বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতেও গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’ Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতেও গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’

বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতেও গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’




ববি প্রতিনিধি॥  কেবল বুয়েটের হল-ই নয় বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতেও গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ‘টর্চার সেলে’ মেধাবী ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্তত ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হলে ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান মিলেছে। এসব কক্ষে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক বেচাকেনাও। মাদক সেবন তো আছেই। কক্ষগুলো কথিত ছাত্রনেতাদের কব্জায় থাকায় তাদের ব্যাপারে প্রশাসনকেও অসহায় দেখা গেছে। এসব কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটলেও অজানা আতঙ্কে কেউ মুখ খুলছেন না।

জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের ১০০১ নং কক্ষটি ‘টর্চার সেল’ ছাড়াও মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটলেই এই কক্ষ থেকেই বের হতে থাকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা। ছাত্র নেতা নামধারী শিক্ষার্থীরা নানা অজুহাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওই কক্ষে ডেকে নিয়ে করা হয় মারধর। কয়েকজন ছাত্র বলছেন, এই কক্ষটিতে ইয়াবা, মদ ও গাঁজা সেবনের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নামে এসব অপকর্ম করা হলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পান না। পান থেকে চুন খসলেই সাধারণ ছাত্রদের ওই কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের পঞ্চম তলায়ও অনুরূপ আরেকটি কক্ষ রয়েছে, যা নিয়ে ছাত্রদের অভিযোগের শেষ নেই। নির্যাতনের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট ইব্রাহিম মোল্লা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ১০০১ নং কক্ষটি দীর্ঘদিন সিলগালা করা ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন ৭-৮ জন ছাত্র তালা ভেঙে কক্ষে ঢুকে বসবাস শুরু করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েও অদৃশ্য কারণে পারিনি। এই কক্ষের ছাত্রদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিল। সতর্কও করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসেনি। প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলর সভায় তখন রুটিন দায়িত্বে থাকা ভিসিকে বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করার কথা বলা হলেও তিনি এড়িয়ে যান। কেউ-ই কর্নপাত করছে না। ছাত্রদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি একাধিকবার। আমার হাত-পা বাঁধা। হায়ার অথরিটি না চাইলে কিছুই করার নেই। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট রাহাত হোসেন ফয়সাল অবশ্য জানান, এই হলে মাদক সেবনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হলে একটি অভিযোগ বাক্স রয়েছে। অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অশ্বিনী কুমার হলের এ ব্লকের ৩১০ নং কক্ষে দেদার চলে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি। সূত্র বলছে, এই কক্ষে প্রতি রাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয় হয়। কোনো ছাত্র প্রতিবাদ করলেই তাকে মারধর করা হয়। কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হল ও জীবনানন্দ দাশ হলেও একাধিক কক্ষকে টর্চার সেল বানানো হয়েছে। পাশাপাশি চলে মাদকের বেচাকেনা। কথা হয় হলের কয়েকজন আবাসিক ছাত্রের সঙ্গে। তারা বলেন, শিক্ষক বা কলেজ কর্তৃপক্ষ তো সব জানে। তারাও কিছু বলেন না।

আমরা তো দূরের কথা। এসব বিষয়ে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, আমাদের কলেজের বিভিন্ন হলে মাদক সেবনের বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। এই বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। হল সুপারদের ডাকা হয়েছে, তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে কোন কক্ষে কী সমস্যা হচ্ছে। বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করতে দেয়া হবে না।

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসেও এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। ২ নং ছাত্রাবাসের টিভি রুমে সাধারণ ছাত্রদের ওপর একাধিকবার টর্চারের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ১ নং হলের দ্বিতীয়তলায় ৪৭তম ব্যাচের বেশ কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে মাদকের রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। গাঁজা, ইয়াবা ও মদ প্রায় প্রতিদিনই এই হলের দ্বিতীয়তলার একাধিক কক্ষে ঢোকে। কলেজের এক শিক্ষক জানান, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এদের কিছু বলেও লাভ হয় না। এরা নেশাগ্রস্ত হওয়ায় কোনো কিছুই পরোয়া করে না। পাশাপাশি সরকারি বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রধান ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষে অস্ত্র থাকার অভিযোগ রয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নামে তারা নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।

বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, বরিশালের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস বা হলগুলোতে আমাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। হলে থেকে কক্ষ দখল করে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি আমরা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD