শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
তন্ময় তপু॥ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীদের ঠিকমতো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগীদের রাখা হচ্ছে বলে ছাড়পত্র পাওয়া বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ- ইউনিট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় না।
চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়মিত আসেন না। দূর থেকে ওষুধ এবং দরজার সামনে খাবার দিয়ে সটকে পড়েন ওয়ার্ডবয়রা।
করোনা ইউনিটে দু’দিন চিকিৎসা নেয়া বরিশালের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী জোহরা ইসলাম জানান, অনেক অপরিচ্ছন্ন করোনা ইউনিটটি। ভর্তি হওয়ার পর একবার দূর থেকে একজন ওষুধ দিয়ে গেছে। এরপর থেকে কারও দেখা মেলেনি।
অবশ্য ভর্তির পরদিন নমুনা পরীক্ষায় রেজাল্ট নেগেটিভ এলে রিলিজ দেয়া হয়। এখানে যারা মারা গেছেন তারা অবহেলায় মারা গেছেন বলে আমার মনে হয়।
রোগী দেখতে একজন চিকিৎসকও আসেন না, নার্সদের দেখা মেলে না। রোগীদের দেখভালের কেউ নেই। ব্যবহৃত পিপিই, গ্লাভস ও বেডশিট ইউনিটটির যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে। এসব পরিষ্কার করার জন্য ক্লিনারও আসে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেবাচিমের একজন স্টাফ জানান, ‘চিকিৎসক-নার্সরা ঠিকমতো যে যান না- এ কথা একেবারে ফেলে দেয়ার মতো নয়। রোগীরা মিথ্যা বলছেন না।
এখানে যারা ভর্তি থাকেন তাদের সঙ্গে বেশ একটা ভালো ব্যবহার করা হয় বলে আমি কখনও শুনিনি। রুমও ঝাড়ু দেয় না ঠিকমতো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপক অভাব রয়েছে। ভয়ে কেউ এখানে আসতেই চান না। এখানকার রোগীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয় তাতে মনে হয় তারা অন্য জগৎ থেকে এসেছেন।
তিনি বলেন, ইউনিটটিতে কোনো করোনা পজিটিভ রোগী থাকলে এবং সেটি পরিষ্কার করা না হলে পরে যিনি আসবেন তারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, ইউনিটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় দু’জন রোগী পালিয়ে গেছে। ইউনিট থেকে রোগীদের শুধু নমুনা সংগ্রহ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বিভূতিভূষণ হালদার এবং তার সহযোগী মো. বায়জিদ। এসব বিষয়ে জানতে শেবাচিমের পরিচালক ডা. বাকির হোসেনকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তার মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান শেবাচিমে করোনা ইউনিটের কার্যক্রম ৯ মার্চ শুরু হয়। ১২৫ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫৫ জন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৮ জন। মৃতদের মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ ছিল। ইউনিটে ভর্তিদের মধ্যে ১২ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।সুত্র ,যুগান্তর
Leave a Reply