মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। অস্বচ্ছলদের জন্য সরকারের দেওয়া খাদ্য সহায়তা না পাওয়া এবং সরকার ঘোষিত বরাদ্দকৃত অর্থের তালিকায় মসজিদের নাম না থাকার অভিযোগ তোলায় ইউপি চেয়ারম্যান এক যুবককে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার চাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২৪ মে) কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে।হামলার শিকার ওই যুবক দেবিদ্বার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামের হাজী আবদুল কুদ্দুস সরকারের ছেলে রাকিব বিন কুদ্দুস।
অভিযোগে রাকিব বিন কুদ্দুস জানান, চলমান করোনা দুর্যোগে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কোনও অস্বচ্ছল, গরিব, দিনমজুর এই পর্যন্ত সরকারি কোনও খাদ্য সহায়তা পাননি। যে খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন সেগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত খাদ্য সহায়তা।
এছাড়া ওই ওয়ার্ডের কোনও অস্বচ্ছল মানুষ সরকারি ত্রাণসামগ্রী পাননি। রোববার বিকালে দেবিদ্বার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই ধরনের অভিযোগ করলে তিনি জানান উপজেলার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ১৩০ জনের বেশি মানুষকে সরকারি খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল জব্বর মেম্বারের কাছে পাঠান।
অভিযোগে রাকিব বিন কুদ্দুস আরও জানান, উপজেলা থেকে ছেপাড়া যাওয়ার পথে গুনাইঘর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের অস্থায়ী কার্যালয়ে খাদ্য সহায়তা ছাড়াও মসজিদে অর্থ বরাদ্দের তালিকা না থাকার বিষয়ে কথা বলতে যাই। চেয়ারম্যানকে জানাই উপজেলায় মসজিদের তালিকায় আমাদের গ্রামের মসজিদের নাম নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেছেন আপনার মাধ্যমে একটি আবেদন করার জন্য। কীভাবে করবো আপনি আমাকে একটু বলেন। এরমধ্যে মেম্বার আবদুর জব্বর চেয়ারম্যানকে কল দেন। বলেন কুদ্দুস ভাইয়ের ছেলে রাকিব উপজেলায় গিয়ে ইউএনওর কাছে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এরপর ইউএনও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ত্রাণের বিষয়ে জানতে চায়। তাদের কথা শেষ হওয়ার পরেই চেয়ারম্যান আমাকে চোর বলে আমার ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মেরে লাঠিসোটা দিয়ে হাতে, পিঠে, পায়ে পেটায়।
ত্রাণ সহায়তার অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার আবদুর জব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তায় কোন অস্বচ্ছল ব্যক্তি বাদ পড়েনি। নির্বাহী কর্মকর্তা আমার কাছে সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণের বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। আমি ইউএনওকে বলেছি আমার ছেপাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডে চার ধাপে অস্বচ্ছল ও গরিবদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। হয়তো ভুল ক্রমে দুই/তিন জন বাদ পড়তে পারে। তাদেরকেও দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
অস্বচ্ছলদের খাদ্য সহায়তা এবং তালিকা থেকে মসজিদের নাম বাদ বিষয়ে অভিযোগ করলে যুবককে মারধরের বিষয়ে জানাতে চাইলে অভিযুক্ত গুনাইঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, আমার অফিসের সামনে এসে মিথ্যা অভিযোগ করায় মেম্বারের লোকজন ওই যুবককে মারধর করেছে বলে শুনেছি। তখন আমি অফিসের ভেতরে ছিলাম। আমার ছেলেরা ওই সময় কে কোথায় ছিল সেটা আমি জানি না।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply