বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতে নেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান, গোডাউনে ভরপুর ! Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতে নেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান, গোডাউনে ভরপুর !

বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতে নেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান, গোডাউনে ভরপুর !




নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালে বৃহৎকার শিল্পনগরী থাকলেও সেখানে কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নেই। আছে শিল্প উদ্যোক্তাদের বিশাল বিশাল গোডাউন। নামকায়েস্তে ৪ থেকে ৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকলে কখনও খোলা কখনও বন্ধ দেখা যায়। মূলত সোনারগাও টেক্সটাইল মিল, বেঙ্গল বিস্কুট, মোহাম্মদী ইলেকট্রিক প্রজেক্ট ও ফরচুর নামক একটি জুতো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এই শিল্পনগরীর যৌবন ধরে রেখেছে। কিন্তু শিল্পনগরীর প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম অভিযোগ।অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে- যাদের নামে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই শিল্প ঘরনার লোক নয়। বরং প্লট বরাদ্দ নিয়ে সেখানে আবাসিক ভবন তৈরি করে ভাড়া আদায় করেছেন। আবার অনেককে বরাদ্দ দেওয়া প্লট ব্যাংক মর্গেজ রেখে উত্তেলিত ঋণঅর্থ অন্য খাতে ব্যয় করছেন।

একাধিক সূত্র বলছে- প্রশাসনিক তেমন জবাদিদহিতা না থাকার কারণে এই শিল্পনগরীর তেমন কোন জৌলুস নেই। তদ্রুপ নেই নিরাপত্তা। কারও কারও অভিমত শিল্পনগরীটি মাদকের অভায়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী অভিন্ন দাবি করে বলেন- অনেক সময় রাতের বেলা ট্রাকভর্তি মাদকের চালান খালাস করার চিত্র দেখা গেছে।ওইসব গোডাউনে রেখে পরবর্তীতে বিভিন্ন স্পটে সরবরাহ করা হয়।

বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে বিশালাকার এই শিল্পনগরী দীর্ঘ ৫৯ বছরেও পূর্ণতা লাভ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে কারও কারও অভিমত এই অঞ্চলে শিল্প উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে না পারায় শিল্পনগরীর এমন দশায় পরিনত হয়েছে আজ। অথচ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জন্য এই অঞ্চল এখন সম্ভবনাময় জনপদ হিসেবে হাতছানি দিলেও অব্যবস্থপনায় জরাজীর্ণ হয়ে অপরিকল্পিত ভাবে গোডাউনের ছড়াছড়ির ফলে বাস্তবায়নে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে।বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারিত করার সুযোগ সৃষ্টি এবং পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও দূরত্ব কমে এসেছে।

এতোকিছুর পরেও শিল্প উদ্যোক্তারা এই শিল্পনগরীতে কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়। তবে আবাসিক ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া বা গোডাউন নির্মাণে তাদের বেশিমাত্রায় উৎসহ লক্ষ্যণীয়। বিসিক শিল্পনগরীতে গিয়ে চোখ খুললে এক প্রান্ত থেকে ওপর পান্তের সর্বত্রই ব্যক্তি বিশেষের বিশালাকার গোউাউন গড়ে উঠেছে।

বিসিক অফিস বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ১৯৬০-৬১ অর্থবছরে প্রকল্পের ভিত্তিতে বরিশাল নগরীর লাকুটিয়া সড়কের পাশে ১৩০ দশমিক ৬১ একর জমিতে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। ১৯৮৯ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়। বিপুল অংকের অর্থ ব্যয় করে সেখানে ৪৭০টি প্লট নির্মাণ করা হয়।

এমনকি জমির পরিমাণ,অবস্থান ও ধরনভেদে প্লটগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। ৩৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ আয়তনের ‘এ’ গ্রেডের প্লটের এককালীন দাম ধরা হয় ১১ লাখ টাকা। এছাড়া ‘বি’ গ্রেডের প্লটের দাম ৬ লাখ টাকা, ‘সি’ গ্রেডের প্লটের দাম ৪ লাখ ও ‘এফ’ গ্রেডের প্লটের দাম ধরা হয় ২ লাখ টাকা। তবে প্লটের দাম একবারে দিতে না পারলে ১০ শতাংশ বেশি দিয়ে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়।

মূলত এই সুবিধাটি নিয়েই শিল্পপ্রতিষ্ঠান মালিক নন এমন ব্যক্তি বিশেষ বিসিকে প্লট আবাসিক ভবনও নির্মাণ করেছেন। পাশাপাশি কেউ কেউ গোডাউন ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন।

অবশ্য গোডাউন নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি একাধিক প্লট মালিকও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাদের যুক্তি হচ্ছে- সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার কোনও উদ্যোগ কখনও নেয়নি। এমনকি রাস্তাঘাট এবং আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা অপ্রতুল। ষাটের দশকে নির্মিত সড়কগুলোর বেশিরভাগই এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

তাছাড়া পানি সরবরাহ ব্যবস্থাও চাহিদার তুলনায় খুবই কম। যে কারণে অনেক উদ্যোক্তা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও বন্ধ রেখে ভর্তুকি দিচ্ছেন। কেউ কেউ এই ভর্তুতি কমিয়ে আনতে পরবর্তীতে গোডাউন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

এমনকি গোডাউন ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি বিসিক শিল্প সমিতির সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান অহিদও অস্বীকার করেছেন না। তবে তিনি এই কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করেছেন।

এই শিল্প উদ্যোক্তা বলছেন- উদ্যোক্তার অভাব ও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের অনমনীয়তায় অনেকের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া বিসিকের পরিবেশ বিভিন্ন কারণে শিল্প চালানোর জন্য অনুপোযোগী হয়ে উঠেছে। এইসব কারণে বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতে নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না। ফলে বিগত সময়ে যারা প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন তারা ভবন নির্মাণ করে এখন গোডাউন হিসেবে ভবন ভাড়া দিচ্ছেন।

তবে বিসিক বরিশাল অফিসের কর্মকর্তা খায়রুল বাশার বলছেন- বিসিকের ৪৭০টি প্লটের ১৭৩টি সচল রয়েছে। কিন্তু অনেকে প্লট বরাদ্দ নিয়ে সেখানে ভবন করে গোডাউন ভাড়া দিয়েছেন। এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যদি তারা দ্রুত গোডাউন ভাড়া বন্ধ না করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বরিশাল বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান জানান মো. জালিশ মাহামুদ জানিয়েছেন- শিল্পনগরীর উন্নয়নে সরকার সাম্প্রতিকালে ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকায় নিচু অংশে থাকা ১২টি প্লটে মাটি ভরাট ও ১ কোটি ২৭ লাখ টাকায় প্রধান গেটসহ ৫০০ মিটার দেওয়ায় নির্মাণ কাজের টেণ্ডারও করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিসিকের অভ্যন্তরে সড়কগুলোসহ সার্বিক উন্নয়নে প্রস্তুতি রয়েছে।

পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধাসহ শিল্প ইউনিট স্থাপন, উৎপাদন, বিপনের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামীতে উদ্যোক্তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD