বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
প্রিন্স তালুকদার, বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টার দূর্নিতীর অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীন অনিয়ম, সীমাহীন লুটপাট, দূর্নিতী যেন দেখার কেউ নেই। একের পর এক ঘটছে ভয়াবহ লুটপাট, জালিয়াতি, দূর্নিতী। আর এই দূর্নিতীর মহোৎসবের একমাত্র মহানায়ক বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আমদানীকৃত ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল চারা রশিদ ছাড়া বিক্রী করে, সরকারী কোষাগারে টাকা জমা না দিয়ে অগনিত সরকারী রাজস্ব আতœসাৎ করার লোমহর্ষক বর্ননা ছিল ১ম পর্বে।
আজ তার ভয়াবহ লুটপাট, জালিয়াতি, দূর্নিতীর ফিরিস্তির ২য় পর্ব। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের বড় বড় গাছের গোড়ায় তিনি অনেক আগে থেকে ঔষধ দিয়ে রাখেন এবং যার ফলে গাছ মারা যায় অথবা পচন ধরে তারপর গাছ কেটে বাহিরে বিক্রয় করেন এবং অনেক সময় সাংবাদিকদের কাছে ধরা খেয়ে তাদেরকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে পাড় পেয়ে যায়। সেন্টারের সামনের স্ব-মিল এবং স্থানীয় লোকদের কাছে খোজ নিলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। এবছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে, প্রায় ২০০০ ঘনফুটের ৫ টি রেন্ট্রি ও করাই গাছ বিক্রির সময় সাংবাদিকদের কাছে ধরা পড়লে, মসজিদে দান করা হয়েছে বলে পার পেয়ে যায়। চারা ব্যাগে বসানো পটিং মিক্সার তৈরীর জন্য বাহির থেকে মাটি ক্রয় করার কথা থাকলেও তিনি তা না করে সেন্টারের ভিতরের মাটি দিয়ে পটিং মিক্সার তৈরী করে সেন্টারের জমি নিচু করে ফেলেছেন।
অথচ বাহির থেকে মাটি ক্রয় করা হয়েছে মর্মে বিল ভাউচার করে লক্ষ টাকা আত্বসাৎ করে চলছেন। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারে উৎপাদিত নারিকেল রাজস্ব বেডে না বসিয়ে বিশেষ নারিকেলের বেডে বসান এবং বিক্রি করে টাকা আত্বসাৎ করেন। সেন্টারে উৎপাদিত বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে তা বাহির থেকে ক্রয় দেখিয়ে অর্থ আত্বসাৎ করে চলছেন। উপজেলার কৃষকদের যে সকল প্রদর্শনী ফ্রিতে দেয়া হয় তার সাথে রাসায়নিক সার, ঔষধ, কিটনাশক এবং স্প্রে মেশিন দেয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবে দেয়া হয় না। লক্ষ লক্ষ টাকার রাসায়নিক সার, ঔষধ, কিটনাশক ক্রয় দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্বসাৎ করেন বাস্তবে তা কেনাই হয় না। প্রতিমাসে চার লক্ষাধিক টাকার শ্রমিক বিল করেন কিšুÍ বাস্তবে মৌমুমী বা বাহিরের মাত্র ০৪ জন শ্রমিক রুবেল, শাহাদাৎ, সরওয়ার, এবং সরো কে দিয়ে এবং বাকি সরকারী ফার্মলেবার দিয়ে কাজ করিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্বসাৎ করে চলছেন। ইতিপূর্বে সরকারী কর্মচারী দিয়ে অফিসের টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি পরিস্কার করানোর অপরাধে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হলেও সে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে সবকিছু থেকে রেহাই পেয়ে যায়। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের ডরমিটরীর ভিআইপি রুমে যখন ট্রেনিং বন্ধ থাকে তখন তার বন্ধুরা প্রায়ই কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের খারাপ মেয়েদের নিয়ে বিলাশবহুল ভাবে মদ খেয়ে আমোদ ফুর্তি করে এবং তিনি তাদের সমস্থ প্রটোকল দেয়ার জন্য তার অবৈধ অর্থ এবং অফিসের গাড়ি ব্যবহার করেন। বিগত ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ০৮ বছর তিনি এখানে কর্মরত আছেন।
একজন বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা একই প্রতিষ্ঠানে টানা ৩ বছরের বেশি কর্মরত থাকার বিধান না থাকলেও তিনি বিভিন্ন মহলে ঘুষ দিয়ে তার বদলী বাতিল করেছেন। স্বপন কুমার হালদারের মতো একজন ভয়ানক দূর্নিতীবাজ কর্মকর্তা যদি একই প্রতিষ্ঠানে একটানা ৮ বছর কর্মরত থাকায় তার দূর্নীতি ভয়াবহ রূপ নিতে চলছে। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কনসালটেন্ট এম. এনামুল হক প্রতিবার মোটা অংকের বিনিময়ে তার বদলী বাতিলের জন্য সুপারিশ করেন। সে অত্র হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রচুর অর্থ আত্ত্বসাৎ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নিজ এবং স্ত্রীর নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বর্তমানে বরিশাল নগরীর অমৃতলাল দে কলেজের পিছনে তার বহুতল ভবনের কাজ চলমান। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে অন্যত্র বদলী করার হুমকি দেন।
ইতিপূর্বে অনেক কর্মচারীকে তার কথার জবাব দেয়ায় অনত্র বদলী করেছেন যার ফলে উক্ত সেন্টার এখন লেবারশুন্য হওয়ার পথে। যারা আছে তারাও তার অত্যাচারে অনত্র বদলীর চিন্তা করছে। তার এসব কর্মকান্ড সবাই দেখেও না দেখার ভান করে কিন্তু এসব এখনই প্রতিহত করা না হলে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব হারাবে তথা দেশের ব্যপক ক্ষতি সাধন হবে। এসকল অনিয়ম, লুটপাট, দূর্নিতী সম্পর্কে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার বলেন, মৌসুমী বা বাহিরের শ্রমিক যখন যে কতজন প্রয়োজন, সেকয়জন দ্বারাই কাজ করাই।
Leave a Reply