সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
বরিশাল সদর উপজেলার চন্ডিপুরের মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা ভবন নির্মাণ কাজের বরাদ্দ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার অভিযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী হাওলাদার মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান তামান্না মামলাটির আদেশ দানে পরবর্তী দিন ধার্য্যরে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন- বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক ও উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব।
এছাড়া মামলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, পরিকল্পনা-২ শাখার সিনিয়র সহকারী প্রধান (প্রতিকল্প), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সচিবালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, পরিকল্পনা কমিশন আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য, কার্যক্রম বিভাগের সদস্য, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য, বাস্তবায়ন, পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে মোকাবেলা বিবাদী করা হয়েছে। মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী আজাদ রহমান জানান- ১৯৬৪ সালে বরিশাল সদর উপজেলার ৬ নম্বর জাগুয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুরের আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী হাওলাদার সরকারী চাকরীতে যোগদান করে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে ১৯৯৮ সনে চাকরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরীর পূর্বে তিনি খুলনার খালিশপুরে ব্যবসা করিতেন। তিনি চাকুরীরত থাকা অবস্থায় নিজ গ্রামের অনগ্রসর জনসাধারণকে শিক্ষিত করতে ১৯৬৮ সালে চন্ডিপুরে তার নিজ নামে মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে বিদ্যালয়ের বয়স ৫১ বছর। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সময় তিনি ১.২৬ একর ভূমি রেজিষ্ট্রিকৃত অর্পননামা দলিল করে দেন । ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি যশোর শিক্ষা বোর্ড হইতে অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়। ২০১৭ সনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী হাওলাদার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হন। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল পরিকল্পনা বিভাগের এনইসি-একনেক ও সমন্বয় অনুবিভাগের অনুমোদনপত্রের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, পরিকল্পনা-২ শাখার সিনিয়র সহকারী প্রধান (প্রতিকল্প) গত ২২ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করেন। ওই পত্রে নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের উর্ধ্বমুখী শীর্ষক অনুমোদিত প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন জ্ঞাপন করা হয়। প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় পাঁচ হাজার দুইশত সাইত্রিশ কোটি সাইত্রিশ লক্ষ নব্বই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। যার অনুলিপি মোকাবেলা বিবাদীর কার্যালয়সহ অপরাপর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।
প্রকল্পটির অনুমোদিত মেয়াদকাল চলতি বছরের ১ জানুয়ারী থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়। স্মারকাদেশে বরিশাল-৫ আসনের বরিশাল সদর উপজেলার ১০টি বিদ্যালয় নির্ধারণ করিয়া দেওয়া হয়। যার ১ নম্বর ক্রমিকে মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। কিন্তু অনুমোদন হওয়া সত্তে¡ও অদ্যাবধি বিদ্যালয় সমূহের নির্মাণ কাজ শুরু হয় নাই। উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যালয়ের সাইড ও জমিজমা সংক্রান্তে যাবতীয় তথ্য বিদ্যালয়ের স্বপক্ষে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্যদের দায়িত্বে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় কতক কুচক্রি মহলের কু-প্ররোচনায় বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ না করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে জাগুয়া রূপাতলী হাই স্কুলে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ সরিয়ে বাতিল করেন।
এ ঘটনায় আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বিভিন্ন সময় তাদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য অনুরোধ করেন এতে গত ২৫ অক্টোবর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সকল কর্মকর্তা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হবে না বলে জানিয়ে দেন। এতে রোববার মামলাটি দায়ের করলে বিচারক ওই নির্দেশ দেন।’
Leave a Reply