শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ন
আরেফিন সহিদ, বাউফল॥ পটুয়াখালীর বাউফলে লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকা ডুবিতে নিহত ৩ জনের জীবনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাবা-মা হারানো এতিম শিশু তানহাকে দেয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা।সোমবার নুরাইনপুর লঞ্চঘাটে শালিস বৈঠকে এই অর্থ নির্ধারণ করেন স্থানীয় কয়েকজন মাতুব্বর।
বৈঠক সূত্র জানায়, ১৮ জুন ঢাকা-কালাইয়া রুটের যাত্রীবাহী ডবল ডেকার লঞ্চ ঈগল নুরাইনপুর ঘাটে নোঙর করে। যাত্রী নামিয়ে লঞ্চটি ছাড়ার মুহূর্তে পেছনে থাকা একটি খেয়া নৌকাকে ধাক্কা দেয়। নৌকাটি উল্টে ১০/১২ যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি মারা যায় এবং আসলাম ও জান্নাত নামের এক দম্পতি নিখোঁজ হন। ১৯ জুন বিকালে আসলাম ও জান্নাতের লাশ ভেসে ওঠে। নিহতদের বাড়ি বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ভরিপাশা গ্রামে।
ঘটনার ৪ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে ৮ মাস বয়সের শিশু সন্তান রেখে গার্মেন্টস কর্মী জান্নাত তার স্বামীকে নিয়ে বকেয়া বেতন আনার জন্য ঢাকা যান। কিন্তু গার্মেন্টস মালিক পরবর্তীতে বকেয়া পরিশোধ করা হবে বলে তাদেরকে জানান। ফের জান্নাত ও তার স্বামী আসলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। বাড়ির পাশের লঞ্চঘাটে নেমে খেয়া নৌকায় উঠেছিলেন তারা। ঢাকা থেকে যে লঞ্চে এলেন সেই লঞ্চের ধাক্কায় নদীতে পড়ে মারা যান তারা।
এদিকে ঘটনার পর পুলিশ ও এলাকাবাসী লঞ্চটি আটক করে। পরে একটি মহল ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লঞ্চটি ছাড়িয়ে নেয়।
সোমবার ওই মহলটি নুরাইনপুর লঞ্চঘাটে ঈগল লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক বসিয়ে ৩ জনের লাশের মূল্য নির্ধারণ করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে এতিম শিশু তানহাকে ২ লাখ টাকা ও আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে থাকা কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে ঈগল লঞ্চের মালিক আবদুর জব্বার মিয়া বলেন, আপোষ মীমাংসা করা হয়েছে। আপনি লঞ্চের ম্যানেজার রব্বানীর সঙ্গে আলাপ করেন।
বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শুনেছি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে আপোষ মীমাংসা হয়েছে। নিহত পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।
Leave a Reply