বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় করোনা প্রতিরোধ ও করোনা থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করলেও ব্যতিক্রম কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে। হাসপাতালে প্রবেশ গেটে রোগীর সাথে অতিরিক্ত স্বজন ও বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও উল্টো চিত্র হাসপাতালের ভিতরে। একজন রোগীর সাথে পাঁচ থেকে সাতজন স্বজন প্রবেশ করছে এক রুমে। রুমে প্রবেশ করতে তারা কোন ধরণের বাঁধা কিংবা হাত ধোয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। কলাপাড়ায় করোনায় আক্রান্ত কোন রোগী না থাকলেও রোগীদের চিকিৎসায় নেই ডাক্তার ও নার্সদের পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুপমেন্ট)। এতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা যেমন করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, একই রকম ঝুঁকিতে চিকিৎসক ও নার্সরা। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান তাদের হাসপাতালে প্রপার পিপিই আছে এবং করোনা সচেতনতায় তারা সবাই একসাথে কাজ করছেন। চালু করা হয়েছে তিন বেডের করোনা ইউনিট। তবে রোগীর সাথে অতিরিক্ত মানুষ ভীড় করলে কিছুটা ঝুঁকি থেকেই যায় বলে স্বীকার করেন তিঁনি। পটুয়াখালীর কলাপাড়া সংবাদদাতা মিলন কর্মকার রাজুর তথ্য ও ছবিতে প্রতিবেদন।
প্যাকেজঃ
১২ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কলাপাড়া উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। সারা দেশে করোনা আতংকের ঢেউ লেগেছে কলাপাড়ায়ও। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কুয়াকাটাকে লকড ডাউন ঘোষণার পর থেকে এ আতংক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সেই সাথে প্রতিদিন পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি এলাকা, পাড়া-মহল্লায় করোনা সচেতনতামুলক মাইকিং করায় এ আতংক এখন প্রতিটি মানুষের মধ্যে। সরকারি প্রচারনায় মানুষ রাস্তায় চলাচলে এবং বাসাবাড়িতে অনেকটা সচেতন হলেও বিপরীত চিত্র কলাপাড়া হাসপাতালে। এখানে এক রুমে তিন বেড বসানো হয়েছে। সেখানে সকাল থেকে প্রতি রোগীর স্বজনের ভীড় লেগেই আছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারা পর্যন্ত রোগীর বেডের উপর বসে গল্প আড্ডায় ব্যস্ত। শিশুরা ছুটোছুটি করছে হাসপাতালের ফ্লোরে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই একই অবস্থা। নোংরা পরিবেশে খোলামেলা হাত দিয়ে রোগীদের পরিবেশন করা হচ্ছে খাবার। সেই খাবার রোগী ও রোগীর স্বজনরা খাচ্ছেন হাসপাতালের ওয়েটিং কক্ষের বাইরে বসেই খোলামেলা অবস্থায়। অনেক রোগীর স্বজন এখনও জানেন না করোনা প্রতিরোধে কি ধরণের প্রস্তুতি নিতে হয়।
হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের ভীড়ের মধ্যেই কোন ধরনের পিপিই ছাড়াই যেকোন রোগীর চিকিৎসায় ব্যস্ত নার্স ও চিকিৎসকরা। হাসপাতাল থেকে প্রয়োহনীয় পিপিই সরবরাহ না করা এবং করোনা প্রতিরোধে নার্সদের প্রশিক্ষণ না দেয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়েই নার্সরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বলে জানান।
ভক্সপপ-৩- দুই জন সিনিয়র নার্স।
কলাপাড়া উপজেলায় বর্তমানে তিন হাজারেরও বেশি বিদেশী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে। কিন্তু জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের সঠিক প্রশিক্ষণ না দেয়ায় দূর্যোগ মুহুর্তে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশংকা করছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার বলেন, করোনা প্রতিরোধে তারা অনেক সচেতন। কলাপাড়ায় বিদেশ ফেরত ১২৬ জনের মধ্যে ৮৭ জনকে হোমকোয়ারেন্টাইনে নিয়েছেন। তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখছে স্বাস্থ্য কর্মীরা। প্রতিদিনই সভা করে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছ থেকে আপডেট নিচ্ছেন। এই মুহুর্তে কলাপাড়ায় করোনা রোগী না থাকায় ডাক্তার ও নার্সরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা প্রদান করছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ আছে। আর হাসপাতালে রোগীর বাইরে অতিরিক্ত দর্শনার্থী বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
Leave a Reply