টাইটানিক আকৃতির লঞ্চ যুক্ত হলেও বরিশাল নদী বন্দরে বাড়েনি পন্টুনের সংখ্যা Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




টাইটানিক আকৃতির লঞ্চ যুক্ত হলেও বরিশাল নদী বন্দরে বাড়েনি পন্টুনের সংখ্যা

টাইটানিক আকৃতির লঞ্চ যুক্ত হলেও বরিশাল নদী বন্দরে বাড়েনি পন্টুনের সংখ্যা




খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বিলাসবহুল যাত্রীবাহী নৌযান। প্রতিবছর ঈদের আগে এ রুটে যুক্ত হচ্ছে কোন না কোন বিলাসবহুল লঞ্চ। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বেও এ রুটে যুক্ত হয়েছে এমভি মানামী নামের সু-বিলাস লঞ্চ। বর্তমানে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে সরাসরি চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা ২৪টি।

তবে বছর বছর টাইটানিক আকৃতির লঞ্চ যুক্ত হলেও বরিশাল নদী বন্দরে বাড়েনি পন্টুনের সংখ্যা। ছয়টি পল্টুনেই ভরসা খুঁজে নিতে হচ্ছে লঞ্চগুলোকে। এর মধ্যে আবার তিনটি পন্টুুন অভ্যন্তরীণ রুটের এক তলা লঞ্চের জন্য নির্ধারিত। ফলে ঈদ মৌসুমে তিনটি পল্টুনে জায়গা না পেয়ে অধিকাংশ লঞ্চ মাঝ নদীতে নোঙর করে যাত্রী ওঠানামা করাতে হচ্ছে। এতে ছোট-বড় দুর্ঘটনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো।

তাই আসন্ন ঈদেও বরিশাল নদীবন্দরে লঞ্চে যাত্রী ওঠানামা করানো নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন বন্দর ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চের মাস্টাররা বলেন, বরিশাল নদীবন্দরে দূরপাল্লার রুটের লঞ্চের যাত্রী ওঠানামার জন্য তিনটি পল্টুন নির্ধারণ রয়েছে। যেখানে সর্বোচ্চ হলে এক সঙ্গে আটটি লঞ্চ নোঙর করা যায়।

যে কারণে স্বাভাবিক দিনে কোন ঝামেলা হয় না। কারণ ওই সময় রোটেশনের কারণে প্রতিদিন সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয়টি করে লঞ্চ চলাচল করে। তবে প্রতিবার ঈদ মৌসুমে তাদের চরম ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, ঈদ মৌসুমের বিশেষ সার্ভিসে ২৩টি লঞ্চ বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে যাত্রীসেবা দিবে। এছাড়া বরিশাল-ভায়া হয়ে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য রুটের আরও আটটি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করবে।

যে কারণে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও নৌবন্দরে লঞ্চ ঘাট দেয়া নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। লঞ্চের মাস্টাররা বলেন, ঈদ মৌসুমে বিশেষ ট্রিপ দেয়ার কারণে ২০ থেকে ২২টি লঞ্চ একযোগে চলাচল করে। যে লঞ্চটি আগে ঘাটে পৌঁছায় সেটির যাত্রী না নামা পর্যন্ত অপর লঞ্চটিকে মাঝ নদীতে অপেক্ষমাণ থাকতে হয়। কোন কোন সময় এক লঞ্চের পেছনে আরেকটি লঞ্চ থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে গিয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে।

তাই বরিশাল নদীবন্দরে পন্টুুনের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য তারা দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসলেও অদ্যাবধি কোন সুফল মেলেনি। বরিশাল বিআইডব্লিউটি’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোঃ কবির হোসেন বলেন, বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে যে লঞ্চগুলো চলাচল করছে তার প্রতিটির প্রস্থ সর্বোচ্চ ৪৪ থেকে সর্বনিম্ন ৩৮ ফুট পর্যন্ত। বন্দরে যে ছয়টি পন্টুুন রয়েছে তার এক একটি ১০০ ফুট করে। সে হিসেবে ৬০০ ফুটের মধ্যে ৩০০ ফুট পন্টুুন বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের লঞ্চের জন্য বরাদ্দ।

৩০০ ফুটের তিনটি পন্টুুনে সর্বোচ্চ ১০টি লঞ্চ আমরা নোঙর করাই। ঈদ মৌসুমে পল্টুনে জায়গা দিতে না পারায় বেশি ট্রিপের আশায় তড়িঘড়ি করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ একটি লঞ্চের পেছনে আরেকটি লঞ্চ থামিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছেন। তাছাড়া দিবা সার্ভিসের গ্রীনলাইন ওয়াটার ওয়েজ নদী বন্দরের জেটিতে নোঙর করতে পারছে না। এ দুটিকে নোঙর করাতে হচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি’র জেটিতে।

যাত্রীবাহী নৌযান মালিকদের সংগঠন জাপ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি পল্টুনের সংখ্যা। আমরা লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে বহুদিন থেকে দুটি পন্টুন বৃদ্ধির জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে দাবি জানিয়ে আসছি। তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ গত ২৭ এপ্রিল ঢাকায় আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায়ও বরিশাল নদীবন্দরে দুটি পন্টুন বৃদ্ধির জন্য দাবি জানিয়েছি। ওই সভায় আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরে দুটি পন্টুন বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে এখন পর্যন্ত সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক ও বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা সরকার মিঠু বলেন, বরিশাল নদীবন্দরে পন্টুন সঙ্কটের কথা সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা সবাই জানেন। এ সঙ্কট নিরসনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশ্ব ব্যাংক একটি প্রকল্পও গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের অধীনে বরিশাল নদীবন্দরে নতুন দুটি পন্টুন, গ্যাংওয়ে নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন করা হবে। এরই মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট টিম নদীবন্দর পরিদর্শন করে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এখনও অনেক সময়ের প্রয়োজন।

কারণ উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন পন্টুুন স্থাপনের জন্য নদীবন্দরে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এ জন্য নৌবন্দরের পাশে থাকা ট্রলার ঘাটটি অন্যত্র সরিয়ে নতুন জায়গা তৈরি করতে হবে। তার আগে ট্রলার ঘাটের জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ ট্রলার ঘাট দিয়েও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নদী পারাপার করছে।

এজন্য ট্রলার ঘাট সরানোর আগে পন্টুুন স্থাপন সম্ভব নয়। যদিও ট্রলার ঘাটের জন্য সম্ভাব্য জায়গা নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে নৌবন্দরে ডিসি ঘাট সংলগ্ন এলাকায়। তবে ঈদের আগে কিছুই সম্ভব নয়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD