শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ মে) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এই সংঘাতময় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার চেতনায় বাংলাদেশ আশাবাদী যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হবে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের এই অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছে এবং দেশটির কূটনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম মনে করেন, যুদ্ধ কোনো পক্ষের জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না। বরং দুই পক্ষই এতে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ গ্রহণযোগ্য। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি ‘ক্লিন ইমেজ’ রয়েছে, যা বাংলাদেশকে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিবেচনায় আনতে সহায়ক হতে পারে।”
তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশ থেকে কোনো মধ্যস্থতার উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না। তিনি বলেন, “আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চাই না। শুধু শান্তির আহ্বান জানানোই যথেষ্ট।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ শামস মুরসালিন বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা জোরদার হলেও ভারতের সঙ্গে আস্থার সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় কার্যকর মধ্যস্থতা কঠিন।”
তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ড. শামছুল আলম। তিনি মনে করেন, “ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক পরিচিতি কাজে লাগিয়ে প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। এটি গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, সেটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু এতে অন্তত বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ছোট রাষ্ট্রের ভূমিকা সবসময়ই গুরুত্ব রাখে, যদি তারা নিরপেক্ষ ও শান্তিকামী অবস্থান বজায় রাখতে পারে। মানবিক ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী স্থিতিশীলতার বার্তা দিতে সক্ষম হতে পারে।
Leave a Reply