মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥ অপুর্ব সৌন্দর্যের লীলা ভুমি ও সম্ভাবনায়ময় আরেকটি পর্যটন কেন্দ্রের নাম গঙ্গামতি। গঙ্গামতি সৈকতের দৈর্ঘ্য হবে ৫কি.মি। প্রস্থ হবে দুই কি.মি.এর মতো। তাছাড়া সৈকতের সঙ্গে দু’হাজার একরেরও বেশি খাসজমি রয়েছে। পটুয়াখালীর জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নে ১নং খাস খতিয়ানে গঙ্গামতি মৌজায় বিশাল বনভুমি নিয়ে অবস্থিত।
এখানে রয়েছে প্রায় এক হাজার ৩৩৮ একর জমি নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ২টি টিউবয়েল, ২টি বাথরুম ,দোকানপাট ও পিকনিক স্পট ও সৈকতের বালুকাবেলায় ছোট ছোট লাল কাকড়ার খেলা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষন। উপজেলা সদর থেকে এর দুরত্ব ২৫ কি.মি। গঙ্গামতি পর্যটন এলাকায় রাস্তা সংস্কার ও পার্কের প্রবেশদ্বারে যাওয়ার কাঁচা রাস্তা পাঁকা না করায় দুর্ভোগে পড়েছেন পর্যটক। রাস্তার মাঝ খানে কাঠের তক্তা দিয়ে পানি বর্ষাকালে পানি আসা যাওয়ার জন্য কালভার্ট রয়েছে।
কাঠের তক্তা নষ্ট হয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে সেখানে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখানে পর্যটকদের জন্য কমদামে কাঁকড়া ফ্লেরাই ব্যবস্থা । কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১০কি.মি. পুর্ব দিকে সাগর মোহনায়। প্রকৃত অর্থে এ সৈকতে দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় ও সুর্যাস্তের মোহনীয় ও মনোমুগ্ধ দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় নিরিবিলি থাকতে অভ্যস্ত অনেক পর্যটক দিনের আলোয় সবটুকু সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখন ভিড় করছে এ সৈকতে। যেখানে দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় সুর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্য সৈকতের দাঁড়ালে চোখে পড়বে দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রর রাশি রাশি নীল জল আর সমুদ্রের নীল জলের তরঙ্গায়িত ঢেউ কাঁচ ভাঙ্গা ঝন ঝন শব্দের মত আছরে পড়ছে কিনারায় ও উড়ে যাচ্ছে সাদা গাংচিলের দল এদিক ওদিক Ñমাছ শিকারের জন্য লড়াকু জেলেরা ট্রলারে ও নৌকায় ছুটে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রে তা উপভোগ করা যায়।
জোয়ারের সময় কুয়াকাটা সৈকত পানিতে তলিয়ে থাকায় গঙ্গামতি সৈকতে পর্যটকদের পদচারনা ক্রমশ বাড়ছে। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগ ছাড়াও বিস্তীর্ন সৈকতের বালুকা বেলায় লাল কাকড়ার খেলা ও প্রকৃতির অপরুপ সমারোহ পর্যটকদের আকর্ষন করছে।
বিস্তীর্ন সৈকতের বালুকাবেলায় সারি সারি সাজানো জেলেদের নৌকার বহর। সকাল থেকে এ নৌকা সাজানো থাকলেও শেষ বিকালে তা সাগরে ভাসে মাছ শিকারের জন্য। এখান থেকেই অবলোকন করা যায় সাগরে সংগ্রামী জেলেদের জীবনযাত্রা।
গঙ্গামতি সৈকতের বালুকাবেলায় ছোট ছোট লাল কাকড়ার খেলা পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা। বালুতটে এ লাল কাকড়ার লুকোচুরি দূর থেকে দেখলে মনে হবে পর্যটকদের অভ্যর্থনার জন্য যেন সৈকত জুড়ে লাল কার্পেট বিছিয়ে রাখা হয়েছে। তাইতে দেশÑবিদেশের পর্যটকরা বার বার ছুটে আসছে গঙ্গামতি সৈকতে। প্রকৃতি ও সমুদ্রের অপরুপ মিতালী যেন ঘিরে রেখেছে গোটা সৈকতের বালুকাবেলা। যেখানে কৃত্রিমতার কোন ছাপ নেই। শীত মৌসুমে পর্যটকের ভিড়ে এলাকায় মুখরিত হয়ে ওঠে।
নয়নাভিরাম দৃশ্য সহজেই পর্যটকদের মন আকৃষ্ট করে। প্রতিদিন হাজারো পাখির কলকাকরিতে মুখরিত হয়ে উঠে এ বনাঞ্চল। এখানে বেড়াতে এস অনায়াসে চোখ পড়বে গেওয়া, কেওড়া, ছইলা, কড়ই, বাইন, আকাশমনি, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলে প্রবেশ করলে চোখে পড়বে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও প্রানী যা বিধাতার অপুর্ব সৃষ্টি। এত কিছু থাকার পরে ও সিবীচে প্রবেশদ্বারে যাওয়ার রাস্তা এখন বালীর সাথে মিশে গেছে। গাড়ী নিয়ে বীচে যাওয়ার সময় বালীতে গাড়ীকে আটকে ধরে ।
এজন্য অনেক গাড়ীর চালক গাড়ী নিয়ে রাস্তার পাশে জমি দিয়ে আশা যাওয়া করে। অনেক সময় গাড়ী চালক পর্যটকদের গাড়ী থেকে নামিয়ে দেয়। পর্যটকদের কাঁচা রাস্তা বালীর মধ্যে পায়ে হেটে বীচে যেতে হয়।
গঙ্গামতি বীচে দোকান মো.ইউসুফ আলী খাঁন জানান, ছবি তোলে লাভ নেই। এভাবে কত ছবি তুলছে কিন্তু আজও পর্যন্ত রাস্তাটি পাঁকা হয়নি। রাস্তা পাঁকা না হওয়ায় ব্যবসায়ীক-জেলে-পর্যটকসহ দুর্ভোগের শেষ নেই। আপনাদের লেখার কারনে যাতে উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের নজর পরে এজন্য আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছে এখানকার ব্যবসায়ীরা।
গঙ্গামতি সৈকতে বসে কথা হয় পর্যটক নওসিন জাহানের সঙ্গে। তিনি খুলনা থেকে এসেছেন। কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে আমি শুনলাম নতুন এ স্থানটির কথা। তাই এখানে চলে আসলাম। প্রকৃতি ,পাখির কলÑকাকলি, সুপ্রশস্ত সৈকত, সেই সঙ্গে নির্জনে সমুদ্র উপভোগ করার জন্য চমৎকার একটি স্থান। কিন্তুু সিবীচে প্রবেশদ্বারে যাওয়ার রাস্তা এখন বালীর সাথে মিশে গেছে। গাড়ী নিয়ে বীচে যাওয়ার সময় বালীতে গাড়ীকে আটকে ধরে। আমাদেরকে হেঁটে হেঁটে সিবীচে প্রবেশ করতে হয়। সিবীচে প্রবেশ রাস্তাটি যদি পাঁকা হতো তাহলে পর্যকরা সরাসরি গাড়ী নিয়ে সিবীচে যেতো পারত।
ধুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল আকন জানান, রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বালী দিয়ে উচুরাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু বালী দিয়ে রাস্তা তৈরি করার পর ইট দিয়ে গাইডল দিতে হবে। এতো টাকা ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্ধ নেই। তাই ব্যবসায়ীক-জেলে-পর্যটকসহ গঙ্গামতি সৈকতের রাস্তাটি একান্ত প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলৗ মো.আবদুল মান্নান জানান, গঙ্গমতির পার্কের প্রবেশদ্বারে যাওয়ার কাঁচা রাস্তা পাঁকা করার জন্য স্কিম পাস হয়েছে।
Leave a Reply