বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টাইন করা হবে এমন কথা শুনেই বাসায় তালা দিয়ে পালিয়েছেন সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া লন্ডন প্রবাসী নারীর স্বজনরা।
রোববার (২২ মার্চ) বিকেলে একজন ম্যাজিস্ট্রেট সহকারে পুলিশ নগরীর শামীমাবাদ এলাকায় ওই নারীর বাসায় গেলে সেখানে দরজায় তালাবন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, বিকেলে পুলিশ নিয়ে আমাদের একজন ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর শামীমাবাদে ওই নারীর বাসায় গিয়েছিলেন। তবে বাসায় গিয়ে তারা কাউকে পাননি। দরজা তালাবদ্ধ ছিল। তবে তার একজন স্বজনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে সবাইকে বাসায় আসতে বলা হয়েছে। আমরা পরে আবার গিয়ে খোঁজ নেবো। নগরীর কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সৌমেন মৈত্র বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পুলিশের একটি দল ওই বাসায় গিয়েছিলো। তবে বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি।
শামীমাবাদ এলাকার অবস্থান সিলেট সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ বলেন, মারা যাওয়া নারীর মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরের পাটলি গ্রামে। তিনি শামীমাবাদের হলিভিউ আবাসিক এলাকার ছয়ফুল ইসলাম কমপ্লেক্সে ভাড়া থাকতেন। স্বামীর সাথে দেশে এসেছেন তিনি। তাদের সন্তানরা যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। এই বাসায় তাদের নাতি সম্পর্কিত আরেকজন স্বজন থাকেন। তবে সদ্য যুক্তরাজ্য থেকে ফেরায় প্রতিবেশী কারো সাথে তাদের তেমন কোনো সখ্যতা ছিলো না। দেশে আসার পর তিনি জগন্নাথপুরে গ্রামের বাড়িতেও কিছুদিন ছিলেন বলে শুনেছি।
প্রবাসী এই নারীর মৃত্যুর পর রোববার দুপুরে নগরীর মানিকপির গোরস্তানে কড়া নিরাপত্তার সাথে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডলসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মারা যাওয়া নারীরও একজন স্বজন সেখানে ছিলেন। দাফন শেষে সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, মৃত নারী নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত কি না তা নিশ্চিত হতে তার মুখের লালার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি এড়াতে ওই নারীর স্বজন ও তার কাছাকাছি আসা সকলকে কোয়ারেন্টিন করা হবে। তার গ্রামের বাড়ির স্বজনদেরও কোয়ারেন্টিন করা হবে।
টেলিভিশনে সিভিল সার্জনের এই ঘোষণা শোনেই বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান ওই নারীর স্বজনরা। স্বজনদের পালিয়ে যাওয়া সম্পর্কে বিকেলে সিভিল সার্জনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়টা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। মারা যাওয়া নারীর পরিবারকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হলেও শামীমাবাদ এলাকাকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম।
Leave a Reply