মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ চলমান বৈশ্বিক মারামারি করোনার এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে দরিদ্র কৃষকের কপালে যখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ, তখন তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে সূর্যমুখী ফুল। তিনমাস আগে বপন করা বীজ থেকে বর্তমানে মাঠ জুড়ে পরিপক্ব ফুলের সমারোহ। এখন শুধু ফসল ঘরে তোলার পালা। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঝালকাঠির রাজাপুরে চলতি মৌসুমে সূর্যমুখীর ভাল ফলন হয়েছে। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় বেশি লাভের আশা বুক বেঁধেছেন কৃষকেরা।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় মোট আঠারো হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় ও ভাল ফলন হওয়ায় ধীরে ধীরে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষক। অধিকাংশ ক্ষেতেই এখন পরিপক্ব ফুল। কিছুকিছু ক্ষেত থেকে কৃষক ইতোমধ্যেই ফলন ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সহায়তায় বিনামূল্যে প্যাসিফিক হাইসন-৩৩ জাতের সূর্যমুখীর বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সদরের পূর্ব চররাজাপুর এলাকার কৃষক মো. সোহরাব হোসেন জানান, হাইব্রিড বীজ থেকে প্রতি একর জমিতে সূর্যমুখীর ফলন হয় ২৫ থেকে ৩০ মন পর্যন্ত। যা থেকে তেল পাওয়া যায় ১৫ থেকে ১৮ মন পর্যন্ত। শুধু বীজ বিক্রি করলে প্রতিমণ বীজ দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি করা যায়। আর বীজ থেকে তেল বের করলে খৈলসহ প্রতি মনে ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। প্রতি কেজি তেল দেড় থেকে দুইশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়।
উপজেলার পূর্ব চররাজাপুর কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল হক হাওলাদার বলেন, ‘সূর্যমুখীর কোন কিছু ফেলনা নয়। বীজ থেকে তেল, এরপর মাছ ও পশুখাদ্যের জন্যে খৈল ও গাছ শুকিয়ে গেলে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে সূর্যমুখী তেলের চাহিদাও দিনদিন বাড়ছে। করোনার এই দুর্যোগের মধ্যেও ভাল ফলন হওয়ায় এ বছর বেশি লাভের আশা করছি।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিয়াজউল্লাহ বাহাদুর বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর রাজাপুরে প্রায় দ্বিগুণ সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। ভাল ফলন ও বেশি লাভ হওয়ায় এ উপজেলায় ধীরে ধীরে সূর্যমুখীর চাষ বাড়ছে।’
Leave a Reply