সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:বদলে যাচ্ছে বিদ্যমান লঞ্চ টার্মিনালের অবকাঠামো। আপাতত দেশের ১১ জেলার ৫০টি টার্মিনালের (পন্টুন) বিদ্যমান অবকাঠামো বদলে ফেলা হবে। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে সারাদেশের টার্মিনালগুলোয় এ পরিবর্তন আনা হবে। নৌপথে সংযোজন হবে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত টার্মিনাল। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যমান ছোট ও অবকাঠামোগতভাবে দুর্বল টার্মিনাল (পন্টুন) সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নতুনভাবে স্থাপিত হবে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত পন্টুন বা টার্মিনাল। যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে অভ্যন্তরীণ নৌ-পথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এগুলোর অবকাঠামো সংস্কারের এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সূত্র আরও জানায়, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং যাত্রীদের চাহিদার কথা চিন্তা করে বর্তমানে অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল নৌযান তৈরি ও পরিচালনা করা হচ্ছে যা আগে পরিচালিত নৌযানের তুলনায় আকার, আয়তন, ইঞ্জিন ক্ষমতা সব দিক থেকেই বড় আকারের। ফলে বিদ্যমান পন্টুনগুলো চলমান এসব নৌযানের তুলনায় ছোট এবং কাঠামোগতভাবে দুর্বল। তাই এসব টার্মিনাল বা পন্টুনে বড় আকারের লঞ্চ ঘাটে ভেড়ার সময় বা লঞ্চ ছাড়ার সময় বিভিন্ন প্রকার সমস্যা সৃষ্টি করছে।
সূত্র আরও জানায়,নৌযানগুলোর টার্মিনালে অবস্থানসহ ক্রমবর্ধমান যাত্রী সংখ্যার কারণে পন্টুনগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এ কারণে নৌযান ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী, সুবিধাভোগী যাত্রী ও লঞ্চ মালিকদের চাহিদা ও অনুরোধের পাশাপাশি যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সম্ভাব্যতার বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান নদীবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ অবতরণ স্টেশনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচিত করে আরও সুবিধাসহ আপাতত ৫০টি পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়,এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ‘আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ বিশেষ ধরনের পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ১৬২ কোটি ৭১ লাখ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রকল্পটিতে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বরাদ্দের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র। প্রকল্পটি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাস্তবায়ন করবে।সবকিছু ঠিক থাকলে প্রকল্পটি ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদকালে বাস্তবায়িত হবে। সূত্র জানিয়েছে- এ প্রকল্পের আওতায় আপাতত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, খুলনা ও চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৫০টি টার্মিনালে এ পরিবর্তন আনা হবে।সূত্র জানিয়েছে, সদরঘাট, পটয়াখালী, বরিশাল, চাঁদপুর, খুলনা এবং ভোলা নদী বন্দরসহ দেশের মোট ১৫টি নদী বন্দরে স্থাপনের জন্য মোট ৫০টি বিশেষ ধরনের টার্মিনাল পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপন করা হলে প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে যাতায়াতকারী প্রায় ৪ (চার) কোটি যাত্রীর নিরাপদ ও সহজ উঠা-নামা নিশ্চিত এবং লঞ্চের নিরাপদভাবে টার্মিনালে লঞ্চ ভোড়ানো বা ছাড়া নিশ্চিত হবে।প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় আপাতত ১০০ ফুট দৈর্ঘ, ৩২ ফুট প্রস্থ এবং ২৭ দশমিক ৫ ফুট গভীরতা সম্বলিত ৪৫টি পন্টুন সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়াও ৫টি পল্টুন সংগ্রহ করা হবে যার দৈর্ঘ হবে ১২০ ফুট, প্রস্থ হবে ৩৫ ফুট। প্রকল্পের আওতায় ১১০টি স্টিল স্পাড নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে ৩৬৬ বর্গমিটার স্টিল জেটি নির্মাণ করা হবে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, যুগ বদলেছে। বদলেছে মানুষের চাহিদা ও রুচি। সতর্ক হচ্ছে নিরাপত্তার বিষয়ে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে বাহন। আগের তুলনায় নৌযানের আবকাঠামো ও আকার বেড়েছে। লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তাই বহুদিন আগের পরিকল্পনায় নির্মিত পল্টুনগুলোয় এখন আর স্বাচ্ছন্দ্যে নৌযানগুলো ভিড়তে পারে না। যাত্রীরাও আর স্বাচ্ছন্দ্যে ওঠানামা করতে পারে না। তাই পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, নতুন পল্টুনগুলো হবে নৌযান ও যাত্রীদের জন্য নিরাপদ। এগুলোয় থাকবে আধুনিক সব সুবিধা।
Leave a Reply