সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোটার:বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর হুশিয়ারী থাকা সত্বেও তার নাম ব্যবহার করে স্বার্থ উদ্ধারে মহল বিশেষ থেমে থাকেনি। এখন শুরু হয়েছে নতুন কায়দায় চাঁদাবাজি। এবার বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের শেখ ফিলিং পেট্রোল পাম্পে গিয়ে তার নাম ব্যবহার করে সামসুল ইসলাম টিপু নামে এক ছাত্রলীগ চাঁদা দাবি করলেন। এমনকি সেখান থেকে তিনি টাকার পরিবর্তে বেশ কয়েক লিটার পেট্রোল নিয়ে এসেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।এই ঘটনাটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্ব হলেও এতদিন আলোচনায় আসেনি। কারণ ছাত্রলীগ নেতা সামসুল ইসলাম সেখানকার কর্মচারীদের নানা ভয়ভীতি দেখানোর ফলে কেউ প্রকাশে সাহস পাচ্ছিলেন না। কিন্তু গতকাল বুধবার (০৮ আগস্ট) ঘটনাচক্রে পুরো চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে- চাঁদাবাজ সামসুল ইসলাম টিপু বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খানের অনুসারী। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও স্থিরচিত্রে রাজিবের পাশাপাশি তাকে দেখা গেছে।
ফলে তিনি যে রাজিবের অনুসারী বা কাছের লোক তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।পেট্রোল পাম্পে কর্মরত একাধিক কর্মচারীর অভিযোগ হচ্ছে- বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের আগে অর্থাৎ ২৭ জুলাই সামসুল ইসলাম টিপুসহ তিনজন ব্যক্তি এসে নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তারা নিজেদের জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খানের পরিচয় দিয়ে ২ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু মালিক ব্যতীত কাউকে অর্থ দেওয়ার ক্ষমতা কর্মচারীদের নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন তারা আওয়ামী লীগ নেতা সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলে মোটরসাইকেলে ১৪‘শ টাকার পেট্রোল নেন। ওই সময় পেট্রোলের টাকা চাইলে সামসুল ইসলাম টিপু হুমকি দিয়ে বলেন ব্যবসা করতে হলে মাস অন্তর টাকা নতুবা পেট্রোল দিতে হবে। কারণ এটা তাদের নেতা সেরনিবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ও ছাত্রলীগ নেতা রাজিব খানের নির্দেশ বলেও দাবি করেন তিনি।কিন্তু বিষ্ময়কর বিষয় হচ্ছে- এই সামসুল ইসলাম টিপু ছাত্রলীগের কেউ নন। এমনকি বরিশাল ছাত্রলীগের কোন কমিটিতেও তার পদপদবি নেই। যদিও ছাত্রলীগের কোন কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত না থাকার বিষয়টি টিপু নিজেই স্বীকার করে বলেছেন- তিনি রাজিব খানের রাজনীতি করেন। সেই সাথে তিনি পাম্প থেকে ১৪’শ টাকার পেট্রোল নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- টাকাটি ২/১ দিনের মধ্যে পৌঁছে দেবেন।তবে তিনি আ’লীগ সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নাম ভাঙানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
অথচ পেট্রোল পাম্পের মালিক শেখ কামাল হোসেন জানিয়েছেন- বিষয়টি তিনি শোনার পরে ব্যক্তি বিশেষকে দিয়ে টাকা চেয়েছেন। কিন্তু তখনও সামসুল ইসলাম টিপু নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এমনকি তিনি নিজেকে আ’লীগ নেতা সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহ লোক বলে পরিচয় দিয়েও মাস অন্তর টাকা দাবি করেন। কিন্তু বর্তমানে দেশে পরিবেশ পরিস্থিতি ভাল না দাবি করে তিনি বিষয়টির প্রতিবাদ করেননি বলে জানান শেখ কামাল। কথিত ছাত্রলীগ নেতার এই গোপন চাঁদাবাজির পুরো বিষয়টি শুনে ছাত্রলীগের এখানকার শীর্ষ নেতারাও হকচকিয়ে গেছেন।
এক্ষেত্রে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্য হচ্ছে- সামসুল ইসলাম টিপু নামে কোন ব্যক্তি তাদের কমিটিতে নেই। কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে স্বার্থ উদ্ধারে চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ তাছাড়া কেউ যদি নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি বা স্বার্থ উদ্ধারে সুযোগ নেয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।এমতাবস্থাতায় নবনির্বাচিত মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর পক্ষে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাতের ভাষ্য হচ্ছে- বিষয়টি সম্পর্কে মেয়র অবগত নন। তাকে বিষয়টি অবহিত করার পরে দিকনির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ রাখা হবে।’
Leave a Reply