বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৩ অপরাহ্ন
॥ শাকিব বিপ্লব ॥
বরিশালের পরিবেশ-পরিস্থিতি কি সেই ভয়ংকর ৯৬’র শাসনামলের দিকেই ধাবিত হচ্ছে? এমন আশংকা শুধু আমার একারই নয়, নির্দলীয় অনেকের কন্ঠেই শুনতে পাচ্ছি। এ আশংকা বেশিমাত্রায় প্রবল হয়ে উঠেছে আমার নিজের গায়ে এসে স্পর্শ করা এরূপ হাওয়া অনুভব করায়। নগর আওয়ামী লীগ নেতা সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে নিয়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক মিশ্রিত বেশ কয়েকটি লেখা ফেসবুকে মন্তব্য প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করায় স্থানীয়ভাবে দলের মধ্যে বেশ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। আবার সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন মহল সাধুবাদ জানিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে লেখার যৌক্তিকতা নিয়ে। তাদের মন্তব্য- নবনির্বাচিত মেয়রের বেশ কিছু কর্মকান্ড লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে তার আগামীর চলার পথ আলোকিত করার চেষ্টার ছাপ স্পষ্ট। সেখানে প্রতিহিংসা পরায়ন লেখালেখির কোনরূপ আকার-ইঙ্গিত আছে বলে তারা মনে করছেন না।
দৃশ্যত বিষয়টি উদীয়মান রাজনৈতিক নেতা ও মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর জন্য সবকিছু মিলিয়ে ইতিবাচক হিসেবেই একবাক্যে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু দলের মধ্যে তার অনুসারী হিসেবে দাবিদার বেশ কিছু যুব বয়সী কর্মী যারা নিজেদেরকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা বলে পরিচয় দেন তারা বেশ ক্ষুব্ধ। তাদের ভাষায়- লেখার মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ নাকি খুঁজে পাচ্ছে। তাতে এতই ক্ষুব্ধ যে, সাংবাদিকদের টার্গেট করে নানা মন্তব্য এবং হুমকি-ধামকির সর্ব শেষাংশে এসে এখন খিস্তিখেউর শুরু করেছে। সাংবাদিকদের ‘শুকর ছানা’ বলে আখ্যায়িত করে গণপিটুনি দেওয়ার সতর্ক বার্তা জানিয়েছে ফেসবুকে মন্তব্যে।
এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে- তারা নেতিবাচক লেখা পড়তে বা মানতে নারাজ। চায় শুধু পক্ষের গুণকীর্তন। অবশ্যই গুণকীর্তন গাইবো, তবে তা সঠিক হতে হবে। আমরা কারো পক্ষে নই। পেটের তাগিদে পেশাগত কারণে আর লেখালেখির নেশার টানেই সত্য প্রকাশে এত আমাদের দূরন্তপনা। তবে একবাক্যে স্বীকার করছি- আমাদেরও ভুল-ত্রুটি রয়েছে। অনেক সময় প্রাপ্ত ভুল তথ্যের কারণে অনাকাক্সিক্ষতভাবে লেখার মাধ্যমে কাউকে না কাউকে আঘাত করে ফেলি। পরে তা অনুধাবনও করছি। কিন্তু ভুলের ব্যার্থতায় নিজেরাই যখন মানসিকভাবে দংশিত হই তখন আর আমাদের ব্যাঙ্গ করে লজ্জা দিয়ে লাভ কি? শুধুই কি ব্যাঙ্গ? এখন বলা হচ্ছে- সাংবাদিকরা ‘শুয়োরের বাচ্চা’ (!) পেটাতেও তাদের নাকি অনেক শখ।
কেন এই ক্ষোভ তার ব্যাখ্যা দেব পরে। তার আগে বলতে চাই, গত শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ঢাকা থেকে বিমানযোগে বরিশাল ফিরে নিজ বাসভবনে যাওয়ার জন্য যে গাড়িটি ব্যবহার করেন তা নিয়ে এক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক সূত্র ওই দিন রাতে নিশ্চিত করেছিল ব্যবহৃত সেই সাদা রংয়ের গাড়িটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের। মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই কর্পোরেশনের গাড়ি ব্যবহার অন্তত সাদিক আবদুল্লাহর মত বুদ্ধিসম্পন্ন নেতার জন্য বেমানান মনে হয়েছিল। তাছাড়া তিনি নির্বাচনী প্রচারকালে অঙ্গীকার করেছিলেন- কোনরূপ বিতর্কে তিনি জড়াবেন না। আশ্রয় নেবেন না স্বার্থসিদ্ধির। প্রশ্রয় দেবেন না অন্যায়। ফলে সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি ব্যবহারের খবরের সাথে তার কথার অমিল দেখায় লেখা হয়েছিল ‘সাদিক আবদুল্লাহ কথা রাখেননি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন। পরদিন রোববার ফেসবুকে প্রকাশিত ওই লেখা নিয়ে অন্তত বরিশালের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গণে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সাথে বিভ্রান্তও। গাড়িটি কোন দপ্তরের সেই প্রশ্নে পরস্পরবিরোধী কথা ওঠে।
সঙ্গত কারণে আমি নিজেই প্রশ্নের মুখে পরে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করি আসলে গাড়িটির সঠিক পরিচয় কি? একপর্যায়ে জানা যায়, সাদা রংয়ের অনেকটা পাজেরো মডেলের গাড়িটি বরিশাল এলজিইডি’র। সম্ভবত এই গাড়িটি সময় বিশেষ সাদিক আবদুল্লাহর মাতা শাহান আরা বেগম ব্যবহার করে থাকেন। তা তিনি করতেই পারেন। প্রবীণ দলীয় নেতা ও মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এই দপ্তরের গাড়ি তার পরিবার ব্যবহার করা অস্বাভাবিক নয়। সেই গাড়িতেই ঢাকা ফেরত সাদিক আবদুল্লাহ বিমান বন্দর থেকে কালিবাড়ির বাস ভবনে ফেরেন।
যতদূর ধারণা করতে পারছি- সেখানে খবর সংগ্রহে উপস্থিত থাকা সংবাদকর্মীদের কেউ কেউ ধরে নিয়েছিল গাড়িটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের। এর যৌক্তিক কারণও রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যবহৃত অফিসিয়াল গাড়িটি একই মডেলের এবং অভিন্ন রং। বিমান বন্দরে সিটি কর্পোরেশনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও উপস্থিত থাকায় সংবাদকর্মীদের ধারণা আরো বদ্ধমূল হয়েছিল। সেই সূত্র থেকেই লিখেছিলাম- মেয়র সাদিক শপথ না নিয়েই সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করলেন। সংবাদে তথ্যগত এই ভুল একবাক্যে স্বীকার করছি। পাশাপাশি বলতেও চাই- ভুল লিখেছি বটে, কিন্তু লেখার আঙ্গিক সঠিক ছিল। সাদিক আবদুল্লাহ এখন আর হাসানাত পরিবারের শুধু সদস্য নন, তিনি নগরপিতা। তার চলন-বলন এবং কথাবার্তায় অবশ্যই দায়িত্বশীলতা থাকা প্রয়োজন। সে অর্থে তিনি ওই গাড়িটিও ব্যবহার করতে পারেন না অন্তত শপথ না নেওয়া পর্যন্ত।
আমার অনুমান- মেধাবী এই যুব বয়সী রাজনীতিবিদ আবেগ তাড়িত হয়েই বিতর্কের বিষয়টি বিবেচনায় না এনে ওই গাড়িতে চেপে বসেন। আবার এমনও হতে পারে কোনো মহল বা ব্যক্তিবিশেষ তাকে গাড়িটি ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে। একদিকে মেয়রের ভুল অন্যদিকে তথ্য সংগ্রহে আমাদের ব্যার্থতা, সবকিছু মিলিয়ে এক বিভ্রান্তকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা সহসায় অনুমানযোগ্য। এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু তাই বলে অন্তত আমি ভীতু নই। লেখাটি প্রকাশের পর আমার ফেসবুক আইডিসহ অপর এক সংবাদকর্মীর ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করা সংশ্লিষ্ট সেই সংবাদটির নিউজ পোর্টালের লিঙ্কে বিভিন্ন ভাষায় দুই যুবক দুই প্রান্ত থেকে ভর্ৎসনা করে মন্তব্য করেন।
দুঃখজনক যে, সহকর্মী ওই সাংবাদিককে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে আখ্যায়িত করে। একই সাথে গণপিটুনি দেওয়ার সতর্ক বার্তা জানায়। আরিফুর রহমান হিরা নিজেকে বরিশাল সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা হিসেবে দাবি করে তার নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক ভাষায় হুমকি দেন। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে তা দৃষ্টি কাড়ে। সাংবাদিককে যদি ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলা হয়, তাহলে তা গোটা সংবাদকর্মীদের জন্য লজ্জাজনক।
একই দিন সকালে আমার নিজের সেই লেখার নিচে মন্তব্য প্রকাশ করতে গিয়ে আরেক যুবলীগ নেতা পরিচয়ধারী ‘মাসুদ সিকদার’ অনেকটা উপদেশস্বরূপ বললেন, “যদি লজ্জা পেয়ে থাকেন তাহলে নিজের নাক নিজেই কাটেন”। তার কথাটির মধ্যে একটু সভ্যতার ছাপ থাকলেও আরিফুর রহমান হিরা যে ভাষায় গালমন্দ দিলেন তাতে বলার অপেক্ষা রাখে না বরিশাল পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে?
এরা দু’জনেই নবনির্বাচিত মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর ঘোর সমর্থক হিসেবে ইতিপূর্বে দাবি করেছিলেন, এখনো করেন। বরং দম্ভ করে বলেন, তাদের রাজনৈতিক অভিভাবক হচ্ছেন নয়া এই মেয়র। প্রশ্ন জাগে- সাংগঠনিক দূরদর্শীসম্পন্ন ব্যক্তি সাদিক আবদুল্লাহ যেখানে সহনশীলতার সাথে নেতিবাচক লেখালেখি গ্রহণ করে নীরব রয়েছেন সেখানে তার অনুসারীদের এই আস্ফালনের হেতু কি?
নিশ্চিত হয়েছি- এই দুই যুবকের রাজনৈতিক ও পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড। উভয়েই ৯৬’র আমল পরবর্তী বরিশাল ত্যাগ করেছিলেন। আবার বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা বরিশাল প্রত্যাবর্তন করেন। অবশ্য প্রয়াত নেতা শওকত হোসেন হিরনের আমলে নয়। সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল রাজনীতিতে প্রভাব সৃষ্টির পরেই তাদের নতুন করে দেখা গেছে। খোঁজ খবর নিয়ে যতটুকু জানতে পারি এরা কেউই শিক্ষাদিক্ষায় অতটা উচ্চতায় নয়। তাদের কর্মকান্ড নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী জানালেন তাদের নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা। কিন্তু ফোনে আলাপচারিতায় বোঝার উপায় নেই দু’জনের বেপরোয়া মানসিকতার গোপন বিষয়টি। উভয়ের সাংগঠনিক কোনো পদ-পদবী নেই। অথচ তারা দাবি করেন একজন সদর উপজেলা অপরজন নগর যুবলীগ নেতা। বিভিন্ন নেতার সাথে সুযোগ বুঝে ছবি তুলে তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা দেখা গেছে।
সোমবার সকালে সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা পরিচয়ধারী আরিফুর রহমান হিরার ফেসবুকে মন্তব্য রাখার ঢং দেখে আমি স্বউদ্যোগে তার সেলফোন নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগ করে কিছু সময় আলাপে আরো কিছু তথ্য পেলাম যা বিস্ময়কর। এই যুবকের বাড়ি সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের মৌমিতা গ্রামে। তিনি নিজে একসময় ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছিলেন বলে দাবি করেন। তাও আবার বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার মত প্রভাবশালী কাগজে। যদি তিনি সাংবাদিক হয়েই থাকেন তাহলে কিভাবে অপর একজন সাংবাদিককে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে অভিহিত করলেন (!) সে প্রশ্নে কথার একপর্যায়ে তিনি নিজেই লজ্জা প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তার দাবি- তিনি বুঝতে পারেননি এটি কোনো সাংবাদিকের লেখা। সুতরাং বুঝতে বাকি নেই তিনি একসময় কোন মাপের সাংবাদিক ছিলেন। যার কিনা অনলাইন নিউজ পোর্টাল সম্পর্কে কোনো ধ্যান-ধারণা নেই।
আসি মাসুদ সিকদারের কথায়। বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা বর্তমানে বরিশাল নগরীর চাঁদমারী এলাকায় বসবাসকারী এই যুবকও সুমিষ্টভাষী। তিনিও তার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু এই দুঃখ প্রকাশ যে মনের থেকে নয় তা বুঝতে বাকি নেই। মোদ্দা কথা হচ্ছে- বরিশাল আওয়ামী লীগে এখন নবনির্বাচিত মেয়রের কাছের লোক হতে কে কত মরিয়া হয়ে উঠেছে, তা প্রমাণ মেলে নেতার পক্ষ হয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন মহলের সাথে আলাপ করে যে আভাস পেলাম তাতে মনে হচ্ছে তারা এতদিন চলনে সাদিক আবদুল্লাহকে ব্যবহার করেছে। এখন আখের গোছাতে ও নিজ নিরাপত্তায় মেয়র সাদিকের নাম বিক্রিতে ক্রিয়াশীল। এরকম মাসুদ ও হিরার মত আরো অনেকের প্রস্তুতি ও সক্রিয়তার খবর মিলেছে। তারা চাইছে আরেকটি ৯৬’র শাসনামল।
সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষ নিয়ে যেসব কর্মকান্ড বা মন্তব্য করছে তাতে এই নেতার স্বার্থ রক্ষার বদলে ইমেজ নিয়ে টান দেবে। যদি কিনা রাজনৈতিক এই দুর্বৃত্তরা শক্তি-সামর্থ্য পেয়ে যায়। তা নিয়ে ইতিমধ্যে সুশীল সমাজ নানা সন্দেহ প্রকাশ করছে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে। এভাবেই ৯৬’র শাসনামল বিতর্কিত হয়ে উঠেছিল তা এখনো স্মরণীয়। সেই চিত্র বরিশালবাসী অন্তত সাদিক আবদুল্লাহ ক্ষমতার এই আমলে দেখতে চায় না। প্রয়াত দলীয় নেতা ও সাবেক মেয়র হিরনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া সাদিক আবদুল্লাহর কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। এই নেতাও সেই স্বপ্ন দেখেন।
সুশীল সমাজের অভিমত- সাংবাদিকতার লেখনীর মধ্য দিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর আগামীর পথচলায় ভুল-ভ্রান্তি ধরিয়ে দেওয়ার মধ্যে একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেখানে সাংবাদিকদের ব্যক্তিস্বার্থ বা আক্রোসের কোনো অবকাশ নেই। আছে বরিশাল উন্নয়ন প্রসঙ্গ। কিন্তু একটি বিষয় পরিস্কার যে- ওরা যা করছে বা চায় তা নিতান্তই নিজস্ব স্বার্থে। নেতাকে সাহস করে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার বদলে বরং বিতর্কিত পথে হাটাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে আরো উসকে দিচ্ছে বলেই মনে হয়। যেমনটি শওকত হোসেন হিরনের আমলে কিছু অনুসারী এ ধারায় সক্রিয় ছিল। তার উদাহরণ সম্প্রতি গ্রেফতার বিএম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ সেরনিয়াবাত তাদেরই মধ্যেকার একজন।
তখন দেখা গিয়েছিল- উন্নয়ন স্বপ্নে বিভোর শওকত হোসেন হিরন বন্দনায় কাতর কিছু লোক কিভাবে স্বার্থ লুটেছে। বিপরীতে নেতা হয়েছিলেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিতর্কিত। বলার অপেক্ষা রাখে না তখনও মিডিয়া সোচ্চার ছিল। নেতা হিরন তা আমলে আনেননি। তবে সতর্ক ছিলেন ৯৬’র যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি রক্ষা করতে পারলেও রাজনৈতিক কিছু দুর্বৃত্তদের তিনি রুখতে পারেননি বিধায় তার খেসারত দিয়েছেন কিভাবে, তা নগরবাসী দেখেছেন।
এখন দেখার বিষয়- মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ তার বিচক্ষণতা কিভাবে প্রকাশে করেন অন্তত রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভাবনায়। এবং এই ‘কোকিলরূপী কাউয়াদের’ তিনি সামাল দিতে পদক্ষেপ নেবেন বৈ কি? এখনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলেই ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে সাংবাদিকদের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করার দুঃসাহস নিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বোঝাতে চাইছে- নেতা তাদের এই কর্মে সমর্থন যোগাচ্ছে। আর ভাবখানা এমনই যে, সাংবাদিকদের ‘শুয়োর ছানা’ আখ্যা দিয়ে লালন-পালন করতে চান ইশারা ও হুমকিতে। তা কি সম্ভব?
অসাবধানতা বশত লেখায় তথ্যগত ভুলের কারণে কেউ যদি আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহলে আমাদের ক্ষমা চাইতে লজ্জা নেই। বরং আরও সতর্ক হয়েই গঠনমূলক লিখতে চাই। সেখানে আমাদের অপেক্ষা সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদদের স্বার্থই বেশি। সেই সাথে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- পথ আলোকিত করার চেষ্টায় লিখতে গিয়ে আমরা ভীতু নই। বরং জান দেবো, তবুও সত্য বলেই যাবো।
Leave a Reply