বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
মো. সুজন মোল্লা,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি॥ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ স্মারকাদেশে বানারীপাড়ার সৈয়দ বজলুল হক কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের হুমকী দেয়ার অভিযোগে গভর্নিং বডির সভাপতি এ্যাড মাওলাদ হোসেন সানাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার বানারীপাড়া সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে কলেজ অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুল মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক তানিয়া আক্তার মামলাটির আদেশ দানে পরবর্তী দিন ধার্য্যের নির্দেশ দেন।
মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য সাবেক হুইপ সৈয়দ শহীদুল হক জামাল, বিদ্যেৎসাহী সদস্য তরুন কুমার সরকার,খলিলুর রহমান, এ্যাড আসাদুজ্জামান ফিরোজ, অভিভাবক সদস্য এমএ খালেক, এবিএম হারুন অর রশিদ ও আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য জাকির হোসেন, খোকন রায়, শারসিন সুলতানা, সদস্য এ্যাড এসএম ইকবাল, হিতৈষী সদস্য রেজাউল কবির মুকুল, কো-অপ্ট সদস্য ডাঃ আবুল কালাম আজাদ ও ইসলামি শিক্ষা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ওবায়দুল হক। এছাড়াও রূপালী ব্যাংক বানারীপাড়া শাখার ব্যবস্থাপক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলেজ পরিদর্শক, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বরিশাল জেলা প্রশাসক, বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী উপজেলার কচুয়া এলাকার কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৬ এপ্রিল নিয়োগ নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল ও একই দিন কলেজ গভর্নিং বডির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং ২৪ এপ্রিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের এক স্মারকাদেশে কলেজ অধ্যক্ষ পদে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। ৩০ এপ্রিল নিয়োপত্র মোতাবেক কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুল অধ্যক্ষ পদে যোগদান করে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চলতি বছর ১১ মার্চ স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহে আলম এক পত্রের মাধ্যমে গভর্নিং বডির সভাপতি হিসাবে শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফারুককে মনোনয়নের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে ( ডিও লেটার) পত্র প্রেরণ করেন।
৩০ এপ্রিল পত্র পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক এক স্মারকাদেশে এ্যাড মাওলাদ হোসেন সানার নাম পরিবর্তন করে তদস্থলে সভাপতি হিসাবে গোলাম ফারুককে গভর্নিং বডির আগামী ২১ ডিসেম্বরের মেয়াদকাল পর্যন্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। এঘটনায় ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এ্যাড মাওলাদ হোসেন সানা হাই কোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন। উচ্চাদালত কলেজ পরিদর্শকের আদেশের কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। উচ্চাদালতের আদেশ পেয়ে কলেজ পরিদর্শক গভর্নিং বডির সভাপতি পদে এ্যাড মাওলাদ হোসেনকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল রাখেন।
এ সকল বিষয়ে এ্যাড মাওলাদ হোসেন কলেজ অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুলের উপর ক্ষিপ্ত হন।
তার ধারনা অধ্যক্ষ সংসদ সদস্য শাহে আলমকে বাধ্য করে তার নামের স্থলে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক মনোনীত ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদন করিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ ঢাকা যেতে সভাপতিকে চিঠি দেন এবং ওই চিঠিতে সহকারি অধ্যাপক ওবায়দুল হককে অর্থ লেনদেন ছাড়া সকল কাজের দায়িত্ব পালনের অনুমতি দেন।কিন্তু অধ্যক্ষ ছুটিতে থাকাকালিন সময় ৭ সেপ্টেম্বর সভাপতি এ্যাড মাওলাদ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে নতুন রেজুলেশন বই সৃষ্টি করে কাজী মিজানুল ইসলামকে তার স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার হুমকী দেন। একই সাথে ৭ সেপ্টেম্বর এক পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলামকে জানিয়ে দেন।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মামলাটি দায়ের করলে বিচারক ওই নির্দেশ দেন। এদিকে বাইশারী সৈয়দ বজলুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুল হককে কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক পদ থেকে অপসারন ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কলেজ অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিক্ষক পরিষদের জরুরী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ওবায়দুল হককে শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক পদ থেকে অপসারনের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়।
Leave a Reply