রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
নলছিটি সংবাদদাতা: চলছে বোরো মৌসুম। পেকে গেছে মাঠের বেশিরভাগ ধান। কয়েকদিন আগে ফণীর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে। সঙ্গে বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া। এতে অনেক এলাকায় জমির ধান পড়ে গেছে। এই পড়ে যাওয়া ধান দ্রুত কাটার জন্য হিড়িক পড়ে গেছে। ফলে একেকজন দিনমজুরের মজুরি উঠেছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা।
একমণ ধান বিক্রি করেও একজন দিনমজুরির মজুরি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। কারণ বাজারে বর্তমানে একমণ ধানের দাম প্রকারভেদে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
উপজেলার বৈচন্ডী গ্রামের কৃষক আনিচুর রহমান বলেন, বর্তমানে এক মণ ধান বিক্রি করে একজন দিনমজুরের মজুরি হচ্ছে না। কারণ এক মণ ধানের দাম (ভেজা) ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। আর একজন দিনমজুরির মজুরি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এই মজুরিতে দিনমজুর নিয়ে ধান কাটলে কৃষককে ধানচাষে মোটা অংকের লোকসান দিতে হবে।
তিনি বলেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এক সময় কৃষক আর ধান চাষ করবে না। আখরপাড়া গ্রামের অপর এক কৃষক মনোয়ার হোসেন পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, কৃষক কী করবে? ধান, পাট, সবজি কোনো ফসলেরই দাম পাচ্ছে না তারা। কৃষক আজ ধান চাষ করে বিপদে পড়েছে। সবজি, কপি, টমেটো করলে এমন দাম হয়, এক সময় সেগুলো গরুকে খাওয়াতে হয়। এ অবস্থায় কৃষক এখন কী করবে?
মগর ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, বোরো ধানকাটা শুরু হয়েছে। ফণীর আগে এখানে পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। শ্রমিকের (দিনমজুর) মজুরি ছিল ৪০০-৫০০টাকা। ফণীর প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ায় অধিকাংশ জমির ধান পানিতে পড়ে গেছে।
ফলে পানির মধ্যে পড়া ধান কাটতে এখন শ্রমিকের মজুরি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। অথচ এক মণ ধান বিক্রি করেএ অবস্থায় কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে পানিতে পড়ে যাওয়া ধান দ্রুত না কাটলে এবং এভাবে পানিতে পড়ে থাকলে এই ধান থেকেই গাছ বের হয়ে যাবে। ফলে কৃষক আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে কারণে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত মজুরিতে কামলা নিয়ে ধান কাটছে কৃষক।
কৃষিবিদ কামরুন্নাহার তামান্না বলেন, কৃষি উৎপাদনে ব্যয় কমাতে হবে। ফসলে লাভ করতে হলে কৃষককে যান্ত্রিকীকরণে আসতে হবে। তাছাড়া কৃষক লাভবান হতে পারবে না। যান্ত্রিকীকরণে আসতে একটু সময় লাগবে, তবে আমাদের কৃষকরাও একদিন যন্ত্র নির্ভর হবে এবং ফসলে লাভ করতে পারবে।
Leave a Reply