রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে যখন জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন ঠিক তখনই বরিশাল নগরীতে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। ওই সিন্ডিকেটের কারনে মাদকের ছোবল থেকে তাদের সন্তানদের বাঁচাতে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন অবিভাবকরা। আর ওই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল নগরের ৩০ নং ওয়ার্ডের কলাডেমা এলাকার রিয়াজ হাওলাদারের বিরুদ্ধে।
রিয়াজ হাওলাদার কলাডেমা এলাকার হাওলাদার বাড়ির মৃত শামছুল হক হাওলাদারের পুত্র। রিয়াজ ওই সকল এলাকা সহ আশপাশের এলাকায় ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদকের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ঠাকুরগাঁও থেকে একটি পরিবহনে ইয়াবা বহন করে বাঘিয়া এলাকার দেলোয়ার। সেখান থেকে দেলোয়ারকে ইয়াবা বহন করায় তাকে কিছু অর্থ দিয়ে থাকেন রিয়াজ। বাঘিয়া এলাকার আব্দুল রাজ্জাক খান সড়কের খাবার হোটেল মালিক হেলালের মাধ্যমে কৌশালে দেলোয়ার বেশি পরিমান ইয়াবা রিয়াজের কাছে পৌঁছান।
এসব সর্বনাশা ইয়াবাগুলো রিয়াজ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য বিভিন্ন বয়সের মানুষকে ব্যবহার করে থাকে এমনকি স্কুল শিশুদের ব্যবহার করছেন এমন অভিযোগ উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, রিয়াজ তার নিজ ভবনে বসে ইয়াবা সেবন করে আসছে। বিভিন্ন জায়গায় দুপুর থেকে সন্ধা পর্যন্ত দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে মরন নেশা ইয়াবা।এসব স্থান গুলো হলো,বাশতলা,রেন্টিতলা,কলাডেমা স্কুল,সোলনা বাজার,পচ্শিম চহঠা,গড়িয়াপারসহ বিভিন্ন স্থানে।
আর মাদক বিক্রির টাকা দিয়েই রিয়াজের হঠ্যাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নগর গোয়েন্দা (ডিবি)’র হাতে দেলোয়ার ইয়াবাসহ আটক হয়ে ছিলেন ইতিপূর্বে।
এ বিষয়ে কাউয়ুম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানায়, এলাকার কিছু কিশোর রয়েছে যারা লেখাপড়া করেনা, রিয়াজ ভাই মূলত ওদের মাধ্যমেই তার মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে থাকে। এলাকার আনাচে-কানাচেতে তার ব্যাপক প্রভাবের কারণে আমরা কিছুই বলতে পারছিনা।
একই এলাকার সেলিম নামে ওই ব্যক্তি জানান, রিয়াজকে বহুবার নিষেধ করা হয়েছে তবু সে এটা করে বেড়ায়, আমার আর কি করার বলেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাববে তিনি বলেন, এর আগে ফেন্সিডিলের সাথে জড়িত ছিলো রিয়াজ। বর্তমানে চম্পা নামে এক মহিলার সাথে মিশে ইয়াবা বিক্রি শুরু করেছে সে।
কাজী সুলতান আলম বলেন, চম্পা ইয়াবাসহ একাধীকবার আটক হয়েছে। এয়াপোর্ট থানা পুলিশ রিয়াজকে কেন চোঁখে দেখে না তা বলার ভাষা আমার নেই।
এয়াপোর্ট থানা পুলিশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ বিন আলম বলেন, মাদক বিক্রির সাথে রিয়াজ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যেহেতু আগেও তার নাম শুনেছি আবার একটু খোঁজ নিয়ে দেখবো। সে যে দলের হোক না কেন আইন সবার জন্য সমান।
এবিষয় রিয়াজ বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা, যে এমন অভিযোগ করেছে তাকে নিয়ে আসেন আমার কাছে। আমি কোনদিন মাদক ছুয়েও দেখিনি। তিনি আরো বলেন,১৯৯৪ সালে গড়িয়ার পাড়ে অবস্থিত (বিকেএসপি) আমাদের অনেক জমি নিয়েছিলো এবং তারা তখন প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আমদের প্রদান করে। আর সেই টাকা দিয়ে বরিশাল শহরে আমি ১৯টি দোকান উঠিয়ে ভাড়া দিয়েছি । সেই দোকান থেকে প্রতি মাসে যে টাকা আসে সেই টাকায় আমার সবকিছু চলে যায়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক মুসুল্লি জানায়, রিয়াজের এসব কার্যক্রমে আমরা অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। যে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে তাকেই পরতে হয় রোসানলে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবাদেন জানাই যাতে এই রিয়াজের হাত থেকে দ্রুত আমরা মুক্তি পাই।
Leave a Reply