বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি: সরকার সিমীত পরিসরে অফিস আদালত খুলে দেয়ার পর “আশা ও ডাক দিয়ে যাই ”সহ বিভিন্ন এনজিও’র মাঠকর্মীরা বরিশালের বাবুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছে।
ফলে এখনও কাজে যোগদান করতে না পারায় ঋণ গ্রহিতা দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবারের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
সূত্রমতে, সরকারের নির্দেশে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিও ঋণ শ্রেণিকরণ কার্যকর হবেনা বলে নির্দেশনা জারি করে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। একইসঙ্গে নির্ধারিত সময় শেষে কোন প্রকার জরিমানা ছাড়াই বকেয়া কিস্তি গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু বাবুগঞ্জে অধিকাংশ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত এনজিওগুলো এ নির্দেশনা না মেনে মাঠ কর্মীদের দিয়ে সরকার থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে বলে প্রচারের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কিস্তির টাকার জন্য চাঁপ প্রয়োগের উঠেছে।
তবে করোনার চলমান ক্রান্তি লগ্নে অধিকাংশ এনজিও’র পক্ষ থেকে ঋণ গ্রহিতাদের কোন ধরনের সহযোগিতার খবর পাওয়া যায়নি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানাযায়, এনজিও আশা ,ডাক দিয়ে যাই, আইসিডিএ, বিডিএসসহ কয়েকটি এনজিও’র ব্রাঞ্চ অফিস কর্মীরা মাঠ পর্যায় কিস্তির জন্য গ্রাহকদের চাঁপ প্রয়োগ করছে।
রহমতপুর ইউনিয়নের মানিককাঠি গ্রামের আশা থেকে ক্ষুদ্র ঋন গ্রহিতা বিউটি ,লাউজু ,দুলুফা ,কহিনুর, রুনু বলেন, করোনার কারনে উপর্জনক্ষমরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় খেয়ে বাঁচা দায়। লকডাউন উঠে গেলেও এখনও চাহিদা অনুযায়ী অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এরই মধ্যে এনজিও কর্মীরা কিস্তির জন্য বাড়িতে এসে চাঁপ প্রয়োগ করছে। প্রতিদিন ফোনে কিস্তি যোগাড়ের জন্য তাগিদ দিচ্ছে। এরকম অভিযোগ উপজেলার কেদারপুর থেকেও পাওয়া গেছে।
ওই গ্রামে এনজিও আইসিডিএ এর মাঠকর্মীরা বাড়িতে এসে কিস্তরি জন্য তাগিদ দিচ্ছে। আইসিডিএ এর মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে ১০০টাকা কিস্তি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
তাছাড়া ডাক দিয়ে যাই এনজিও’র মাঠ কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কিস্তির জন্য তাগিদ দিতে দেখা গেছে।
রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য বিলকিস বেগম ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, আমার এলাকায় করোনাকালিন কোন এনজিও সদস্যদের পাশে দাড়ায়নি। অথচ লকডাউন উঠে যাওয়ার সাথে সাথেই কিস্তির জন্য খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এনজিও কর্মীরা।
এনজিও আশার রিজোনাল ম্যানেজার রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা জোড় পূর্বক অথবা চাঁপ প্রয়োগের মাধ্যমে কিস্তি আদায় করছি না। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এনজিও ডাক দিয়ে যাই বাবুগঞ্জ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন, কিস্তি আদায়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা যাচ্ছে।
যারা সক্ষম তাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। কাউকে চাঁপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
বাবুগঞ্জের এনজিও সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেচ্ছায় দিলে কিস্তি নেয় যাবে তবে কাউকে কিস্তির জন্য চাঁপ প্রয়োগ করা যাবে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত হাওলাদার বলেন, কিস্তি গ্রহনে নিষেধাজ্ঞার সরকারি কোন নির্দেশনা পাই নি। তবে কিস্তি আদায়ে মানবিক হতে হবে।
তবে এই পরিস্থিতিতে চাঁপ প্রয়োগের মাধ্যমে কিস্তি আদায় করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply