কিশোরীদের বিদেশ পাচারে সহায়তায় বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কিশোরীদের বিদেশ পাচারে সহায়তায় বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস

কিশোরীদের বিদেশ পাচারে সহায়তায় বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস




এইচ এম হেলাল : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করে দেশকে একধাপ এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়ে হেঁটে চলছেন এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা স্ব”ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে হার্ডলাইনে অবস্থান করছেন। বিপরীতদিকে এক শ্রেনীর অসাধু কর্তারা পকেটে লাখ লাখ টাকা পুরে নিয়ে বর্তমান আওয়ামী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উল্টো রথে হাঁটছেন। ভয়ংকর বিষয় হলো নিরিহ পরিবারের কিশোরী মেয়েকে বিদেশ পাচারে প্রথম ধাপে সহযোগিতা করছে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের কর্তা ব্যক্তিরা।

কিশোরীদের বয়স বাড়িয়ে পাসপোর্ট করানোর অভিযোগ মিলছে। অত:পর এরাই আদম ব্যাপারীদের খপ্পড়ে পড়ে বিদেশে পাচার হচ্ছে। এরচেয়েও ভয়ংকার খবর মিলতে পারে। দুর্নীতির রাহুগ্রাসের ভর করা এ অফিস থেকে দেশকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে কিংবা জঙ্গিমনাভাবাপন্নদের পাসপোর্ট হওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখানকার পাসপোর্ট অফিসে দীর্ঘ অনুসন্ধানে অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি বেড়িয়ে এসেছে।

‘ফরম পূরন করছেন এক পুলিশ সদস্য’

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশালের বিভিন্নস্থান থেকে দৈনিক শতাধিক লোক পাসপোর্ট অফিসে আসেন। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, ব্যাংক ড্রাফট ও পুলিশ ভেরিফেকশন শেষে ফাইল নিয়ে নারী পুরুষ নগরীর নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাসপোর্ট কার্যালয়ে ফাইলটি কনফার্ম করতে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। অফিসের নিচতলায় জমা গ্রহণ করেন মামুন ও মনির। বিস্ময়কর হলেও সত্যি সবার ফাইল এখানে জমা নেয়া হয় না, যতক্ষন পর্যন্ত নির্ধারিত ঘুষের টাকার বিষয়টি নিশ্চিত না হয় ততক্ষন ফাইল নড়ে না।

আবেদনকারীকে এই ত্রুটি সেই ত্রুটি নানা অজুহাত দেখিয়ে ফাইলটি ফেরত দেয়া হয়। ফলে ওই ফাইলটি দ্বিতীয় তলায় স্যারের টেবিল পর্যন্ত যাচ্ছে না। তবে ঘুষ’র টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ফাইলটি চলে যায় স্যারের টেবিলে। সেক্ষেত্রে ফাইলে ত্রুটির আর অজুহাত থাকেনা, ঘুষের টাকা দিলেই নিশ্চিন্তে থাকেন আবেদনকারীরা’

‘পুলিশের সাথে চিহ্নিত দালাল লিটন ওরফে টাক লিটন  ‘

সহকারী পরিচালক কামাল হোসেন’র পালিত দালালদের মাধমে অফিসের অভ্যন্তরে ওপেন সিক্রেট ঘুষ চলতো। এতে অফিসের সকল স্টাফই জড়িত। বর্তমান সময়ে অফিসের অভ্যন্তরে স্টাফদের সঙ্গে ভিন্ন কায়দায় ঘুষ’র লেনদেন চলছে। পালিত দালালদের সঙ্গে ফাইল প্রতি চুক্তি করা হয়। দালালরা ফাইলগুলো আগে সরবরাহ করতো পাসপোর্ট কার্যালয় ও আশপাশ থেকে। এখন যেখান থেকে ব্যাংক ড্রাফট করা হয় সেখান থেকে দালালরা ফাইল সরবরাহ করে সরাসরি অফিস স্টাফের মাধ্যমে চলে যায় স্যারের টেবিলে।

