শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা। তারা বলেন, মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ক্ষমতায় আসার পর তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শহরে গরিব মরবে না, আমাদের রিকশা চলবে। অথচ মেয়র তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। মেয়র ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ সিদ্ধান্তে গত ১৯ আগস্ট থেকে নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে এ পেশার সঙ্গে জড়িত ৫ হাজার শ্রমিকের পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
শনিবার দুপুরে নগরীর ফকিরবাড়ি সড়কে বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক-শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ করেন।
সংগঠনের সভাপতি দুলাল মল্লিক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, আগে শুধুমাত্র রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করা হতো। এখন গ্রেজগুলোতে অভিযান চালিয়ে রিকশা আটক করা হচ্ছে। পুলিশ রিকশা আটক ও ছাড়ার নামে বাণিজ্যও করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, প্রায় এক মাস ধরে এ উচ্ছেদ অভিযান চলছে। অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করা হয়েছে ও প্রতিটি গাড়ির ব্যাটারি-মটর খুলে রাখা হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এ বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দরিদ্র রিকশাচালকরা শিকার হয়েছেন নানাবিধ হয়রানি ও নির্যাতনের।
শ্রমিকরা বলেন, দরিদ্র রিকশা চালকরা শ্রম কমাতে ও প্রযুক্তির সহায়তা নিতে ৪০-৫০ হাজার টাকা ঋণ করে রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়েছে। এ ব্যাটারি সরকারের অনুমতি সাপেক্ষেই আমদানি হয়েছে। ময়মনসিংহ, গাজীপুর, রংপুর, রাজশাহীসহ সারাদেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্নস্থানে এ ব্যাটারিচালিত রিকশাকে বৈধ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। লাইসেন্স দেয়া হয়েছে সারাদেশের সকল পৌরসভায়। বরিশাল তো বাংলাদেশের বাইরে নয়। তবে কেন রিকশা আটক করা হচ্ছে। গত ১৯ আগস্ট থেকে পরিচালিত মাসব্যাপী এ অভিযান রিকশা শ্রমিকদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। এ রিকশা চালকরা কি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, রিকশা চালিয়ে সৎ উপার্জন করে পেট চালানো কি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড? পুলিশ যেভাবে প্রতিটি প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে রিকআ শ্রমিকদের মারধর করে রিকশা আটক করে আনছে, তাতে মনে হচ্ছে রিকশা চালকরা সমাজের বড় সন্ত্রাসী।
সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, রিকশা শ্রমিকদের বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় নগরীর কয়েকটি নির্দিষ্ট সড়কে চলাচলের অনুমতি দেয়ার তারা দাবি জানিয়ে আসছেন। মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ এ দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। ১৯ আগস্ট রিকশা আটক অভিযান শুরুর পর একাধিকবার গিয়েও তারা মেয়রের দেখা পাননি। এমনকি তিনি ফোনও ধরছেন না।
ডা. মনিষা ৫ হাজার রিকশা শ্রমিকের পরিবার-সন্তানের বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় এনে ব্যাটারিচালিত রিকশা সড়কে চলাচল করতে দেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে কঠোর আন্দোলনে নামার কথা বলেন তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রিকশা শ্রমিকরা দরিদ্র মানুষ, তাদের হারাবার কিছু নেই। তাদের চাওয়া একটাই, রুটিরুজি। সেই রুটিরুজির ওপর আঘাত চলতে থাকলে রাজপথ ছাড়া তাদের আর কোনো আশ্রয় থাকবে না।প্রসঙ্গত, পুলিশ প্রশাসনের অভিযান শুরুর পর থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরীতে লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশ করছে।
Leave a Reply