বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্র আহসান আবির যখন পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তখন তার বন্ধুরা সেলফি তোলায় ব্যস্ত ছিলেন। সেই সেলফিতেই আবিরের ডুবে যাওয়ার করুণ দৃশ্য দেখা গেছে। গত সোমবার (৯ মার্চ) বিকেলে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুঠিবাড়ী সংলগ্ন পদ্মা নদীতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। আবির যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদালপুর গ্রামে।
নিহত আবিরের বন্ধু পলাশ বলেন, ‘আমরা সবাই রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি ঘুরে পদ্মার চরে যাই। এরপর পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমেছিলাম। সবাই যখন পানিতে খেলছিলাম, তখনই আবির হঠাৎ পানিতে ডুবে যায়। কিছুক্ষণ পর বালুর চরে গেলে আবিরের খোঁজ পাওয়া যায়। তখন পানিতে খেলা করার সময় যে সেলফি তোলা হয় সেটি দেখে বোঝা যায় আমরা যখন সেলফি তুলছিলাম বন্ধু আবির তখন ডুবে যাচ্ছিল।’ তারা সবাই সেলফিতে এতই মগ্ন ছিলেন যে পানিতে হাবুডুবু খাওয়া বন্ধুর মাথা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে দেখা গেলেও তা বুঝতে পারেননি।
এ ব্যাপারে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক তবিবুর রহমান জানান, সোমবার সকালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ১৩১ জন শিক্ষার্থী ও ৯ জন শিক্ষক শিক্ষা সফরে শিলাইদহে রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের একা একা কোথাও না যেতে এবং নদীতে না যাওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী নিষেধ অমান্য করে পদ্মা নদীতে চলে যায়। দুপুর দেড়টার দিকে ১৯ জন শিক্ষার্থী গোসল করতে নদীতে নেমেছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবির পানিতে ডুবে যায়। আবিরকে খুঁজে না পেয়ে তার বন্ধুরা বিষয়টি শিক্ষকদের জানায়। খবর পেয়ে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তারা জাল টেনে এবং ডুব দিয়ে আবিরের খোঁজ করে। কিন্তু তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে খুলনা থেকে উদ্ধারকারী ডুবুরি দলের সদস্যরা এলে তাদের সহযোগিতায় রাত ৯টার দিকে আবিরের লাশ পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার সকালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে আবিরের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply