বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
আমজাদ হোসেন,বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আমন ক্ষেতে লেদাপোকার আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শিগগিরই পোকা দমন না হলে চলতি আমন মৌসুমে ব্যাপক ফসলহানির আশংকা করেছেন কৃষকরা।
বাজার থেকে বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ক্ষেতে প্রয়োগ করার পরও কোর সুফল না পাওয়ায় অনেক কৃষক কাঁচা পাকা ধান কেঁটে ঘরে তুলছেন। ফলে লোকসানের মুখে পড়ছেন প্রান্তিক কৃষক।
সংশিষ্ট সূত্র জানা যায়, চলতি বছর বাউফলে মোট ৩৬ হাজর ২০০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় জাতের ১৯ হাজার হেক্টর এবং উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ১৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের ইউনুচ মৃধা, ধানদী গ্রামের আহেদ রাঢ়ী, আলতু রাঢ়ী, বড়ডালিমা গ্রামের জাহাঙ্গির মৃধা, তালতলী গ্রামের ছোবহান হাওলাদার, ভরিপাশা গ্রামের সেলিম গাজীসহ অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামসহ চরাঞ্চল এলাকায় শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমনের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে। এ পোকা অত্যান্ত ভয়ানক। দিনের বেলায় লেদা পোকা ধানের গোছার ভিতরে লুকিয়ে থাকে এ কারনে এদের দিনে দেখা যায় না। র্সূয্য ডোবার সাথে সাথেই পোকা গুলো ধানের শীষে উঠে নির্বিচারে ধান কাঁটা শুরু করে।
উপজেলার ঘুচরাকাঠি গ্রামের কৃষক বশার হাওলাদার জানান, লেদা পোকার আক্রমনে তার তিন কানির জমির প্রায় ( স্থানীয় মাপের) মোতামোটা, ইরি-৫২, আতপ জাতের ধান নস্ট করে ফেলেছে।
একই ধরণের পোকার আক্রমনে দুই কানি পরিমান জমির ধান শেষ হয়ে গেছে মঠবাড়িয়ার জাহাঙ্গির খা নামের এক চাষীর। অপরদিকে সুলতানাবাদ গ্রামের কৃষক হারুন অর রশিদ দেওয়ানকে দেখা যায় লেদা পোকার আক্রমন থেকে ক্ষেতের ধান রক্ষায় বিষ ছিটিয়ে চেষ্টা করছেন পোকা মারার।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লান্ট ফাইটোলোজির এসোসিয়েট প্রফেসর ড. শাহ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাবে কারনে এ ধরনের পোকার প্রকোপ দেখা দেয়। কৃষকরা যদি পোকার আক্রমনের সাথে সাথে প্রতিশোধক মুলক ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে এর থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পোকা দমন ও চাষাবাদে কৃষক-কৃষাণীর সচেতনতা সৃষ্টি খুবই জরুরী।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান হিমু বলেন, উপজেলার কালাইয়া, নাজিপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এ পোকার আক্রমনের সংবাদ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা উপ-সহকারীদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি এ পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করনীয় বিষয়ক লিফলেট কৃষকদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply