শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার//ঈদ উৎসব প্রায় শেষ। এবার কর্মস্থলে ফেরার পালা। দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ তাই এখন ঢাকামুখী। ঈদ শেষ না হতেই বরিশাল নদী বন্দর ও বাস স্টেশনগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর রুপাতলী বাস কাউন্টারে পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা জেলাসহ আশপাশের এলাকার মানুষ এসে নামছেন।
লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখান থেকে দুটি পথে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। যারা সড়ক পথে কর্মস্থলে ফিরবেন তারা নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যাচ্ছেন। আর যারা নৌ পথে কর্মস্থলে ফিরবেন তারা বরিশাল লঞ্চঘাটে ফিরছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নগরীতে হঠাৎ করে থ্রি-হুইলার, অটো, রিকশার ভাড়া আদায়ে সেচ্ছা চারিতা দেখা দিয়েছে। পূর্বের নির্ধারিত ১০ টাকার ভাড়া ক্ষেত্র বিশেষে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া একটু রাত নামলেই থ্রি-ইলার, অটো, রিকশায় জনপ্রতি ৫০/১০০ টাকা করে আদায় করে থাকে। গতকাল ঢাকামুখী যাত্রীর ঢল নামে বরিশাল নৌ-বন্দরে। বরিশাল সদর নৌ-থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ বেল্লাল হোসেন জানান, শুক্রবার ১৪টি লঞ্চ বরিশাল নৌবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের সবগুলো ইউনিট কাজ করছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, আজ (শুক্রবার) তেমন চাপ বাড়েনি। মূলত শনিবার থেকে ফিরতি মানুষের ঢল নামবে নৌ-বন্দরে।
ওদিকে যাত্রীর চাপ আগামী শুক্রবার (৩১ জুন) পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। পাশাপাশি বাড়তি যাত্রীর চাপ সামাল দিতে সার্বিক প্রস্তুতিও সেরে রেখেছেন তারা।
বরিশাল নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, ঈদের তৃতীয় দিনে বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে ১২টি লঞ্চ যাত্রার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সরকারি দু’টি রকেট ও ভায়া রুটের আরো বেশ কয়েকটি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকেই লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চগুলোর ডেকের যাত্রীরা অবস্থান নেওয়ায় তা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। পাশাপাশি স্পেশাল সার্ভিসের আওতায় আজকের দিনের লঞ্চের কেবিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে যাওয়ায় কোনো কেবিন খালি নেই।
ঢাকাগামী লঞ্চের যাত্রী বেল্লাল হোসেন জানান, রোববার সরকারি অফিস-আদালত খোলা থাকবে, তাই শনিবার যাত্রীদের চাপ অনেকটাই বাড়বে। যাত্রীচাপ এড়াতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় ছুটছেন।
এদিকে ঈদের পর আজই মূলত রাজধানীতে ফেরা মানুষের চাপ শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে লঞ্চ স্টাফরা বলেন, শনিবার যাত্রীর চাপ অনেকটা বাড়বে। তবে গার্মেন্ট সেক্টর আরো কয়েকদিন বন্ধ থাকায় ২৬ তারিখের দিকে যাত্রীদের মূল চাপ দেখা দেবে।
অপরদিকে যাত্রীসংখ্যা বাড়লেও ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদীবন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়তে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার।
তিনি জানান, নিরাপদ যাত্রার লক্ষে লঞ্চ মালিক, মাস্টার-ড্রাইভার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে ঈদের আগেই সভা ও মোটিভেশন ওয়ার্ক করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা ও বন্দর এলাকায় যাত্রীসহ সবার সচেতনতায় মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এদিকে যাত্রীদের ভিড় তেমন একটা না থাকায় অনেকটা ঢিমে-তালেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পন্টুন এলাকায় নিষিদ্ধ থাকলেও কৌশলে হকাররা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবার মধ্যে মেরিন ক্যাডেট ও স্কাউটদের সহায়তায় বন্দর এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে লোড সাইন অতিক্রম করার আগেই লঞ্চগুলোকে নৌ-বন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য করায় স্পেশাল সার্ভিসে লঞ্চের টাইম-টেবিল অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
Leave a Reply