বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ভয়াবহ ও নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী। অভিযুক্ত এসআই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানায় কর্মরত তৌহিদুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার মৃত সাহেব আলীর ছেলে।
শাহনাজ পারভিন ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ১৬ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার তিনটি ছবি পোষ্ট করে তাতে ক্যাপশন লেখেন, আর কত! আমিও মানুষ, আজ ১৪ দিন থেকে নীরবে সয়ে যাচ্ছিলাম। এর আগেও চুপ ছিলাম, এবার চুপ থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আর না। কারণ, কুকুর কোনো দিন ভাল হয় না। পুলিশের চাকুরী করে। বেআইনি কাজ করে। আর সইতে পারবো না।
ওর বোনের বা ভাই বা ওকে কেউ এমন করলে কি করতো? শাহনাজ পারভিনের দাবি, প্রায় ৬ বছর আগে ১০ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে তৌহিদুল বিয়ে করেন একই উপজেলার আপন খালাতো বোন শাহনাজ পারভিনকে। বিয়ের কিছু দিন পর হতে সংসারে তৈরি হয় কলহ। এ নিয়ে মারধর করা হয় স্ত্রীকে।
এর বিচার চেয়ে যোগাযোগ করেন শিবগঞ্জে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে। শাহনাজ পারভিন শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে অভিযোগ করে বলেন, আমাকে দেখতে এসেই বিয়ে করেন খালাতো ভাই তৌহিদুল ইসলাম। এর কিছুদিন পর যৌতুক হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে আমাদের কাছে। আমার সুখের সংসার টেকাতে সে সময় তাকে নগদ ১০ লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপর বগুড়ায় চাকুরীর সুবাদে সেখানে গিয়ে আদম দিঘির চাপাপুর গ্রামের রিমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন তৌহিদুল ইসলাম। সে বিয়ে আমাকে মেনে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। আমি তার দ্বিতীয় বিয়ে না মানায় প্রায়ই আমার উপর নির্যাতন চালানো হয়। তারপরেও সাড়ে তিন বছরের একটি বাচ্চা থাকায় নীরবে তার নির্যাতন সহ্য করে গেছি।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দ্বিতীয় বউ রিমাকে ঘরে তোলার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে আমি প্রতিবাদ করায় গত ১৪ দিন আগে আমাকে মেরে বাম পা ভেঙে দেয়। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। পরে আমি কোনো রকমে শিবগঞ্জ থানার গেটের বাসা হতে বের হয়ে একা শিবগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করায়। দিন দিন আমার স্বাস্থ্যের অবস্থা অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বাবার বাড়ী বাগমারায় চলে আসি। এদিকে বিষয়টি শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম, তদন্ত আতিকুল ইসলাম ও এসআই আনামকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো তারা আমার স্বামী তৌহিদুলের পক্ষ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার এসআই ও শাহনাজ পারভিনের স্বামী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি স্ত্রী শাহনাজ পারভিনকে নির্যাতন করিনি। সিড়ি থেকে পড়ে তার পা ভেঙে গেছে। দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করে শাহনাজ পারভিনের স্বামী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শাহনাজের মাথায় সমস্যা আছে।
শরীরে আঘাতের চিহ্ন’র কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওগুলো ইনজেকশনের দাগ। এলার্জি থাকায় শরীরের বিভিন্নস্থানে দাগ পড়ে গেছে। এছাড়াও তিনি সংবাদিকদের মাধ্যমে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম শাহ জানান, এটি তাদের পারিবারিক বিষয়। তাছাড়া এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি বলেও জানান ওসি।
Leave a Reply