি পক্ষে হুমায়ুন কবির মামলা পরিচালনা করেন। এ নিয়ে বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে অবৈধ মানবপাচারের ৩টি মামলার রায় ঘোষণা হলো।
Leave a Reply