মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় নিষিদ্ধঘোষিত নোটবই ও গাইড বইয়ে সয়লাব। বিপাকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রধানমন্ত্রীর মহৎ উদ্যোগ কলুষিত করছে অসাধু প্রকাশনী চক্র। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বছরের প্রথম দিন গরিব অসহায়সহ সকল শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিয়ে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধঘোষিত নোট ও গাইড বইয়ের যাতাকলে পিষ্ঠ হচ্ছে। অসাধু প্রকাশনী চক্র বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এক এক বিদ্যালয়ে এক এক প্রকাশনীর বই নিতে বাধ্য করছেন। এতে করে শিক্ষার্থীরা নোট ও গাইড বইয়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয় গুলোতেও বইয়ের বোঝার সাথে গাইড বইয়ের বোঝা বহন করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। দ্বিতীয় শ্রেণির একসেট গাইড বই কিনতে অভিভাবকদের গুনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণির ৩৪০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণির ৪০০ টাকা, পঞ্চম শ্রেণির ৬০০ টাকা, ষষ্ঠ শ্রেণির ১২৫০ টাকা, সপ্তম শ্রেণির ১২৮৫ টাকা, অষ্টম শ্রেণির ১৭৪৫ টাকা, নবম শ্রেণির ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা এবং কলেজ লেবেলে একাদশ শ্রেণিতে ২২শত টাকা, দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩ হাজার টাকার গাইড বই শিরোধার্য।
এ সকল বই কিনতে গরিব অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে গাইড বই কেনার মহোৎসব করছে। আর এ সকল বইয়ের গায়ে যে মূল্য তালিকা দেওয়া রয়েছে তা থেকে একটি টাকাও কম নিচ্ছেন না লাইব্রেরী মালিকরা। শিক্ষকদের চাপে নি¤œআয়ের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নির্দেশনামূলক নোট-গাইড না কিনতে পেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে
গৌরনদী উপজেলা সদরে লেকচার অনুপম ফুলকুঁড়ি দিকদর্শন ও পাঞ্জেরী অন্যান্য প্রকাশনীর বই কিনছে শিক্ষার্থীরা। একসেট বইয়ের মধ্যে একটি বইয়ে পুরো সেটের মূল্য তালিকা দেওয়া থাকে। তাই এসকল বই সেট ছাড়া কেনা সম্ভব নয়। প্রায় বইয়েই অগণিত ভুলে ভরা, যেন দেখার কেউ নেই। এ ছাড়া গ্যালাক্সী, লেকচার, জননী, স্কয়ার, এ্যাডভান্স, অনুপম, আল ফাতাহ, দিগন্ত, ফুলকুড়ি, নবপুথিঘর, জুপিটার, অক্ষরপত্র, পুথিনিলয় অন্যতম। তবে এ সকল বই শুধু গৌরনদীতে নয়, সমগ্র দেশের লাইব্রেরীতে পাওয়া যাচ্ছে বলে লাইব্রেরী মালিকরা জানান।
তারা আরো জানান, বই নিষিদ্ধের ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে। স্থানীয় শিক্ষাবিদরা জানান, এক সময় অতি গোপনে কিছু কিছু জটিল বিষয়ের নোটবই পাওয়া যেত, আর এখন ঢাকঢোল পিটিয়ে সকল বইয়ের নোট ও গাইড বই বিক্রি হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা গাইডবই নির্ভরশীল হয়ে মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে।
Leave a Reply