মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সবিতা রানি দাস। যিনি ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা-স্যান্ডেল মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঝালকাঠি শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম ইউপি ভবনের সামনে ফুটপাতে বসে জুতা মেরামতের কাজ করেন সবিতা রানি দাস। বর্ষা মৌসুমে ইউপি ভবনের সামনের বারান্দার এক কোণে বসে এ কাজ করেন। তিনি ৯ বছর ধরে ফুটপাতে বসেই জুতা মেরামতের কাজ করছেন।
সবিতা রানি জানান, ছোটবেলায় মা-বাবা মারা গেছেন। বাবা জুতা সেলাই করে আয় করতেন। তার কাছে বসে জুতা সেলাই দেখতেন। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর লেখাপড়াও করতে পারেননি। জায়গা-জমি, অর্থ-সম্পদ কিছু নেই। তিনি অবিবাহিত হওয়ায় এ কাজ ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
সবিতা রানি বলেন, ‘এইটা আমার বাপ-দাদার পেশা। কেউ আমারে নিন্দা করে না। আমার কাজ দেইখা সবাই খুশি। মাঝে মাঝে কাজ হয়, আবার হয় না। সিজনাল কাজ হয়। বর্ষায় ফুটপাতে বইসা কাজ করলে এদিক-ওদিক থেকে পানি আসে।
স্বপ্নের কথা জানান সবিতা। তিনি বলেন, ‘কিছু বেইচ্চা-কিন্যা একটা দোকান দেওয়ার স্বপ্ন ছিল। সামনে একটু আগানোর আশা ছিল। এখানকার দশ জনে আমারে চায়। একবেলা না এলে সবাই আমারে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করে। যেহেতু আমি একজন দোকানদার।
করোনার মধ্যে কাজ করার ঝুঁকি সম্পর্কে সবিতা বলেন, ‘এমন দুর্যোগের সময় ঝুঁকি নিয়াও মুখে মাস্ক দিয়া কাজ করছি। কিন্তু মানুষজন ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে। তাই এখন আয়ও কম হচ্ছে। এ ছাড়া আমারে কেউ কোনো সহায়তাও দেয় নাই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক আকন্দ বলেন, ‘সবিতা রানি দাস জুতা মেরামতের কারিগর হিসেবে পুরুষের মতোই কাজ করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে ভিজিডি সহায়তা দিচ্ছি। এ ছাড়াও তার পেশাকে উন্নত করতে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘সবিতা রানি দাস একজন আদর্শবান সংগ্রামী নারী। জয়িতার তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর থেকে তাকে কোনো সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না।
Leave a Reply