শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে স্বামী ও ছেলেকে বেঁধে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর ডাকাতির ঘটনার মূলহোতাকে আটক করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলার কচুয়া উপজেলার বাগমারা খেওয়াঘাট থেকে র্যাব-৬ এর সদস্যরা তাঁকে আটক করে।
এদিকে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা বৃহস্পতিবার বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়। ওই নারী বাগেরহাট চিফ জুডিষিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বলে পুলিশ জানায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। র্যাবের হাতে আটক রিয়াজ শিকদার (৩৮) বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বর্শিবাহ গ্রামের আব্দুল মজিদ শিকদারের ছেলে।
র্যাব-৬ এর সদর কম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার আল-আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, গৃহবধূ ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব সদস্যরা ওই গৃহবধূ ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনার মূলহোতা রিয়াজ শিকদারের অবস্থান নিশ্চিত হয়। এর পর র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে কচুয়া উপজেলার বাগমারা খেওয়াঘাট থেকে তাঁকে আটক করে। র্যাব কার্যালয়ে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অপর আসামিদের ধরতে র্যাবের অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।
মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাগেরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় ওই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। আদালতের বিচারক তাঁর বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। এ ছাড়া ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
ওসি মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী আরো জানান, গৃহবধূ গণধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনায় আসামিদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। দ্রুত আসামিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ আদনান হোসেন জানান, হাসপাতালের তিন সদস্যের নারী চিকিসকদের মেডিক্যাল বোর্ড ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। ওই মেডিক্যাল বোর্ড তার বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। পরীক্ষার রিপোর্ট বিশ্লেষণ শেষে তারা রিপোর্ট দেবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে স্বামী ও ছেলেকে বেঁধে রেখে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানোর পর আসামিরা যাবার সময় ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, দুই বস্তা শুকনা সুপারি, শাড়ি-কাপড়, নগদ অর্থসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর দিনমজুর স্বামী বুধবার মোড়েলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে রিয়াজ শিকদারের নামোল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয়ের আরো ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
Leave a Reply