শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিএনপি তাঁর সকল শক্তি প্রয়োগ করছে মেয়র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে। বিএনপি তাঁদের দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের কোনো খোঁজ-খবর রাখছে না। প্রতিটা সিটি কর্পোরেশনের প্রায় প্রতিটা ওয়ার্ডেই একাধিক বিএনপির প্রার্থী এমনকি কোনো কোনো ওয়ার্ডে তিন থেকে চারজন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। একই সমস্যা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও।
আওয়ামী লীগ সিটি নির্বাচনে অভিন্ন ও কোন্দলমুক্ত মেয়র প্রার্থী দিতে পারলেও কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী দিতে পারে নাই। তবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর পদে একাধিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করলেও, তাঁরা নিজেদের মতো করে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির একই ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীরা যখন দেখছে কেন্দ্র থেকে তাঁদের কেউ কোনো খোঁজ খবর নিচ্ছে না, কোনো ধরনের দিক-নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে না। তখন তাঁরা বাঁচার জন্য এবং অস্তিত্ব রক্ষা ও ভোটের জন্য আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে একধরনের চুক্তি করছেন। বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মেয়রের সঙ্গে সমঝোতায় বলেছেন, ‘মেয়র হিসেবে আপনাকে আমরা সমর্থন প্রদান করব, আপনি কাউন্সিলের পদে আমাদেরকে সমর্থন করবেন, কিংবা আমাদের ভোটে ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করেন।’
গতকাল বরিশাল সিটির আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ ও বিএনপির ১৬ জন বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী একটি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা সবাই সাদিক আবদুল্লাহকে সমর্থন প্রদান করেছে। প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী সিটিতেও। রাজশাহীতে শুধু বিএনপি নয়, বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থিত কাউন্সিল প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনকে সমর্থন করেছেন।
আওয়ামী লীগ গত দুই সিটি নির্বাচনে যে কৌশল গ্রহণ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে একটানা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছে। যার ফলে সেই ওয়ার্ড কার্যত বিএনপির জন্য ব্লক হয়ে যাচ্ছে। সেই ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো ভোটের ক্যাম্পেইনই হচ্ছে না।
সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, একজন মেয়রের পক্ষে এত কম সময়ে সকল ওয়ার্ডে সবার কাছে যাওয়া সম্ভব হয় না। কাউন্সিলর প্রার্থীরা ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটের প্রচারণা চালায়। কাউন্সিলর প্রার্থীরা ওয়ার্ডের প্রায় মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচয় থাকার কারণে তাঁদের প্রচারণা নির্বাচনে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। গাজীপুর সিটিতে দেখা যায়, কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ৩৭, বিএনপি ১২, জাতীয় পার্টি ২ ও স্বতন্ত্র ১ জন প্রার্থী জয়লাভ করেছে। আবার খুলনা সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১৩ জন, বিএনপির আটজন এবং নয়টি ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছেন। খুলনা ও গাজীপুরে বিএনপির কাউন্সিলর যারা জয়ী হয়েছেন তদের অধিকাংশই বিদ্রোহী প্রার্থী। কাউন্সিলর প্রার্থীরা সিটি নির্বাচনে মেয়রের ভোটের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় পিছিয়ে পরছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ঐক্যবদ্ধ করে সিটি নির্বাচনে প্রচারণার যে কৌশল গ্রহণ করেছে তাতে অনেকটাই সফলতা এসেছে। আসন্ন তিন সিটিতেও এই কারণেই এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগ।
Leave a Reply