বায়োজিদ নামের এক দালাল সোনালী ব্যাংক থেকে ফাইল সরবরাহ শেষে প্যাকেট করে পাসপোর্ট কার্যালয়ের প্রথমে গেটে আসেন। এরপর হাতে থাকা ফাইলগুলো শাটের পিছনে লুকিয়ে রেখে ফোন দেন অফিস স্টাফকে (আনসার)। বায়োজিদ দালালের ফোন পেয়ে আনসার সদস্য সামনে এগিয়ে ফাইলগুলো নিয়ে নেন। এরপর শামীম নামের পিয়ন দালালদের ফাইলগুলো সরাসরি স্যারের টেবিলে নিয়ে যান। এরকম কয়েক জন পালিত দালাল রয়েছে স্যারের। উল্লেক্ষ বায়োজিদ আগে আসনার পদে কর্মরত ছিলো। এরবাইরে অন্যান্য দালালদের মধ্যে রয়েছে মিলন,হুমায়ুন কবির,মামুন, শফিক। আলমগীর জসিম(পিসি) , হাছান, জিয়া ,(আনসার),মামুন,লিপি(কম্পিউটার অপারেটর)সহ ৭/৮ জন। এদের মধ্যে টাক লিটন ও চুন্নু চিহ্নিত দালাল। তবে বাদ যায় না পুলিশও তারা একমাস অন্তর এসে নিরহ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার,হাজার টাকা।
‘আনসার সদস্য আলমগীর ঘুষের টাকা নিয়ে বাধরুম থেকে বের হচ্ছেন ‘

টাকা দিতে কেউ অনিহা প্রকাশ করলে তার ফরম জমা হয় না । যা বাস্তব চিত্র গতকাল বেলা ১১টার সময় দেখা যায় । পাসপোর্ট অফিসের ভিতরে রয়েছে একটি পুলিশের গাড রুম ,সেখানের চিত্র দেখলে মনে হয় ফরম পুরনের প্রতিযোগিতা চলছে,এর এসব ফরম পুরনের মুল হোতা অসাধু এক পুলিশ সদস্য বশার তিনি নিজেই যেন অফিস পরিচালক ! আর নাসির নামের চিহ্নিত দালাল প্রত্যহ মটরসাইকেল যোগে এসে বীর দর্পে পাসপোর্ট কার্যালয়ে প্রবেশ করে। যেন তিনি এই অফিসের স্টাফ। নাসিরের সঙ্গে বিশেষ করে আবেদন গ্রহণকারী ঘুষখোর মামুনের বেশ দহরম মহরম রয়েছে। অনুসন্ধানী একটি সূত্র বলছে, নাসির নিজেই একটি দালাল চক্র গড়ে তুলেছে। দালালদের কয়েক জনকে রাখা হয় সোনালী ব্যাংকে। সেখান থেকে ওই দালালরা নাসিরের কাছে ফাইলগুলো জমা দেয়। দালাল নাসির সেই ফাইলগুলো আবেদন গ্রহণকারী মামুনের হাতে তুলে দেয়।

‘ফরম পুরন শেষে ,নিতে ব‌্যাস্ত, পুলিশ সদস্য এ এস এই বশার ‘

 

সূত্রের ভাষ্যনুযায়ী ইদানিং নাসিরের সঙ্গে অফিসের এতো সখ্যতা গড়েছে যে ফাইল প্রতি ৫’শ টাকা দিলেই আবেদন গ্রহণকারী সোহেল খুশি। প্রত্যহ বেশ কয়েকটি ফাইল সংগ্রহ করছে। চিহ্নিত দালাল নাসির শুধু বরিশাল পাসপোর্ট অফিসেই দালালী করছে না এরবাইরে বিভিন্ন দপ্তরে অসাধূ কর্তাদের সঙ্গে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তুলে দালালী করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। দালাল নাসির বিভিন্ন স্থানে গিয়ে স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এহেন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ড করে আসছে। নাসির বর্তমানে বরিশাল মেডিকেল কলেজের পিছনে বসবাস করছেন। তার স্ত্রী বরিশাল প্লানেট ওয়ার্ল্ড শিশু পার্কের টিকিট কাউন্টার। কোন কর্মকর্তাকে বশ করার প্রাথমিকভাবেই উপস্থাপন করেন স্যার/ভাই শিশু পার্কে যাওয়া পড়ে, সেখানে টিকিট কাউন্টারে আমার স্ত্রী বসে। সময় করে এক সময় বাসায় আসবেন, এক বেলা খাবার খাবেন। এরকম নানা কায়দায় বিভিন্ন অফিসের কর্তাদের বশ করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে। নগরীর চিহ্নিত দালাল হিসেবে আখ্যা পাওয়া নাসির জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পূক্ত বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি নাশকতার মামলাও রয়েছে। সূত্রের দাবী দেশ বিরোধী নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে চুপিসারে জড়িত রয়েছেন তিনি। দালালী প্রসঙ্গে নাসির জানান, দালালী তো করতে হবে এছাড়া তো অগাধ সম্পদের মালিক হওয়া যাবে না। নাশকতার সঙ্গে জড়িত প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, জামায়াত নয় আমি বিএনপির কর্মী। তবে জামায়াতের কর্মকান্ড ভালো।

বলেন, আমি কোন ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত নই। কিš‘ নাশকতার একটি মামলায় আমাকে পুলিশ জড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য কয়েক দিন পুলিশ আমাকে তাড়াও করেছে। দালালদের মধ্যে আরেকজন যুবক স্কুল ব্যাগে করে বাহির থেকে ফাইলগুলো সংগ্রহ করে পাসর্পোর্ট অফিসে নিয়ে এসে জমা দেন। অনুসন্ধানী একটি সূত্র বলছে, ঘুষের লেনদেনের ক্ষেত্রে স্যারের বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত আবেদন গ্রহণকারী ফারুক। স্যার কামাল হোসেন ও মামুনই নাকি পুরো অফিসে ফাইলের ঘুষের হিসেব নিকেশ ও ভাগবাটায়ারো করে থাকেন। আবেদন গ্রহণকারী ফারুক ঘুষের প্রসঙ্গে বলেন, ভাই আমি স্যারের অধিনস্ত। সুতরাং এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। স্যারের সঙ্গে আলোচনা করেন। জানা যায়, আবেদনকারীর কাছ থেকে কোনো ধরণের টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও ফাইল প্রতি ১৫’শ থেকে ২ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, ফাইল প্রতি দালালদের ১ হাজার ৫০ টাকা দিতে হয়। বাকী টাকা দালালদের জন্য। অপর একটি সূত্র বলছে, কোন কোন দালালের ক্ষেত্রে হাজার পঞ্চাশের কম টাকা নিয়ে ফাইলটি ওকে করে দেয়া হয়। ওদিকে, ঘুষ বানিজ্য বন্ধের পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পাসপোর্টকে আধুনিকায়নে অনলাইনের আওতায় নিয়ে এসে উন্নীতকরন করেন। যার নাম দেয়া হয় ‘মেশিন রেডিবল পাসপোর্ট’। কিš‘ তাতেও সস্তি নেই বরিশাল অঞ্চলের মানুষের। কারণ এখানকার কার্যালয়ে কর্মকর্তরা এক ধরণের সিন্ডিকেট সিস্টেমে ঘুষ বানিজ্যে মাতোয়ারা হয়ে পকেটে পুরে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এখানে যারা আসেন তারা আগে থেকেই জানতে পারেন টাকা ছাড়া নিচ তলা থেকে উপর তলায় ফাইল যায় না। নির্ধারিত টাকা দিলেই ঝামেলামুক্ত। সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের শুনতে হয় না ‘এটা নাই ওটা নাই,ভুল আছে সংশোধন করে আসেন’। আবার কখনো রক্ত চক্ষু গরমও দেখানো হয়। বলা হয়, পাসপোর্ট অফিসে আসছেন নিয়ম কানুন জানেন না;যান। সেবা নয় ধমক আবার কখনো লাঞ্চনা। আর এসবের মূখ্য বিষয় একটাই ওকে(ঠিক) হবে, কমপ্লিট’র জন্য ফাইল উপরে যাবে শর্ত হচ্ছে ‘টাকা চাই’। ফাইল প্রতি ১৫’শ। এর নিচে এক টাকাও কম নয়। ফাইলের টাকা নেয়া হয় বিভিন্ন মাধ্যমে। বিশেষ করে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত আনসার থেকে শুরু করে দায়িত্বরত সকলেই ফাইল প্রতি কৌশলে নির্ধারিত টাকা নেয়। এরপর ভাগবটোয়ারা। কর্তা ব্যক্তিরা যে এহেন ওপেন ঘুষ বানিজ্যের সঙ্গে সম্পূক্ত বিষয়টি সরেজমিনে যে কোন ব্যক্তি স্বল্প সময়ে অবস্থান করলেই কর্নকুহুরে প্রবেশ করবে। এ কেমন ঘুষ বানিজ্য যারাই আসেন চুপিসারে একে অপরের সঙ্গে আলাপচারিতাও করেন। করার কি এটা তো দিতেই হবে। বলছে, এতো ঝক্কি ঝামেলা পেরিয়ে পাসপোর্ট অফিসে এসে দেড় হাজার টাকার জন্য ফাইলটি আটকে যাবে এদিক চিন্তা ভাবনা করেই বিতর্কে না জড়িয়ে অনি”ছকৃতভাবেই ঘুষের টাকা দিতে হয়। যতদূর জানা যায়, দৈনিক কমপক্ষে শতাধিক পাসপোর্ট ফাইল জমা হয়। ফাইল প্রতি দেড় হাজার টাকা করে নেয়া হলে দৈনিক হিসেবের সংখ্যা দাড়ায় দেড় লাখ টাকার অধিক। মাসে কত? অসমর্থিত একাধিক সূত্রের ভাষ্য, ঘুষের টাকার একটি বড় অংশ পেয়ে থাকেন পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন। পার্সপোর্ট অফিসের দ্বিতীয় তলার কক্ষে বসে কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। ঘুষখোর কামাল হোসেনই স্টাফদের মাঝে টাকা বন্টন করেন। স্যারের ভাষ্য, তিনি ঘুষের কোন কিছুর আলামত পাননা। শীর্ষ পদে বহাল স্যার কামাল হোসেন দম্ভোক্তির সুরে বলছেন, এখানে কোন অনিয়ম হয় না,ঘুষ বানিজ্যের প্রশ্ন আসে না। সূত্রগুলো বলছে, পার্সপোর্ট অফিসে ঘুষের টাকার আরেকটি অংশ পান আরেক কর্তা ব্যক্তি বায়জীদ। তিনি পাসপোর্ট অফিসে ঘুষখোর বায়জীদ নামে পরিচিত। সূত্র নিশ্চিত করেছে ঘুষের টাকার ক্যাশিয়ারই হলেন বায়জিদ। তিনিও উপর তলা অর্থাৎ দ্বিতীয় তলায় বসেন। পাসপোর্ট অফিসের কর্তা বায়জীদের ঘুষ বানিজ্যে অতিষ্ঠ বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নারী পুরুষ। এছাড়া বায়জীদের বিরুদ্ধে রয়েছে একান্তর অভিযোগ। পার্সপোর্ট কার্যালয়ে কানপাতলেই শোনা যায় স্যার কামাল হোসেন ও শহিদের ঘুষ বানিজ্যে। এটা সবাই জানে শুধু মানুষ নয় ভবনের ইট,পাথর ,বালু কনাও জানে স্যার আর শহিদ যে কত বড় ধান্ধাবাজ কর্তা। এদিকে, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশকে একধাপ এগিয়ে নিতে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকারে দিবারাত্রি পরিশ্রম করে চলেছেন। দেশ ও মানুষের কল্যানে নিরলস পরিশ্রমে অনিয়ম দুর্নীতর বিষ বৃক্ষ নিধনে সদা জাগ্রত। দেশের উন্নয়নে মেঘা মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন,কাজ করছেন। যিনি চ্যাম্পিয়ানস অব আর্থ পুরস্কারে ভূষিত হয়ে বিশ্ব দরবারে সুনাম কুড়িয়েছেন। আর সেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে বরিশাল পার্সপোর্ট অফিসে ঘুষ বানিজ্যের বিষয়টি রীতিমত লজ্জাকর। এবং পার্সপোর্ট অফিসে দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিরা যে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও গণতন্ত্রের বিপরীত ভূমিকায় অবস্থান নিয়েছে পুরোপুরি স্পষ্ট। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ,ঝালকাঠির নলছিটিসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের ২২/২৬ বছর বয়স দেখিয়ে পাসপোর্ট’র সংশ্লিস্ট কাগজপত্র ভেরিফিকেশন করা হয়। এসব কন্যাদের পাচারকারীদের সংঘবদ্ধ চক্র দেশের বাইরে ভালো বেতনে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে পাচার করে আসছে। দেশের বাইরে এই অল্প বয়সী কন্যাদের নাকি চাহিদাও বেশি। এ কারণে চক্রটি বিশেষ করে বাহরাইন,ওমানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে পাচার করে দেয়। দক্ষিণাঞ্চলে নারী পাচারকারী চক্রের হোতা কাওসার চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। তার বাড়ি ফেনী। বরিশালের বাকেরগঞ্জের আওলিয়াপুর তিনি বাড়ি করেছেন। মাঝে মাঝে বাকেরগঞ্জে চুপিসারে এসে আদম পাচারের কাজ সম্পন্ন করেই আবার লাপাত্তা। এছাড়া পাচারকারী চক্রের আরেক সদস্য হলো বাকেরগঞ্জের গার“গুরিয়া এলাকার বাসিন্দা রাসেল(২৬)। পাচারকারী রাসেলকে গ্রেপ্তারপূর্বক রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসা করলেও পাসপোর্টে কিশোরীদের বয়স বাড়িয়ে কিভাবে বিদেশে পাচারের বিষয়টি পরিস্কার হবে। সংঘবদ্ধ নেটওয়ার্কিয়ের মাধ্যমে চক্রটি নারী পাচারে লিপ্ত রয়েছে। এসব কিশোরীদের বয়স বাড়িয়ে পাসপোর্ট করানো হচ্ছে অহরহ। সচেতন মহলের ভাষ্য,বরিশাল বিভাগীয় পার্সপোর্ট অফিসের ফাইলগুলো অনুসন্ধান করলেই বেড়িয়ে আসবে থলের বিরাল। এ প্রসঙ্গে সচেতন মহলের ভাষ্য, দুর্নীতি দমন কমিশন ফাইলগুলো তদন্ত করলেই বরিশাল পাসপোর্ট অফিসের নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। অপরদিকে পার্সপোর্ট ফরম বিক্রি বিনামূল্যে দেয়ার কথা থাকলেও তা নিয়েও চলছে ব্যবসা চলছে। পার্সপোর্ট অফিসের সামনে নিউ আইডিয়াল ফটোষ্টেট নামক প্রতিষ্ঠানে পার্সপোর্ট ফরম বিক্রি হচ্ছে। এ দোকানে যতসব দালাল চক্রের আড্ডা। কারো কাছ থেকে ১০টাকা কারো কাছ থেকে ২০ টাকায় ফরম বিক্রি করা হয়। একইসঙ্গে ওই দোকানে বসেই দালাল চক্র ফরম পূরন করে দিলে তাকে দিতে হয় ১’শ টাকা। এখানে থাকা দালালরা কন্ট্রাক করে পার্সপোর্ট অফিসের স্টাফদের সঙ্গে। কত টাকা হলে ঝামেলে ছাড়া কাজ সম্পন্ন হবে প্রথমে সেবা নিতে আসাদের সঙ্গে চুক্তি করে। এরপর পাসপোর্ট অফিসের স্টাফদের ফাইলগুলো