বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ শিগগির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকালে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
সাইবার অপরাধ দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঠিক ব্যবহার এবং একে জনবান্ধব করার জন্য আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা জানতে চান হাবিবুর রহমান।
জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রোধ বা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি। সাইবার অপরাধ দমনের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার যাতে না হয়, সে জন্য সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
আইনমন্ত্রী জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে দুই-তিনবার বৈঠকে বসেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে একটি ‘টেকনিক্যাল নোট’ দিয়েছে। সেটির পর্যালোচনাও প্রায় শেষ। শিগগির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে ৫ জুন সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মোট ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে।
দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের আপত্তি ও প্রতিবাদ উপক্ষো করে সরকার ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংসদে পাস করে। এই আইন প্রয়োগের শুরু থেকে একের পর এক অপপ্রয়োগের অভিযোগ উঠছে। বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে আইনটি নিয়ে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর থেকে সরকারকে এই আইন সংশোধন করার জন্য কিছু সুপারিশসহ চিঠি দিয়েছিল চলতি বছরের ৩১ মার্চ। একই সঙ্গে আইনটি স্থগিত করতে বলেছিল তারা। কিন্তু সরকার এখনও তা করেনি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করছে, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগই এখন অপপ্রয়োগ। সে কারণে তারা আইনটিই বাতিল চাইছে।
সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে গত রোববার সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, নিরস্ত্র, নিরীহ মানুষকে হত্যাকারী জঙ্গিদের বিচারাধীন মামলা দ্রুত বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। গত ৩১ মে ২০২৩ পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালগুলোয় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৬৪৫।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের বিধি অনুযায়ী, সাবরেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত। ফলে সাবরেজিস্ট্রি অফিস ও সাবরেজিস্ট্রার পদ নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতায় থাকাই যৌক্তিক। সাবরেজিস্ট্রার পদগুলো আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত বিষয় আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন থাকার ব্যাপারটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়।
কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, নকলনবিশদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সারাদেশে (৩১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত) অ্যাসিড নিক্ষেপসংক্রান্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৭৬। মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী অ্যাসিড নিক্ষেপ-সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলা সবচেয়ে বেশি ঢাকায়, ৪০টি। রাঙামাটি, বান্দরবান, লক্ষ্মীপুর, জয়পুরহাট, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী ও পঞ্চগড়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ-সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলা নেই।
Leave a Reply