নদীতে ভাসে বরিশাল শ্রমিকদের জীবন Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




নদীতে ভাসে বরিশাল শ্রমিকদের জীবন

নদীতে ভাসে বরিশাল শ্রমিকদের জীবন




অনলাইন ডেস্ক:  ট্রলার থেকে গুঁড়ি নামাতে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মাসে ১৮ থেকে ২০ দিন কাজ করেন একেকজন শ্রমিক। জনপ্রতি মজুরি পান ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ঢাকা, ৩০ জুন। ছবি: আবদুস সালামট্রলার থেকে গুঁড়ি নামাতে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মাসে ১৮ থেকে ২০ দিন কাজ করেন একেকজন শ্রমিক। জনপ্রতি মজুরি পান ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ঢাকা, ৩০ জুন। ছবি: আবদুস সালামখোলামোড়া ঘাটের কাছেই ভাসছে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি। মেহগনি, রেইনট্রি, চাম্বুল আরও কত কী। ঘাটে ভেড়ানো আছে গুঁড়িভর্তি দুটি বড় ট্রলার। ট্রলার দুটো থেকেই পানিতে ফেলা হচ্ছে গুঁড়িগুলো।

ভারী গুঁড়িগুলো ঠেলে ফেলা হচ্ছে, একটু কম ভারী যেগুলো, সেগুলো কাঁধে তুলে নিচ্ছেন একেকজন। কয়েকজন নেমে পড়েছেন পানিতে। ডুবসাঁতার দিয়ে তুলে আনছেন গুঁড়িগুলো। ডুবে থাকা গুঁড়িগুলো কয়েক দিন আগে আনা। আরেক দল শ্রমিক লেগে আছে সেগুলো পাড়ে তুলে রাখার জন্য।ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া ঘাট এলাকায় প্রতিদিন টনের পর টন গাছের গুঁড়ি নামে। এগুলো আসে প্রধানত বরিশাল থেকে।প্রখর রোদে গায়ে ফোঁসকা পড়ার উপক্রম। এর মধ্যেই সকাল থেকে কাজ করছেন বরিশাল থেকে গুঁড়ির সঙ্গে আসা শ্রমিকেরা। রোদে চকচক করছে তাঁদের ঘামে চটচটে শরীর।

রোববার দুপুরে বুড়িগঙ্গার ঘাটে ভেড়ানো ট্রলারে বসেই কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলো। এদের একজন মো. মিন্টুর বয়স ২৬। এখানকার বেশির ভাগ শ্রমিকের বয়সই ২০ থেকে ৩০-এর মধ্য। মিন্টু জানালেন, গুঁড়িভর্তি ট্রলার নিয়ে তাঁরা এসেছেন বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট থেকে। রওনা হওয়ার দিন থেকে কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া পর্যন্ত আসতে ৯ দিন লেগেছে। কখনো কখনো এক দিন বেশিও লেগে যায়। ফিরে যেতে আরও কমপক্ষে ৯ দিন লাগবে। এই ১৮ দিনে একেকজন ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা মজুরি পান। খাবারের জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকে।

মিন্টু বললেন, ‘আমাদের কাজ হলো মেহোন্দীগঞ্জ থেকে ট্রলার গুঁড়ি দিয়ে লোড করে রওনা হওয়া এবং ঢাকার মিলের লোকদের কাছে সেগুলো বুঝিয়ে দেওয়া।’ যাওয়ার সময় কী করেন? উত্তর আরেক শ্রমিক মো. সোহাগের, ‘যাওয়ার সময় ট্রলার খালি নিই না। ঢাকার মুদিপণ্য নিয়ে যাই।’ এটা তাঁদের বাড়তি পাওনা।বুড়িগঙ্গা থেকে গাছের গুঁড়ি তুলছেন শ্রমিকেরা। বাবা-মা, ছোট বোন, স্ত্রী এবং চার বছরের ছেলেকে নিয়ে মিন্টুর সংসার। অন্য শ্রমিকদের চেয়ে মিন্টুর আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো। যে ট্রলারটিতে করে গুঁড়ি আনা হয়েছে তার অন্যতম মালিক তিনি। ট্রলার ভাড়ার একাংশ তাঁর। ট্রলার চালকও তিনি। তবে চালক হিসেবে মিন্টু কিছু পান না।

সোহাগের বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখন তাঁর মা মারা যান। মায়ের অস্পষ্ট স্মৃতি মাঝে মাঝে উঁকি দেয় বলে তিনি জানালেন। সোহাগ সংসার পাততে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করছেন, সামনের ঈদুল আজহার পরপরই বিয়ে হয়ে যাবে। বরিশালের বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ বাবা একা থাকেন।

ঢাকা থেকে ফেরার পর চার থেকে পাঁচ দিনের অবসর পান শ্রমিকেরা। তারপর আবার ট্রলার নিয়ে নেমে পড়তে হয় নদীতে। মিন্টু বলেন, ‘পরিবারের লোকজন জানে, আমার কাজই এমন। দিনের পর দিন আমার নদীতে থাকা তারা মেনে নিয়েছে।’ মিন্টুর চেয়ে রাকিবের বয়স কিছুটা কম। সে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তাঁর চোখ দুটো পাথরের মতো। ইশারায় অনেক কথা বলল সে। মিন্টু বুঝিয়ে দিল, রাকিবের ইচ্ছে আমি যেন বরিশালে গিয়ে তাঁর ছবি তুলি। সে তখন ভালো জামা কাপড় পরবে।ট্রলার থেকে মেপে মেপে গুঁড়ি ‘খালাস’ করার দায়িত্ব আলতাফ ব্যাপারীর। তিনিও বরিশাল থেকে এসেছেন। তবে ট্রলারে করে নয়। প্রতিটি গুঁড়ির তথ্য টালি খাতায় টুকে রাখেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD