শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক : বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বোমা বিস্ফোরন ঘটে। পরে থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে দুইটি অবিস্ফোরিত বোমা, তিনটি পেট্রোল বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় উজিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন বাদি হয়ে বিএনপি-জামায়াত ইসলামীর ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৬৬ নেতাকর্মীকে আসামি করে বিষ্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, উজিরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও উজিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল হাওলাদার(৪২), উজিরপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য মো. খোকন ডাকুয়া (৩৫), উপজেলা ছাত্রদলের নাট্যবিষয়ক সম্পাদক কালাম ফরাজী (৩৫), বরাকোঠা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জহির বেপারী (৪৫), শিকারপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান ফকির (৪৫) ও উজিরপুর উপজেলা জামাতের সাবেক নায়েবে আমীর মো. মিজান হাওলাদার (৪৬)। এছাড়া বিএনপি-জামায়াতের অজ্ঞাতনামা আরও ৫০/৬০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে বোমা বিস্ফোরনের ঘটনাটি রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঘটলেও পুলিশ মামলায় বিকেল পৌনে ৫টার কথা উল্লেখ করেন। মামলার এজাহারে বাদি উজিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন উল্লেখ করেন, রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় মামলার নামীয় আসামিসহ ৫০/৬০ জন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা শিকারপুর ইউনিয়নের সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য নাশকতামূলক কর্মকা- করতে গোপন বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছলে আসামিরা বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি অবিস্ফোরিত বোমা, তিনটি পেট্রোলবোমা ও বোমা তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, রোববার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশে পর পর দুটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরন ঘটে। এতে গোটা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় সোনার বাংলা বাজারের মধ্যে থাকা লোকজন প্রান ভয়ে দিকবিদিক ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। ঘটনাস্থল সংলগ্ন বাসিন্দা ইতি আক্তার (৩০), সোনার বাংলা বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন (৫৫)সহ অনেকেই জানান, বোমা বিস্ফোরনের বিকট শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। এতে সাধারন মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ে।
গৃহীনি রিনা বেগম (৩৫) বলেন, আমি এশার নামাজের জন্য দাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বোমার শব্দে বাচ্চারা কান্নাকাটি শুরু করে এবং আমরা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ি। রাতের ঘটনায় দিন উল্লেখ করে মামলা দায়ের সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদি উজিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মামলায় উল্লেখিত সময়েই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা ভুল সময় উল্লেখ করে থাকতে পারে। তাছাড়া ঘটনার পরে অনেকেই অনেক কিছু বলে থাকেন। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির লক্ষে পরিকল্পনা করছিল। টের পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে আসামিরা বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। তবে কাউকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়নি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার এজাহারভূক্ত আসামি উপজেলা ছাত্রদলের নাট্যবিষয়ক সম্পাদক কালাম ফরাজী পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানী করতে পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মাজেদ তালুকদার বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির নেতাকর্মীদের এলাকাছাড়া করতে সারা দেশে গায়েবী মামলা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে পুলিশ এ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
Leave a Reply