শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:ঝালকাঠির বাউকাঠি বিন্দুবাসীনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ম বর্হিভূতভাবে সাময়িক বরখস্ত করে তার রুমে তালা মেরে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্ধের সূত্র ধরে এ ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র স্বীকার করেছে।
বিদ্যালয়ের একটি সুত্র জানিয়েছে, বর্তমান ও সাবেক ম্যনেজিং কমিটির দ্বন্ধের বলি হচ্ছেন প্রধান শিক্ষক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির একাংশ বলছে ভিন্ন কথা।
তারা বলছে প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে আর্থিক হিসাব দিচ্ছেনা। তাই ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে সাময়িক বসখস্ত করা হয়েছে।
এব্যপারে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন বলেন, পূর্বের কমিটির আমলের কোন আর্থিক হিসেবে বর্তমান কমিটি নিতে পারে না। তার বিরুদ্ধে আনা আর্থিক হিসাব পূর্বের কমিটি অনুমোধন দিয়েছে। তাই যে সুত্র ধারে তাকে সাময়িক বরখস্ত করেছে তার এখাতিয়ার তাদের নেই। বর্তমান কমিটি যে কয়টি সভা করেছে তাতে তিনিসহ ৯ সদস্যের ৪জনই কোন নোটিশ পাইনি। প্রথম নোটিশে ৭ দিন সময় দেয়া হলেও ৪ দিনের মাথায় দ্বিতীয় নোটিশ দেয়া হয়। দ্বিতীয় নেটিশে ৭ দিন সময় দেয়া হলেও ৩ দিনের মাথায় তাকে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায় ১৮ অক্টোবর সাময়িক বরখস্ত করা হয়। ১৮ তারিখই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের কক্ষটি তালা মেরে দেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি নিয়ম অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক। সম্পাদকের স্বাক্ষর ছাড়া কার্য বিবরনী প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করেনা। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ ও রেজুলেশন বহি তার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানান তিনি। সভাপতি শুক্রবার বন্ধের দিন এসে মিটিং করে বিদ্যালয় খোলা তারিখ মিটিংয়ের সময় দেখানো হয়। বেসরকারী শিক্ষকদের শাস্তি বিধান ১৯৬১ সালের ৩৩ অধ্যাদেশের ১৪(১) ধারা পালন করা হয়নি। তাই তিনি তাকে অবৈধ ও বিধি বর্হিভূতভাবে গৃহিত সাময়িক বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানান। এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে জানানো হলে তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তালা খুলে দেয়ার নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত রুমটি তালাবদ্ধ রয়েছে। বিদ্যলয়ের ১ একর সম্পত্তি সভাপতি তার নিজের প্রতিষ্ঠিত কারিগরি কলেজের নামে হস্তান্তর করে এবং ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ৫ কক্ষ বিশিষ্ট নতুন ভবনটি শুরু থেকেই কলেজের একাডেমী এবং প্রশাসনিক কাজে ব্যাবহার করে আসছে। মুলত এনিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয় বলে সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন।
অপর দিকে বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক সুকুমার চন্দ্র রুদ্র, সহকারী শিক্ষক পুস্প বিশ্বাস, বিদ্যুসাহী সদস্য মো. হারুনুর রশিদ মৃধা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে আর্থিক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারী মনোভাব সহ নানা অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখস্ত করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেনা। তাই ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা সভায় রেজুলেশন করে সাময়িক বরখস্ত করেছে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহরাফ হোসেন বলেন, ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের টাকা, জেলা পরিষদের পুকুর লিজ, গাছ লিজের টাকা, জেলা পরিষদের মাঠ বরাদ্ধের টাকা ও ব্যাংকের ২টি একান্ডট থেকে টাকা উঠিয়ে আত্মসাতসহবেশ কয়েকটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কমিটি সভা করে তাকে সাময়িক বহিস্কার করেছে।
এ ব্যপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাহার মিয়া বলেন, আমি তালা খুলে দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবকে তালার চাবি বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু রবিবার তিনি চাবি বুঝে নিবেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply