মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠি জেলায় এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় নকলসহ হাতেনাতে ধরা পড়ায় ১২ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং এক কেন্দ্রসচিবসহ ১৩ জন শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) জেলার নলছিটি, কাঁঠালিয়া ও রাজাপুর উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে এই অনিয়মের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাকিলা রহমান।
নলছিটি উপজেলার ভরতকাঠী জি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৪ জন পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। ঘটনাস্থলেই তিনি পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেন এবং দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রসচিবসহ আট শিক্ষককে অব্যাহতি দেন।
নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ২ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। কাঁঠালিয়া উপজেলার কাঁঠালিয়া সদর ফাজিল মাদ্রাসায় ১ পরীক্ষার্থী ও ২ শিক্ষক এবং আমুয়া চাঁদমিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩ পরীক্ষার্থী ও ৩ শিক্ষক নকলের অভিযোগে বহিষ্কৃত হন।
রাজাপুর উপজেলায় রাজাপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা চলাকালে নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে বহিষ্কার করা হয়।
নকলসহ ধরা পড়া শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন—কামরুল হুদা, তাসরিন সুলতানা, হুমায়ুন কবির, হাবিবুর রহমান, ইসরাত সুলতানা, মহিউদ্দিন সরদার, শহিদুল ইসলাম ও ইসলামুল হক। কেন্দ্র সচিব ফিরোজ আলম জানান, ঘটনাটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, রাজাপুর উপজেলায় ভোকেশনাল পরীক্ষার সময় আরও ২ পরীক্ষার্থীকে নকলসহ হাতেনাতে ধরেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। তাদেরও বহিষ্কার করা হয়।
জেলায় বর্তমানে ৩১টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৪৬ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দিনে ১৬১ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন, যা প্রশাসনের নজরে এসেছে।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার মান রক্ষা ও সুষ্ঠু পরীক্ষা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাকিলা রহমান বলেন, “পরীক্ষা কেন্দ্রে সচ্ছতা ও নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। যেকোনো অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের প্রশংসা করছেন, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন, এতদিন ধরে এই অনিয়ম কীভাবে চলছিল।
Leave a Reply