বরিশালে ঘরের বারান্দায় কলেজছাত্রীর অনশন বিয়ে নয় তো... Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালে ঘরের বারান্দায় কলেজছাত্রীর অনশন বিয়ে নয় তো…

বরিশালে ঘরের বারান্দায় কলেজছাত্রীর অনশন বিয়ে নয় তো…

বরিশালে ঘরের বারান্দায় কলেজছাত্রীর অনশন বিয়ে নয় তো...




আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি॥ ঘরের বারান্দায় বসে আছেন প্রেমিকা। তাঁকে ঘিরে বসেছে মেলা। সেই ভিড়ে বাড়ির লোক তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু কলেজছাত্রী প্রেমিকা অনড়। প্রেমিক সাড়া না দিলে অনশন তুলবেন না তিনি, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন। সোমবার রাত থেকে বুধবার রাত অবধি, ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। কলেজছাত্রীটি তখনও বারান্দায় বসেছিলেন।

 

 

এরপর পাড়ার লোকজন কৌতূহলী হয়ে বিষয়টি কী জানতে চাইলে মেয়েটি বলেন, ‘ভালোবাসা ফিরে পেতে এসেছি। ও যতক্ষণ না আমায় বিয়ে করবে, ততক্ষণ আমি এখান থেকে যাব না।’ বিয়ে না হলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ওই ছাত্রী। যদিও ঘটনার পর থেকে প্রেমিকের আর দেখা মেলেনি।

 

 

ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পাকুরিতা গ্রামে। যেটি নৌকাবাজ গ্রাম নামে পরিচিত। কলেজ পড়ুয়া মেয়েটি একই গ্রামের। মাস খানেক আগে তার বাবা মারা গেছেন। থাকছেন মায়ের কাছে। তাদের অভাবের সংসার।

 

 

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, তাদের সম্পর্কের কথা এলাকার অনেকেই জানেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তাও হয়েছিল। মাস তিনেক আগে ছেলেটি অন্যত্র বিয়ে করেছে। তার পরেও কেন হঠাৎ করে এই রকম ঘটনা ঘটল, তা কারো কাছেই স্পষ্ট নয়। এই ঘটনার পরে এলাকায় লোকজনের ভিড় জমতে শুরু করেছে। এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ওই ঘর থেকে কলেজছাত্রীকে থানায় নিয়ে গেছে।

 

 

এইচএসসি পড়ুয়া কলেজছাত্রী জানায়, পাকুরিতা গ্রামের হরেণ জয়ধরের ছেলে শুকদেব জয়ধরের (২২) সঙ্গে দেড় বছর আগে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের সুযোগে শুকদেব তাকে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করে। এক পর্যায়ে কলেজছাত্রী শুকদেবকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে না করে তার মাথার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে তাদের বিয়ে হয়ে গেছে বলে দাবি করে শুকদেব।

 

 

এমন বিয়ের বিষয়টি শুকদেবের পরিবারকে জানানোর জন্য ওই ছাত্রী চাপ দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে শুকদেব গোপনে উজিরপুর উপজেলার কালবিলা গ্রামের অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করে। তিন মাস আগে বিয়ের পর গত সোমবার রাতে ছাত্রী এক ঘরে থাকার সুযোগে ঘরের জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে। তখন ছাত্রীর ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে শুকদেব কৌশলে পালিয়ে যায়। সেই থেকে শুকদেবকে দেখা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে সে আত্মগোপনে রয়েছে।

 

 

শুকদেব পালিয়ে যাওয়ার পর সোমবার রাতেই বিয়ের দাবিতে শুকদেবের বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই ছাত্রী। বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই প্রেমিক শুকদেব বাড়ি থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়। বর্তমানে বিয়ের দাবিতে শুকদেবের ঘরে অবস্থান করছে ওই কলেজছাত্রী। ঘরের বারান্দায় একাই থাকছেন তিনি। ঘরের ভেতরে ছেলের মা, বউ আর বড় ভাই তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। প্রতিদিন সকাল হলেই ওই বাড়িতে ভিড় জমে কলেজছাত্রীকে দেখার জন্য। কলেজছাত্রীর মা বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য। এ নিয়ে বুধবার উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কামিটির সভায় আলোচনা হয়েছে।

 

 

কলেজছাত্রীর কথায়, এই সম্পর্কের কথা দুই বাড়ির সকলেই জানতেন। দুজনের বিয়ে হবে, সেটাও ঠিক ছিল। তাঁর অভিযোগ, সেই কারণে শুকদেবের ঢাকায় চাকরির জন্য কলেজছাত্রীর বাড়ি থেকে নগদ টাকাও দেওয়া হয়। কলেজছাত্রীর আরো অভিযোগ, ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমায় অনেকবার মেলামেশা করেছে শুকদেব। কিন্তু হঠাৎ করেই শুকদেব অন্যত্র বিয়ে করে। বিয়ের সময় আমাকে বলেছিল, পারিবারিক চাপে বিয়ে করছে ঠিকই। কিন্তু কয়েক দিনের মাথায় ওই মেয়েকে ছেড়ে দেবে। তারপর তারা দুজনে আবার বিয়ে করবে। তারপর কেন এই সম্পর্ক থেকে শুকদেব ঘুরে দাঁড়াল, বুঝতে পারছি না।

 

 

বাকাল ইউনিয়নের স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নির্মল বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে গিয়ে ওই কলেজছাত্রীর মুখে সব কথা শুনেছেন। বিষয়টি বিয়ের মাধ্যমে সমাধানের জন্য ছেলের বাবা ও তার পরিবারের লোকজনকে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান না হলে মেয়েকে আইনের আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। তবে ছেলের বাবা সমাধানের আশ্বাস দিলেও সমাধান হয়নি।

 

 

আগৈলঝড়া থানার ওসি মো. গোলাম সরোয়ার বুধবার রাতে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাতেই ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কলেজছাত্রীকে আইনি সহযোগিতা দেওয়ার জন্য তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। একই সঙ্গে ছেলের মা ও তার বড় ভাইকে নিয়ে আসা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD