শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ গরুচোর সন্দেহে আটক হওয়া ৬ যুবককে পুলিশে সোর্পদ না করে ছেড়ে দিয়েছেন পটুয়াখালীর দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন।
শুধু তাই নয়, চোর চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ২টি গরু মালিককে ফেরত না দিয়ে বিক্রির টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গত ১২ মে দশমিনা উপজেলার চরহাদি এলাকায় গরু-মহিষ চোর সন্দেহে ৮ যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। যুবকর হলেন – চরহাদির এলাকার খোকন মাতব্বর (২৮) ও জাহিদ মাতব্বর (২৫), সাখাওয়াত মৃধা(২৪), সাইফুল মৃধা। সোহেল খলিফা(২৮), জুলহাস গাজী এবং শহিদুল খলিফা।
স্থানীয়রা আটক যুবকদের কাছ থেকে দুইটি গরু এবং ৫টি মহিষ উদ্ধার করে।
বিষয়টি দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ লিটনকে জানালে তিনি চোরদের পুলিশে না দিয়ে নিজেই বিচার করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।
লিটনের পরামর্শে স্থানীয়রা ওই যুবকদের দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখে।
পরদিন পূর্বে নির্ধারিত সময়ে বিচার বসান আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল মাহামুদ লিটন।
সে বিচারে করোনা পরিস্থিতি সামাজিক দূরত্ব না মেনে ওই আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতিতে অন্তত ১ হাজারের বেশি লোকের উপস্থিতি ঘটে।
সালিশের একপর্যায় চোরদের ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় লিটন। এতে অনেকের আপত্তি থাকলেও লিটনের দাপটে তারা নিরব থাকতে বাধ্য হন।
ওই সালিশে লিটন অভিযুক্তদের এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। যা চেয়ারম্যানের কাছে দিতে বলা হয়।
আটক হওয়া সাইফুলের পিতা রাজ্জাক মৃধা জানান, তার ছেলেকে থানা পুলিশ এবং মারধরের ভয় দেখিয়ে ৪৬ হাজার টাকা নিয়েছে চেয়াম্যানের লোকজন। এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান লিটনের স্নেহধন্য আলাউদ্দিন মিস্ত্রী , হিরন , ইব্রাহীম আকন সোহেল গং পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেয়ার চুক্তিতে গরুচোর যুবকদের পরিবারের কাছ থেকে ৩ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ প্রসঙ্গে চোর সন্দেহে আটক হওয়া খোকন জানায়, দশমিনা চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়ে আমার বাবা তাদের কাছ থেকে আমাকে ছাড়িয়ে আনে। তবে টাকার পরিমাণ আমি জানি না।
চোরাই হওয়া মহিষের মালিক রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দা আক্কাস চৌকিদার জানায়, চুরি হওয়া ৫টি মহিষের মধ্যে দুইটিকে চেয়ারম্যানের লোকজনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকায় ছাড়িয়ে এনেছি। বাকি তিনটি ফেরত দেয়নি চেয়ারম্যানের লোকজন।
এ প্রসঙ্গে আলাউদ্দিন মিস্ত্রী জানায়, দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা লিটন ভাইয়ের অনুমতি নিয়ে তাদের কাছে রাখা চোরাই গরু দুইটি স্থানীয় পাবেল নামে এক ব্যক্তির কাছে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে। ওই টাকা দিইয়ে এলাকার সড়ক নির্মাণ করা হবে। ওই গরু দুইটির মালিক পাওয়া যায়নি তাই বেচে দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন জানান, স্থানীয়রা একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেখানে আমি অংশ নেই।
গরু চোরের শালিস এবং চোরাই গরুর বিক্রির প্রসঙ্গে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলব, এখন ব্যস্ত আছি।সুত্র,যুগান্তর
Leave a Reply