বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)সংবাদদাতা।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বিসমিল্লাহ ইটভাটার মালিক ও মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহআলম হাওলাদারকে (৬৪) কুপিয়ে মারাত্মক জখম করার ঘটনায় উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান ওরফে শিমু মিরা ও তাঁর স্ত্রী সাবেক ইউপি সদস্য খাদিজা আক্তার এলিজাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রাম থেকে এ দু’জনকে এ ছাড়া এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে নেছার হাওলাদার, নাঈম, ইমরানকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার হয়েছে । এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আকলিমা বেগম বাদি হয়ে রোববার রাতে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। আহত মুক্তিযোদ্ধা শাহআলমের বাড়ি চাকামইয়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে।
জানায়ায় রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম হাওলাদার তাঁর মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ ইটভাটার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা হাতে থাকা রামদা দিয়ে তাঁকে কোপায়।
সন্ত্রাসীদের রামদার কোপে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। সন্ত্রাসীরা লাঠি দিয়েও তাঁকে বেধড়ক পেটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও মারধর করে ফেলে রেখে যাওয়ার পর স্থানীয়রা আহত মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম হাওলাদারকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পাশের আমতলী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার পরে তাঁকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহআলম হাওলাদারের ছেলে ও আমতলী উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আবু সালেহ বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর ইটভাটার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা আমার বাবার কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমু মিরা ও তাঁর স্ত্রী এলিজা নেতৃত্বে চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে পারবেনা বলে হুমকি দেয় ওই সকল সন্ত্রাসীরা। শিমু মিরার নির্দেশেই স্থানীয় জহিরুল, সবুজ, খলিল, রুবেলসহ ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী রামদা দিয়ে কুপিয়ে আমার বাবাকে জখম করেছে। হামলার এক পর্যায়ে বাবা বাঁচার জন্য দৌড়ে যেতে চেষ্টা করলে পড়ে যায়।
সন্ত্রাসীরা গিয়ে আমার বাবার ওপর হামলে পড়ে। ওদের হাতে থাকা রামদা দিয়ে কোপায়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থান রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এসময় বাবা পড়ে গেলে তাঁর ডান পা ইটের ওপর রেখে রামদার বাট দিয়ে পিটিয়ে থেতলে দেয়া হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে তাঁর বা পা ও বা হাত।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমু মিরার মুক্তির দাবিতে। সোমবার বেলা ১১ টায় টিয়াখালীর ইউপি সদস্য আবদুস সোবাহান বিশ্বাস, মো. আল আমীন মৃধা, সদস্য মো. ইব্রাহিম মিয়া, খোকন প্যাদা ও মো. ইসমাইল হাওলাদারের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের দুই শতাধিক সমর্থক পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
একপর্যায়ে মিছিলকারীরা কলাপাড়া থানার সামনে গিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পুলিশি হস্তক্ষপে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় কলাপাড়া থানার ওসি খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর শোনার পর থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। রাতেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
Leave a Reply