সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন
রিয়াজ মাহামুদ আজিম॥ বরিশাল নগরীর পূর্ব কাশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকার সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে। দখলের সাথে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ৫০ শতাংশ জমির রয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ। তাছাড়া দাতাদের বিরুদ্ধেই জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা মোন্তাজ উদ্দিন চাপরাশী ও মৌলভী আব্দুল মজিদ ১৯৫২ সালে নগরীর ইছাকাঠি এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মানের জন্য জেলা বোর্ডের কাছে ৫০ শতাংশ জমি দান করেন। যার দাগ নম্বর-১০২৭ ও খেপট নম্বর-৪৭৭। বোর্ড ঐ জমিতে ১১ নং পূর্ব কাশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠাও করেন। কিন্তু দানকৃত ঐ জমির কিছু অংশ নিজের নামেই পুনরায় রেকর্ড করিয়ে তা এক সাব রেজিষ্টারের কাছে বিক্রি করেন দাতা আব্দুল মজিদ। আর বাকি অংশ দাতারাই দখল করে রাখেন। মাঠ জড়িপে স্কুলের নামে মাত্র ১৪ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়। খোজ নিয়ে জানা গেছে জমি রক্ষার দায়িত্ব থাকলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কিংবা শিক্ষা বিভাগের কোন কর্মকর্তা অদ্যবদি স্কূলের জমি ফেরত পেতে কোন ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।
একথা অকপটে স্বিকার করে বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা নাজনিন আক্তার জানান, আমরা সরকারী চাকুরী করি। নিজের খেয়ে কে ঝামেলা মাথায় নিতে চায়। তবে তিনি কোন ব্যবস্থা না নিলেও ২০০৮ সালে বিদায়ী প্রধান শিক্ষিকা জেবুন্নেসা আফরোজ সরকারি জমির তালিকা সম্পর্কৃত একটি রিপোর্ট প্রদান করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দাতারা ৫০ শতাংশ জমি রেজিস্টিকৃত দান করলেও পরবর্তীতে তারাই সেই জমির অনেকাংশ বিক্রি করে দেয়। যার বিরুদ্ধে দায়িত্বরত কেউ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এমনকি স্কুলের নামে জমি রেকর্ড কিংবা খাজনা দিতেও অনিহা ছিল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের। ফলে দানকৃত জমি পুনরায় নিজেদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিতে সক্ষম হন দাতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দখলে নেয়া জমি নিজেরা ভোগদখল করা ছাড়াও এক সাব রেজিষ্টারের কাছে বিক্রি করেছে দাতা পক্ষ। এছাড়া একটি কবরস্থানও সেখানে নির্মান করা হয়েছে। বেদখল হওয়া জমির বাজার মুল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আর এ কারনেই জমির লোভ ছাড়তে পারেননি দাতারা। এ ব্যাপারে জানতে সাব রেজিষ্টার মোঃ সেলিমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা জানান, বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় পর্যায় শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে তাতে কোন ফল হয়নি।
কেন এত বছরেও জমি উদ্ধারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন হয়নি এ বিষয় জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম ফারুক জানান, তিনি বিষয়টি জানতেননা। কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।
Leave a Reply