শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১২টি কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি ১১টি কেন্দ্র ঝুকিমুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) কর্তৃক প্রতিকুল পরিবেশের উপর গুরুত্ব দিয়ে ঝুকিপূর্ন ও ঝুকিমুক্ত কেন্দ্রের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। অবশ্য পুলিশের ভাষায় ঝুকুপূর্ন নয়, গুরুত্বপূর্ন এবং সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে অবাধ, শুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিশেষ নজরদারী থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রের থেকে ঝুকিপূর্ন প্রতিটি কেন্দ্রে বার্তি দু’জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্রী ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. নাসির উদ্দিন মল্লিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে শান্তিপূর্ন পরিবেশে সম্পন্ন করনের লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সকালে নগরীর আমতলার মোড় এলাকাধীন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাহফুজুর রহমান এর সভাপতিত্বে বিশেষ সভায় নির্বাচন কর্মকর্তা, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক, ডিজিএফআই অধিনায়ক, এনএসআই, এপিবিএন ও আনসার কমান্ডার সহ প্রশাসনের সকল পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী ২৮ জুলাই থেকে নির্বাচন পরবর্তী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাভাবিক রাখা সহ শান্তিপূর্ন ভোট উৎসবের বিষয়ে নানামুখি সিদ্ধান্ত এবং আলোচনা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, নির্বাচন কমিশন থেকে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহনের জন্য ১২৩টি ভোট কেন্দ্র চুড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ১২৩টি ভোট কেন্দ্রের গুরুত্ব পর্যালতানা করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখা সিটিএসবি। কেন্দ্রগুলোকে তারা তিন ক্যাটাগরীতে বিভক্ত করেছেন। তা হলো ঝুকিপূর্ন, অধিক ঝুকিপূ ও সাধারণ। যদিও পুলিশের ভাষায় কেন্দ্রগুলোকে ঝুকিপূর্ন না বলে গুরুত্বপূর্ন ও অধিক গুরুত্বপূর্ন এবং সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নগর বিশেষ শাখা সূত্রে জানাগেছে, তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে ভোটার এবং প্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিকুল পরিস্থিতি বিবেচনা করে কেন্দ্রের গুরুত্ব নির্ধারন করেছে। সে অনুযায়ী ১২৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১১২টি কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা। যার মধ্যে ৫০টি ভোট কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ন ও ৬২টি ভোট কেন্দ্র শুধু গুরুত্বপূর্ন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বাকি মাত্র ১১টি কেন্দ্র ঝুকিমুক্ত সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার ও নগর পুলিশের মুখপাত্র নাসির উদ্দিন মল্লিক জানান, গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ সভায় ভোট কেন্দ্রের বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে সাধারণ কেন্দ্রের থেকে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন এবং অধিক গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্র গুলোতে ২ জন করে আনসার সদস্য বেশি থাকবেন। সে হিসেবে গুরুতপূর্ন ও অধিক গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্রগুলোতে ২৪ জন করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভোট কেন্দ্রের শান্তি বজায় রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন।
এদের মধ্যে একজন এসআই, একজন এএসআই, পাঁচজন পুলিশ সদস্য, একজন পিসি, একজন এপিসি ও ৩ জন আনসার ব্যাটেলিয়ন থাকবে। যারা সবাই অস্ত্রধারী থাকবেন। পাশাপাশি ৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী আসনার সদস্য থাকবেন। এরা লাঠি হাতে দায়িত্ব পালন করবেন বলে নাসির উদ্দিন মল্লিক জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আরমাত্র ৬ দিন বাদেই অর্থাৎ ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। হিসাব অনুযায়ী বরিশাল সিটিতে এবার নারী ভোটারের তুলনায় পুরুষ ভোটার ৭০৬ জন বেশি। ওই সংখক ভোটারদের ভোট গ্রহনের জন্য কেন্দ্র নির্ধারন করা হয়েছে ১২৩টি। যার মধ্যে চারটি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে।
এবারের নির্বাচনে বিসিসি’র মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে মোট ১শ ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে মেয়রের ১টি পদের জন্য লড়ছেন একজন স্বতন্ত্র সহ মোট ৭ জন প্রার্থী, সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের বিপরিতে ৯৪ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচনী মাঠে লাড়াই করছেন ৩৫ জন প্রার্থী। অবশ্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় সংরক্ষিত ১০.১১.১২ নং ওয়ার্ডে একজন এবং সাধারণ ১৫, ১৬ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে দুই হাজার ৬১৩ জন প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং এবং পোলিং অফিসার। এদের মধ্যে ২ হাজার ৩৭৩ জন ৩০ জুলাই ১২৩ ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবেন। বাকিরা আপদকালিন জরুরী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকবেন। যারা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের মধ্যে ১২৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৭৫০ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং এক হাজার ৫শ জন পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
Leave a Reply