বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়াপ্রতিনিধি।। গঙ্গামতি সৈকত পর্যটন শিল্পের আর একটি সম্ভাবনাময় স্থান। এখানে একই স্থানে দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় ও সুর্যাস্তের দৃশ্য দেখা যায়। পটুয়াখালীর জেলার সমুদ্র তিরবর্তী কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নে গঙ্গামতি সৈকত। কিন্তু এ সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সড়ক সংস্কারের অভাবে যানবাহন চলাচলে সম্পুর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
সড়কের কার্পেটিং ওঠে গিয়ে মাঝে মাঝে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত এবং সৈকতের প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে মাটি সাথে মিশে গেছে। গত আম্পানে সৈকতে প্রবেশের কাঁচা রাস্তাটির বালি ঢেউ ক্ষয়ে গেছে। এখন ওই স্থানে জোয়ারের সময় পানি থাকার কারনে গাছ দিয়ে সাকু তৈরি করে যাতায়ত করে। গঙ্গামতি সৈকতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক,স্কুল-কলেজ ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের-শিকার-হচ্ছে।কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপতর সুত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের চলাচলের সুবিধার্থে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপতর চাপলীবাজার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গঙ্গামতি পর্যন্ত কার্পেটিং সড়কটি করে।
কিন্তু গঙ্গামতি সৈকতের প্রবেশের সড়কটি কি কারনে বন্ধ হয়ে যায়। ১১বছর পার হলেও সৈকতের প্রবেশ সড়কটির পাকা হবার কোনো খবর নেই। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা ভ্রমনে আসা পর্যটকদের সুর্যোদয় দেখার জন্য যেতে হয় গঙামতি সৈকতে। সুর্যোদয়ের মনোলোভা এ দৃশ্য উপভোগ করতে পর্যটকদের কুয়াকাটাÑকলাপাড়া বিকল্প সড়কের দশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গঙ্গামতি যেতে হয়। পর্যটকদের চলাচলের সুবিধার্থে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপতর কার্পেটিং করে ওই সড়কটি। কয়েক বছরের মধ্যে কার্পেটিং ওঠে গেছে। ওই ভাঙ্গা সড়কে ঘটেছে দুর্ঘটনা। ধুলাসার ইউনিয়নের চর চাপলী, কাওয়ার চর,পশ্চিম চাপলী, চর গঙ্গামতি এলাকার মানুষসহ হাজার হাজার পর্যটক ঝুকিঁ নিয়ে চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হয় গাড়ি নিয়ে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের।
প্রায় সময় পর্যটকদের গাড়ি মাঝ পথে বিকল এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। গঙ্গামতি সৈকত জুড়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি, নানান প্রজাতির বৃক্ষরাজি আর সূর্যোদয় মত মনলোভা দৃশ্য উপভোগ করতে হাটু পানি পেরিয়ে যেতে হয় পর্যটকদের।
দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি মাটির সাথে দেবে যাওয়ায় মোটরসাইকেলে যাওয়া-আসার সময় প্রায়শই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পর্যটকরা। গুরুত্বপূর্ন এ সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রাসহ পর্যটকরা। পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার পূর্বদিকে গঙ্গামতির সৈকত জুড়ে রয়েছে লাল কাঁকড়ার অবাধ
বিচরন। রয়েছে ঝাউবনসহ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, বাইনসহ নানান প্রজাতির সারিসারি বৃক্ষ। সূর্যোদয় মত এমন দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সমাগম ঘটে শতশত পর্যটকের।স্থানীয়রা ক্ষুদে ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ আলী জানান, পর্যটকদের যাতায়ত সুবিধায় সড়কটির মেরামত কাজ শুরু হলেও অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর অদৃশ্য করেন বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বরিশাল থেকে
ঘুরতে আসা অভি হাসান গঙ্গাতমি সৈকত ঘুরে এসে বলেন, সৌন্দর্য কোন অংশেই কম নয়। কুয়াকাটায় যতগুলো দর্শনীয় স্পট রয়েছে এর মধ্যে গঙ্গামতির সৈকতে এসে আমার কাছে আকর্ষনীয় মনে হয়েছে। এখানের লাল কাকড়াসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করছে। তবে এই সৈকতে আসার একমাত্র সড়কটির বেহাল অবস্থার কারনে পর্যটকরা এখানে আসার আগ্রহ প্রকাশ করবেনা ।
রাজশাহী উম্মে হাবিবা দম্পতি গঙ্গামতি সৈকত ঘুরে এসে বলেন, সৈকতের অপরুপ দৃশ্য দেখে আপ্লত হয়েছি কিন্তু সৈকতে যাওয়ার রাস্তার বেহাল দশায় সব আনন্দ বিলীন হয়ে গেছে। কুয়াকাটা সৈকতের চেয়ে ও এ সৈকতটি অসাধারন। ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাষ্টার বলেন, জোয়ারের পানিতে গঙ্গামতি প্রবেশের রাস্তার বালি ক্ষয়ে এমন দশা হয়েছে।
পর্যটকদের স্বার্থে গঙ্গামতির চরে আসার একমাত্র রাস্তাটি দ্রæত সংস্কার করা উচিত। যাতে পর্যটকরা এসেএই সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নির্বিঘেœ আসতে পারে।কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপতর (এলজিইডি) উপসহকারী মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সৈকতের প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে মাটি সাথে মিশে গেছে ওই রাস্তাটি উচু করার দরকার এবং ওই স্থানে পানি আসা যাওয়ার জন্য একটি কালর্ভাট নির্মান করার প্রয়োজন।
আমি কয়েকবার প্রস্তাব পাঠায়েছি কিন্তু অনুমোধন হয়নি। চাপলীবাজার থেকে গঙ্গমতি পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার করা জরুরি প্রয়োজন।
এ বিষয় জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক জানান, সৈকতের প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে পর্যটক ও এলাকার লোকজনের চলাচলের যাতে দুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেজন্য দ্রæত প্রস্তব পাঠানো হবে এলজিইডিতে। যাতে তারা ওই কাজটি দ্রুত করে।
Leave a Reply