রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:১৮ অপরাহ্ন
মহানবীর জীবনাদর্শ অনুসরন করলেই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে- মাওলানা সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।
রিপোর্ট- রাজিব খান:
বরিশাল কেন্দ্রীয় মাইজভাণ্ডারী দ্বায়রা শরিফ(হযরত গাউছুল আজম বাবা ভাণ্ডারী মঞ্জিল) এ পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী(সঃ) উদযাপন উপলক্ষে, পবিত্র কোরান সুন্নাহর আলোকে মহা-মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গতকাল ২৪শে নভেম্বর শনিবার রাতে নানা কর্মসুচির মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় এ মাহফিল। প্রথমে কোরান তেলাওয়াত, হামদ ও নাতে রাসূল দিয়ে শুরু হয়ে। মাহফিলে প্রধান মেহমানে আলা ছিলেন, আধ্যাত্মিক প্রাণকেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী পাক মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের বর্তমান গদিনশীন পীর, আওলাদে রাসুল(সঃ)আওলাদে গাউছুল আজম হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ মুজিবুল বশর আল-হাচানী আল-মাইজভাণ্ডারী(মাঃজিঃআঃ)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, মহানবী হযরত মোহাম্মদ(সঃ)যে আলোর পথের সন্ধান দিয়েছেন তা শুধু মুসলমান সম্রদায়ের জন্য নয়, বরং সকল মানব জাতির জন্যই অনুসরণীয় অনুকরণীয় এবং শান্তি, সম্প্রতি, ও সহনশীলতা সামাজিক ন্যায় বিচার, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, এগুলো তিনি শুধু আদর্শ হিসেবে প্রচার করেননি, ব্যক্তি জীবনেও চর্চাও করে গেছেন। তার জীবনাদর্শ অনুসরন করেই আমরা সব ধরনের অবিচার অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারি। এবং মহানবী যে অাদর্শ রেখে গেছেন তা বাস্তবায়ন করলেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্বব।
তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও ধর্মমন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও সরকারি, আধা সরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তায়্যিবা’ লেখা পতাকা উত্তোলন এবং রাতে সরকারি ভবনসমূহ ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাদেমে দরবার হযরত মাওলানা শের-ই-বাংলা নিজামুল হক নিজামী মাইভাণ্ডারী সাহেব নবী পাক (সঃ) এর জীবনী সম্পর্কে আলোচনায় বলেন, এই ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে প্রায় এক হাজার ৪শত ৪৮ বছর আগে এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আবার এই দিনে তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার দূর করে তৌহিদের মহান বাণী নিয়ে এসেছিলেন এই মহামানব। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির ললিত বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ইসলাম ধর্মমতে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তের সিলসিলায় শেষ নবী। তাঁর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের কাছে এক পবিত্র দিন। মুসলমান সম্প্রদায় দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। সারা আরব বিশ্ব যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন মহান আল্লাহ পাক তাঁর পেয়ারে হাবিব বিশ্বনবী (সা.)-কে বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন। তিনি ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। এরপর বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন দরবার শরীফের খাদেম, হাফেজ ক্বারী মাওলানা কেরামত আলী মাইজভাণ্ডারী(পিরোজপুর) হযরত মাওলানা জাকির হোসাইন মাইজভাণ্ডারী(চাঁদপুর),হযরত মাওলানা দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী(লক্ষিপুর), হযরত মাওলানা কেরামত আলী মাইজভাণ্ডারী (মির্জাগঞ্জ), সহ আরো অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম গণ।
এদিকে বরিশাল সদর উপজেলার সকল আসেকানে মাইজভাণ্ডারী এসোসিয়েশন(ইহা একটি অরাজনৈতিক সংগঠন) কর্তৃক চরআইচা মরহুম সমশের আলী মৃধা(এস.ও) সাহেবের বাড়ী প্রতিষ্ঠিত হযরত গাউছুল আজম বাবা ভাণ্ডারী মঞ্জিল(কেন্দ্রীয় মাইজভাণ্ডারী দ্বায়রা শরীফ) আয়োজিত কোরআন সুন্নাহর এ মহা মাহফিলের পক্ষ থেকে মোঃ সামসুর রহমান জুয়েল মাইজভাণ্ডারী জানান, বরিশাল জেলা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নবী প্রেমিক আশেক ভক্তদের ঢল নামে। মূখরিত হয়ে ওঠে মাহফিল অনুষ্ঠিত মাঠ সহ এলাকার সকল রাস্তা ঘাট। পরে ফজরের নামাজ এর পরে মাহফিল এন্তেজামিয়া কমিটি কর্তৃক তবরক বিতরনের মধ্যদিয়ে শেষ হয় এ মাইজভাণ্ডারী মহা-মাহফিল।
Leave a Reply