নিশ্চিত করে কৌশলে পাঠিয়ে দেয়। চুক্তি করা হয় দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে ফাইল দ্র“ত সম্পন্ন করে দেয়া যাবে। এ চুক্তির ভিত্তিতেও ঘুষ বানিজ্যে চলে। অতিসম্প্রতি দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মো: সেলিমুজ্জামান নামের এক মুক্তিযোদ্ধা পাসপার্ট অফিসে এসে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,এজন্য কি দেশ স্বাধীন করেছিলাম। আগে শোষন করতো পশ্চিম পাকিস্তানীরা আর এখন শোষনের যাতাকলে পিষ্ট করছে স্বাধীন বাংলার দুর্নীতিবাজরা। নগরীর বগুড়া রোডের বাসিন্দা মো: সেলিমুজ্জামান বলেন, পার্সপোর্ট অনলাইন করেও তো দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারছে না। বলেন, আমার পার্সপোর্টটা দু’বার ভুল করে। সম্প্রতি পাসপোর্টে ফোন নাম্বার সংশোধন করতে নিয়মানুযায়ী ফরম পূরন করা হলেও সংশোধনীতে পাসপোটে সেই একই ভুল রয়ে গেছে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেলিমুজ্জামান পাসপোর্ট অফিসে আসেন। শরনাপন্ন হন কর্তা মনিরের কক্ষে।মনিরকে বিষয়টি জানানো হলে ভুল স্বীকার করলেও তিনি বলেন, পাসপোর্টে ফোন নাম্বারে ভুল হলে কোন সমস্যা নেই। একজন দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তির মুখে এমন ভাষ্যতে কিসের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। এ যেন আলোর বিপরীতে অসভ্যতার অন্ধকারের গলি। প্রসঙ্গত: মো: সেলিমুজ্জামানের পার্সপোর্টে টেলিফোন নাম্বার ০৪৩১২১৭৬৮। এ নাম্বারটি ভুল। এটা সংশোধনের জন্য তিনি ফরম কিনে পূরন করে জমা দিলেও ভুল ভুলই রয়ে গেছে। অফিসে যোগাযোগ করলে ঘুষখোর মনির ভাষ্য, ফোন নাম্বারে ভুলের জন্য কোন ধরণের সমস্যায় পড়তে হবে না। আন্তরজাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সং¯’ার (আইসিএও) নীতিমালা অনুযায়ী যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট-এমআরপি) ও ভিসা চালুর বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। আইসিএও-এর শর্ত অনুসারে বাংলাদেশ সরকার যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) চালু করেছে। যেসব হাতে লেখা পাসপোর্ট এখনো চালু আছে, তা নবায়ন করা যাবে। এপ্রিলে চালু করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও যারা আগের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তাঁদের পুরোনো পাসপোর্টেই চলবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। সবমিলিয়ে দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে সর্বত্র এসব ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্তি সমাজ বির্নিমাণের দাবি উঠেছে। দুর্নীতির মূলৎপাটন করতে বরিশালের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখার দাবী তুলেছেন অভিজ্ঞমহল। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা যারা স্ব”ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন আসছেন তাদেরকে বরিশাল পাসপোর্ট অফিসের অনিয়মের ফিরিস্তির রচনার বিষয়েও আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ। এক্ষেত্রে সচেতন মহলে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্তের দাবী উঠেছে। দুদক ফাইলগুলো অনুস্ন্ধান করলে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতির আদ্যাপানস্তর স্পষ্ট হয়ে যাবে। বেরিয়ে আসবে কত কিশোরীদের বয়স বাড়িয়ে পাসপোর্ট করানো হয়েছে। আবার এদেরকে সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন দেশে পাচার করে দিচ্ছে। বেরিয়ে আসতে পারে হত্যা, নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী ও জঙ্গিদের পাসপোর্ট করানোর বিষয়টি। এরফলে সরকারের উ”চ পর্যায়ের নির্দেশে ফাইলগুলো তলব করে অনুসন্ধানে দুর্নীতির স্ববিস্তর চিত্র ভেসে উঠবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD