বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসের মহামারিতে সারাদেশে বন্ধ যান চলাচল। এমন পরিস্থিতিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক গৃহবধু প্রসব ব্যথায় চটপট করছিলেন। অতিরিক্ত রক্তকরণে দিশেহারা গৃহবধুর পরিবার গভীর রাতে গাড়ী না পেয়ে মুঠোফোনে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কামান্ডার শামীম আনোয়ারের কাছে সহায়তা চান।
ফোন পেয়ে নিজের গাড়ী নিয়ে তাৎক্ষণিক ছোটে যান সেখানে এ র্যাব কমান্ডার। রক্তাত্ব (এইপিএইচ) অবস্থায় সন্তান-সম্ভাবা মাকে নিজের কোলে তুলে নিয়ে যান হাসপাতালে। নিচতলা থেকে কোলে করে তিন তলার প্রসূতি ওয়ার্ড অবধি পৌঁছে দেন তিনি। পরে সেখানে একপুত্র সন্তানের জননী হন সে গৃহবধু।বর্তমানে মা ও ছেলে উভয়েই সুস্থ আছেন বলে নিশ্চিত করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এমন ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। গৃহবধুর পরিবার নাম রাখা অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছে র্যাব কমান্ডারকে।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, গত রোববার (২৬ এপ্রিল) মধ্য রাতে গর্ভবতী মায়ের প্রসবকালীন জটিলতার ফোন পান কমান্ডার এএসপি মো. শামীম আনোয়ার। রাত প্রায় ১টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার দক্ষিণ উত্তরসূর এলাকায় ছুটে যান তিনি। গাড়ী করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ বলেন, সঠিক সময়ে সে গৃহবধুকে হাসপাতালে নিয়ে না আসলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা ছিল। বেশ রক্তত্ব অবস্থায় র্যাব কমান্ডার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে নরমাল ডেলিভারী মধ্যে দিয়ে গৃহবধৃর একপুত্র সন্তানের জন্ম হয়। র্যাব কমান্ডারের এমন মহানুভবতাকে সাধুবাদ জানান এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
গৃহবধুর স্বামী রঞ্জিত দাস র্যাব কমান্ডারের প্রতি কৃতজ্ঞা জানিয়েছে মা-সন্তান ভালো আছেন বলে জানান। নিকট আত্মীয় নির্মল বলেন, র্যাব কমান্ডার এমন কাজ করবেন আমার বিশ্বাসই হয়নি। র্যাব সর্ম্পকে আমার ধারনা পাল্টে দিয়েছে এ ঘটনায়।
নির্মল আরও বলেন, আমি ফোন দিতে ভয় পাচ্ছিলাম। পরে রাজু ভাই (শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে) আমাকে নাম্বার দিয়ে অভয় দিলে ফোন করি শামীম স্যারকে। আমার ফোন পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি রওয়ানা দেন। আমরা শামীম স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ।
এ প্রসঙ্গে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কামান্ডার এএসপি শামীম আনোয়ার বলেন, আমি তখন রাত্রিকালীন টহল ডিউটিতে। ফোন পেয়ে সেখানে পৌঁছে দেখি প্রসূতি মা-টি খুব সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে আছেন। রক্তকরণ হচ্ছে, প্রসব বেদনাও প্রচন্ড, কিন্তু বাচ্চা প্রসব হচ্ছে না। গাড়িতে তুলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। নিচতলা থেকে কোলে করে তিন তলার প্রসূতি ওয়ার্ড পর্যন্ত নিতে নিতে পুরো ইউনিফর্ম প্রসব বেদনার রক্তে ভিজে গিয়েছিলো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদিও, তবুও আমি খুশি। যাঁদের ট্যাক্সের টাকায় দু’টা ডালভাত খাই, তাদের প্রয়োজনের মুহূর্তে রেসপন্স তো করতে পেরেছি।
উল্লেখ্য, এএসপি আনোয়ার ৩৪ তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে তিনি র্যাব-৯-এ কর্মরত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার বড়বিল এলাকায়।
Leave a Reply