সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পরপরই ভোটারদের দোয়ারে দোয়ারে ছুটতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। বিকালের মধ্যে প্রার্থীদের নিজ নিজ প্রতীকসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে রাজপথ, অলি-গলি। আর এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে বরিশালে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে নিজের কার্যালয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটানিং কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ মুজিবুর রহমান। সকাল থেকেই নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচন কার্যালয়ে হাজির হন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর সেই প্রতীকের স্লোগান তুলে মিছিল নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফেরেন তারা। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ।
নির্বাচন অফিস প্রাঙ্গণসহ পুরো নগরী পরিণত হয় স্লোগান-উৎসবের নগরীতে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর ছাপাখানাগুলো বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার ছাপাতে শুরু করে। কাউন্সিলরদের অনেকে বিভিন্ন প্রতীকে একাধিক ডিজাইন আগে তৈরি করে রেখেছিলেন। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে বলে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা তাদের প্রতীক সম্পর্কে আগেভাগেই জানতেন। তাই কেউ কেউ ইতিমধ্যে ছাপার কাজ সেরে রেখেছিলেন। ফলে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায় নগর। গতকাল সকাল নয়টা থেকে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। একেকজনের প্রতীক ঘোষণা করা হলে ওই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান তুলে এলাকার দিকে ছোটেন। জানা গেছে, কোনো প্রতীকের একাধিক দাবিদারের বেলায় লটারি করে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত প্রতীক যা-ই হোক না কেন, তা নিয়েই এখন ভোটারদের দুয়ারে কড়া নাড়ছেন প্রার্থীরা। রিটানিং কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র পদে মোট ছয়জন প্রাার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক অঅবদুল্লাহ ‘নৌকা’, বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার ‘ধানের শীষ’, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস ‘লাঙ্গল’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব পেয়েছেন তাদের দলীয় প্রতীক ‘হাতপাখা’। এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির একে আজাদ কাস্তে ও বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী পেয়েছেন তাদের দলীয় প্রতীক মই। গত ১৩ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেদিন থেকেই প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা নেওয়ার এই কার্যক্রম চলে ২৮ জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে মেয়র পদে আটজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন। গত ১ ও ২ জুলাই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়। এর মধ্যে মেয়র পদের প্রার্থীর সংখ্যা ছয়জন ।
প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর সব প্রার্থী লিফলেট নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছেন। দুপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগরীর কয়েকটি এলাকায় ভোটারদের মাঝে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের হাতে নৌকা প্রতীকের লিফলেট তুলে দিয়ে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করেন।বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই দলীয় কার্যালয়ে যান। পরে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের কাছে গিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। বিতরণ করেন লিফলেট। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে ভোট নেয়া হবে। ২৮ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চলাতে পারবেন প্রার্থীরা।
Leave a Reply